শিরোনাম
শাবিপ্রবি (সিলেট), ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ (বাসস) : জুলাই বিপ্লবে নিহত হওয়ার পর পরিচয়বিহীন ছয় মাস মর্গে পড়েছিল শহিদ হাসানের (২০) লাশ। শেষ পর্যন্ত পরিচয় মিলেছে। আজ তার গায়েবানা জানাজার নামাজ আদায় করেছে শাবিপ্রবি’র শিক্ষার্থীরা।
গত ৫ আগস্ট বিকেলে বাসা থেকে বের হন হাসান। এরপর আর বাসায় ফেরেননি। এক যুবকের পায়ে তার প্যাঁচানো অবস্থায় যাত্রাবাড়ী রাস্তায় পড়ে থাকা একটি ছবি ভাইরাল হয়। সেই ছবিটিই হাসানের মরদেহ ছিল। তবে তাকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিলো না। ছয় মাস ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে শহিদ হাসানের লাশ পড়ে থাকার পর ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে লাশ শনাক্ত করা হয়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে হাসানের মরদেহের কাগজপত্র পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়।
শহিদ হাসানের পরিচয় মেলার পর আজ শুক্রবার সিলেটে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা জুমার নামাজের পর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি চত্বরে তার গায়েবানা জানাজার নামাজ আদায় করে। জানাযায় তিন শতাধিক মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
জানাজা শেষে অংশগ্রহণকারীরা দ্রুত সময়ের মধ্যে জুলাই বিপ্লবে গণহত্যার বিচার ও আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে গোলচত্বরে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে শেষ হয়।
জানাজা শেষে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক আসাদুল্লাহ আল গালিব বলেন, জুলাই বিপ্লবের এতদিন পর মাত্র একটা লাশ তার পরিবারের কাছে আজ হস্তান্তর করা হচ্ছে। তিনি হচ্ছেন শহিদ হাসান।
গালিব বলেন, রাষ্ট্রের চরম ব্যর্থতা হচ্ছে, যে ছয় মাস চলে যাওয়ার পরেও আমাদের ভাইদের শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। তাদের পরিবারের কাছে পাঠানো সম্ভব হয়নি। আমরা কিছুদিন আগেই দেখেছি গাজীপুরে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলায় আমাদের ভাইদের রক্তাক্ত করা হয়, শহিদ করা হয়। আন্দোলনের ছয় মাস পরেও যদি আওয়ামী সন্ত্রাসীদের এমন তাণ্ডব চলে তবে এটাও এই রাষ্ট্রের ব্যর্থতা।
তিনি বলেন, আমরা স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, এই আওয়ামী সন্ত্রাসীদের কোনভাবেই এই রাষ্ট্রে আর পুনর্বাসন করার সুযোগ নেই। এই আওয়ামী ফ্যাসিস্টকে দ্রুত সময়ের মধ্যে আইনি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে নিষিদ্ধ করতে হবে। যারা এই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিল দ্রুত সময়ের মধ্যে এদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।
সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শাবিপ্রবি’র সহ-সমন্বয়ক পলাশ বখতিয়ার বলেন, আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন আমরা কোন ভাবেই চাইনা। কারণ আবার যদি তারা পুনর্বাসিত হয় তাহলে আবার তারা গণহত্যা চালাবে। আমাদের উপর তারা আবার আক্রমণ করবে। তারা মুখিয়ে আছে একটা সুযোগের জন্য, যেভাবে হোক এ বাংলায় ফিরে এসে আমরা যারা আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিলাম, আমাদের নিশ্চিহ্ন করে দিতে তারা বদ্ধ পরিকর। অন্তর্বর্তি সরকারকে আমরা জানিয়ে দিতে চাই, অতিদ্রুত আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে। আওয়ামী একটি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসাবে সারা বিশ্বে পরিচিতি পেয়েছে।
তারা যদি রাজনীতি করার সুযোগ পায়, তাহলে বারবার বাংলাদেশে ক্র্যাকডাউন চালাবে, গণহত্যা চালাবে। গণহত্যার বিচার করতে না পারলে আপনারা ক্ষমতা ছেড়ে দিন। আমার ভাইয়ের ও বোনদের রক্ত বৃথা যেতে দিতে পারিনা। আমরা অতি দ্রুত এই গণহত্যার বিচার দেখতে চাই এবং আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধকরণ দেখতে চাই।