শিরোনাম
নারায়ণগঞ্জ, ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ (বাসস) : বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপির) স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, আমরা লড়াই সংগ্রাম করেছি জাতীয় নির্বাচনের জন্য। তাই কোনভাবেই জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন মানবো না।’
তিনি বলেন, ‘আজকে কেনো স্থানীয় নির্বাচন? কারণ হলো- যাদের গ্রামেগঞ্জে পায়ের তলায় মাটি নেই, তাদের প্রতিষ্ঠিত করার পাঁয়তারা। যারা আগে স্থানীয় নির্বাচনের কথা বলছেন তাদের উদ্দেশ্যে দূরসন্ধিমূলক, ষড়যন্ত্রমূলক।’
আজ মঙ্গলবার নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাড়ার খানপুর রোডে জেলা বিএনপি আয়োজিত দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির প্রতিবাদে এবং দ্রুততম সময়ের মধ্যে নির্বাচনের দাবিতে এক বিশাল জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ঘোড়ার আগে গাড়ি জুড়তে নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা বলছি, নির্বাচন হবে লোকেরা ভোট দেবে। যাকে ভোট দেবে সেই প্রধানমন্ত্রী হবে। বিএনপিকেই ভোট দিতে হবে এমনটা আমরা বলি না। কিন্তু তারা ধরেই নিয়েছেন নির্বাচন হলেই বিএনপি ক্ষমতায় আসবে। কারণ তারা জানে বিএনপি জনপ্রিয় দল। এই জনপ্রিয়তা নষ্ট করার জন্য আজকে এক শ্রেনীর লোক মাঠে নেমেছে।
তিনি আরও বলেন, বিএনপির জনপ্রিয়তা দেখে অনেকেই এখন বিএনপিকে আওয়ামী লীগের সাথে তুলনা করছে। বিএনপিকে ভারতের দালাল হিসেবে আখ্যায়িত করার চেষ্টা হচ্ছে। তবে একটা কথা স্পষ্ট বলে দিতে চাই, বিএনপি কখনই ভারতের তাবেদারি করেনি। যদি তাবেদারি করতো তাহলে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান জীবিত থাকতেন। ভারতের তাবেদারি করেননি বলেই তাকে মরতে হয়েছে।
মির্জা আব্বাস বলেছেন, অনেকে বলেন দ্বিতীয়বার স্বাধীন হয়েছে দেশ। আমি তীব্র প্রতিবাদ জানাই দ্বিতীয় স্বাধীনতা বলে কোন কথা নাই। স্বাধীনতা হয়েছে ১৯৭১ সালে। যখন আপনারা দ্বিতীয় স্বাধীনতা বলেন। তখন আমাদের ভালো লাগেনা। আমরা বাংলাদেশকে পরপর দুইবার স্বৈরাচার মুক্ত করেছি। দ্বিতীয় স্বাধীনতা কথাটা বলবেন না এতে মুক্তিযুদ্ধের অবমাননা হয়।
বিডিআর হত্যার বিষয়ে তিনি বলেন, দীর্ঘদিন জেলে থাকার সুবাদে যারা বিনা অপরাধে জেলে আছেন তাদের সাথে আমি কথা বলেছি। ঐদিন বিডিয়ার হত্যাকান্ডের নেপথ্যে ছিলো একদল প্রশিক্ষিত প্রাতিষ্ঠানিক বাহিনী। তারা এই দেশের নয়, বিদেশ থেকে এনে আমার দেশের বিডিয়ার সেনা কর্মকর্তাদের হত্যা করা হয়েছে। এই সেনা হত্যার বিচার আজও হলো না। অনেকেই বিনা অপরাধে জেলে আছেন, যাদের বেশীরভাগই নির্দোষ। তাদের অবিলম্বে মুক্তি দেয়া হোক।
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশ্যে মির্জা আব্বাস বলেন, আপনারা সংস্কার সংস্কার করে কান ঝালাপালা করে ফেলেছেন। সংস্কার কি করেছেন তা জানি না। কিন্তু হাতের সামনে যে সংস্কার সম্ভব সেইটা কেন করেন না? আগস্টে একদল ব্যবসায়ী শেখ হাসিনার সামনে কে কি বক্তব্য দিয়েছিলো সেই রেকর্ড শুনে দেখেন। একজন বলেছিলো, আমরা আজীবন তোমার সাথে থাকতে চাই। আরেকজন বলেছিলো আপনার সাথে আছি, আমৃত্যু থাকবো। এই ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট কি ভাঙ্গা হয়েছে? এই সিন্ডিকেটের কেউ গ্রেপ্তার হয়নাই। যতদিন এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়া হবে দ্রব্যমূল্যের দাম কমবে না।
নারায়নগঞ্জ জেলা বিএনপির আহবায়ক অধ্যাপক মামুন মাহমুদের সভাপতিত্বে সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক মোস্তাফিজুর রহমান ভুইয়া দীপু, সাবেক মন্ত্রী অধ্যাপক রেজাউল করিম, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান, মহানগর বিএনপির আহবায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খাঁন এবং সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খাঁন টিপু।