শিরোনাম
নড়াইল, ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ (বাসস) : নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে একুশে পদকপ্রাপ্ত লোককবি বিজয় সরকারের ১২২তম জন্মবার্ষিকী আজ পালিত হয়েছে।
জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে কবির জন্মভিটা নড়াইল সদর উপজেলার ডুমদীতে দিনব্যাপী নানা অনুষ্ঠানের মধ্যে ছিল বিজয় সরকারের প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ, বিজয়গীতি পরিবেশন, আলোচনা সভা ও বাউলগান।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন নড়াইল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সঞ্চিতা বিশ্বাস। বক্তব্য দেন বিজয় সরকার ফাউন্ডেশনের সেক্রেটারি আকরাম শহীদ চুন্নু ও সদস্য ভবরঞ্জন রায়।
অসাম্প্রদায়িক চেতনার সুরস্রষ্টা, গীতিকার ও গায়ক চারণকবি বিজয় সরকার ১৯০৩ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি নড়াইল সদর উপজেলার বাঁশগ্রাম ইউনিয়নের ডুমদি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম নবকৃষ্ণ অধিকারী এবং মায়ের নাম হিমালয়া দেবী।
শৈশবকাল এবং জীবনের বেশিরভাগ সময় তিনি কাটিয়েছেন প্রিয় জন্মভূমি ডুমদিসহ নড়াইলের বিভিন্ন এলাকায়। ছেলেবেলা থেকেই তিনি (বিজয় সরকার) কবিতা, গান রচনা ও সুরের মধ্যে ডুবে থাকতেন। তাই প্রাতিষ্ঠানিক লেখাপড়ায় বেশিদূর এগোতে পারেননি। মাত্র নবম শ্রেণীতে অধ্যয়নরত অবস্থায়ই তার লেখাপড়ার সমাপ্তি ঘটে। মতান্তরে তিনি ম্যাট্রিক পাশ।
এরপর তিনি গানের দল নিয়ে বেরিয়ে পড়েন বাংলাদেশ ও ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে। তিনি একাধারে গানের রচয়িতা ও সুরকার। ‘পোষা পাখি উড়ে যাবে সজনী/ একদিন ভাবি নাই মনে...। এই পৃথিবী যেমন আছে/ তেমনি ঠিক রবে/ সুন্দর এই পৃথিবী ছেড়ে/ একদিন চলে যেতে হবে...। তুমি জানো নারে প্রিয়/ তুমি মোর জীবনের সাধনা’...এ ধরনের অসংখ্য জনপ্রিয় গানের স্রষ্টা ছিলেন তিনি।
বিজয় সরকার প্রায় এক হাজার ৮০০ গান রচনা করেছেন। তিনি প্রচুর কবিতাও রচনা করেন। কবিগানের আসরেও দুর্দান্ত ছিলেন তিনি। মাতিয়ে তুলতেন দর্শক-শ্রোতাদের। কোন কোন মঞ্চে তৎক্ষণাৎ নিজের রচিত আধ্যাত্মিক গান পরিবেশন করে তিনি উপস্থিত শ্রোতাদের মুগ্ধ করতেন।
কবি গানে বিশেষ অবদানের জন্য তিনি ‘চারণকবি’ ও ‘সরকার’ উপাধিতে ভূষিত হন। ১৯৮৫ সালের ৪ ডিসেম্বর ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কেউটিয়ায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। সেখানেই তাকে সমাহিত করা হয়। ২০১৩ সালে একুশে পদক (মরণোত্তর) লাভ করেন উপমহাদেশের প্রখ্যাত এই চারণ কবি।