বাসস
  ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৬:১৩

৫২’র ভাষা আন্দোলন আমাদের প্রেরণার উৎস : হামিদুর রহমান আযাদ

হামিদুর রহমান আযাদ। ফাইল ছবি

ঢাকা, ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ (বাসস) : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি ও সাবেক এমপি এ এইচ এম হামিদুর রহমান আযাদ বলেছেন, ৫২’র ভাষা আন্দোলন জাতি হিসাবে আমাদের জন্য গর্বের এবং প্রেরণার’।

তিনি আজ রাজধানীর কাকরাইলে ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (আইডিইবি) ভবনের কাউন্সিল হলে জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তর আয়োজিত শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমানের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় মজলিস শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের নায়েবে আমীর ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোস্তফা, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা  মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি নাজিম উদ্দীন মোল্লা ও মাওলানা ইয়াছিন আরাফাত এবং কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য মোহাম্মদ জামাল উদ্দীন ও মোস্তাফিজুর রহমান ও প্রচার-মিডিয়া সম্পাদক মু. আতাউর রহমান সরকার।

হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, ‘ভাষা আন্দোলনের কথা আসলে ১৯৫২-এর ২১ ফেব্রুয়ারি কথা উঠলেও এর পেছনেও রয়েছে অনেক অজানা ইতিহাস। রাষ্ট্রভাষা বাংলার প্রথম দাবি ওঠে ব্রিটিশ শাসনামলে ১৯১১ সালে। 

মূলত, রংপুর শিক্ষা সম্মেলনে নওয়াব আলী চৌধুরী ব্রিটিশ সরকারের কাছে প্রথম এ দাবি উপস্থাপন করেন। 

এরপর ১৯১৮ সালে শান্তি নিকেতনে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হিন্দিকে ভারতের রাষ্ট্রভাষা করার দাবি উত্থাপন করেন। ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ এ দাবির প্রতিবাদ করে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার জোরালো দাবি উত্থাপন করেন। ১৯৩৬ সালে একই দাবি উত্থাপন করেন মওলানা আকরাম খাঁ। ১৯৪৬ সালে আলীগড় বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য জিয়াউদ্দীন উর্দ্দুকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবি উত্থাপন করলে ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ এ প্রস্তাবের প্রতিবাদ করে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা দেওয়ার জোরালো দাবি করেন। ঔপনিবেশিক শাসনের অবসানের পর পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ এবং পরবর্তীতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলী খান উর্দ্দুকে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা করার প্রস্তাব করলে জনগণ বিক্ষুদ্ধ হয়ে ওঠে। দুর্বার ছাত্র আন্দোলন গড়ে ওঠে।’

ভাষা সৈনিক অধ্যাপক গোলাম আযমের অবদানের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, অধ্যাপক গোলাম আযম ছিলেন ভাষা আন্দোলনের সম্মুখ সারির নেতা। তিনি রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে ডাকসুর নির্বাচিত জিএস হিসাবে লিয়াকত আলী খানের কাছে স্মারক লিপিও পেশ করেছিলেন। তিনি ভাষা আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়ার কারণে বারবার গ্রেফতার, কারাবরণ ও কলেজের চাকুরী হারিয়েছিলেন। কিন্তু হীনমন্যতার কারণে তাকে মূল্যায়ন করা হয়নি বরং ডাকসুর জিএসদের নাম ফলক থেকে তার নাম মুুছে ফেলা হয়েছে। কিন্তু ফলক থেকে নাম মুছে ফেলেই দেশ, জাতি ও ভাষা আন্দোলনে তার অবদান মুছে ফেলা যাবে না। তিনি হীন্যমনতা পরিহার করে সরকারকে অধ্যাপক গোলাম আযমের প্রাপ্য সম্মান দেওয়ার আহবান জানান।

হামিদ আযাদ বলেন, আওয়ামী-ফ্যাসীবাদীরা পতনের আগের রাষ্ট্রের সকল অবকাঠামো ধ্বংস করে দিয়েছে। তাই রাষ্ট্রের প্রয়োজনীয় সংস্কারের আগে কোন নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য হবে না। সংস্কার ছাড়া নির্বাচন হলে অর্জিত বিপ্লব ও বিজয় ব্যর্থ হবে। তাই সবার আগে দরকার রাষ্ট্রীয় সংস্কার এবং স্থানীয় সরকার নির্বাচন। 

একই সাথে সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন পদ্ধতি চালু করতে হবে। বিশ্বের ৬২টি দেশে এ পদ্ধতি চালু আছে এবং তারা এর সুফল পাচ্ছে। এ পদ্ধতির মাধ্যমে দক্ষ সাংসদের মাধ্যম সংসদ সমৃদ্ধ হবে।