বাসস
  ০৪ মার্চ ২০২৫, ১৬:০৪
আপডেট : ০৪ মার্চ ২০২৫, ১৬:৩৯

বাংলাদেশ অর্থোপেডিক সোসাইটির নেতৃত্বে ডা. ওয়াকিল ও বিপ্লব

বাংলাদেশ অর্থোপেডিক সোসাইটির নেতৃত্বে ডা. মো. ওয়াকিল আহমদ ও ডা. সৈয়দ জাকির হোসেন বিপ্লব । ছবি : বাসস

ঢাকা, ৪ মার্চ, ২০২৫ (বাসস) : জুলাই-আগস্টের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর সম্মিলিতভাবে পদত্যাগ করেন বাংলাশে অর্থোপেডিক সোসাইটির নেতারা। এ ঘটনায় সোসাইটির কার্যক্রম স্থবির হয়ে গেলে কিছু সংখ্যক লোকবল নিয়ে নতুন কমিটি ঘোষণা করে অর্থোপেডিক চিকিৎসকদের একাংশ। তবে, ফ্যাসিস্ট কায়দায় এ কমিটি হয়েছে এমন আখ্যা দিয়ে নতুন করে আরেকটি কমিটি ঘোষণা করেছে অর্থোপেডিক চিকিৎসকদের আরেক পক্ষ। 

আজ জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে নতুন কমিটি, সোসাইটির বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ১৫৯ সদস্য বিশিষ্ট নতুন এই কমিটি ঘোষণা করা হয়। এ কমিটির আহ্বায়ক হয়েছেন ডা. মো. ওয়াকিল আহমদ, সদস্য সচিব হয়েছেন ডা. সৈয়দ জাকির হোসেন বিপ্লব। নতুন এ কমিটিতে প্রধান উপদেষ্টা হয়েছেন অধ্যাপক ডা. রফিকুল কবীর লাবু, কোষাধ্যক্ষ হয়েছেন ডা. মো. তাজুল ইসলাম রবি। এছাড়া, এ কমিটির উপদেষ্টা পদে ৩০ জন, যুগ্ম আহ্বায়ক পদে ১৬ জন, যুগ্ম সদস্য সচিব পদে ২৩ জন, সদস্য পদে ৮৬ জনের নাম ঘোষণা করা হয়েছে।  

সংবাদ সম্মেলনে নেতারা জানান, বাংলাদেশ অর্থোপেডিক সোসাইটি ১৯৭৯ সালে গঠিত হওয়ার পর থেকে ঐতিহাসিক পরিক্রমায় একটি মর্যাদাপূর্ণ পেশাজীবী সংগঠন হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। এই সংগঠনটি অর্থোপেডিক চিকিৎসা সেবায় অগ্রণী ভূমিকা রাখার পাশাপাশি চিকিৎসকদের দেশে-বিদেশে উন্নত প্রশিক্ষণ, বৈজ্ঞানিক কর্মশালা, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজনসহ নানাবিধ জনকল্যাণমূলক কাজ করে থাকে। গত ৫ আগস্ট বাংলাদেশের জনগণ এক অভূতপূর্ব গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের পতন ঘটায় এবং দেশে গণতান্ত্রিক চেতনার পথ সুগম হয়। 

জুলাই-আগষ্টের রাজনৈতিক পট-পরিবর্তনের পর সোসাইটির পূর্ববর্তী কমিটির গণ পদত্যাগে একটি প্রশাসনিক শূন্যতা সৃষ্টি হয়, যার ফলে সোসাইটির কার্যক্রম প্রায় অচল হয়ে পড়ে। কিছুদিন আগে দেশের জাতীয়তাবাদী অর্থোপেডিক বিশেষজ্ঞদের সম্পূর্ণ অন্ধকারে রেখে কাউকে কিছু না জানিয়ে অল্প সংখ্যক চিকিৎসককে নিয়ে একটি মহল চর দখলের মতো ফ্যাসিস্ট কায়দায় একটি কমিটি ঘোষণা করে। সেই কমিটিকে সমগ্র অর্থোপেডিক চিকিৎসক সমাজ প্রত্যাখান করে এবং সঙ্গে সঙ্গেই এই ফ্যাসিস্ট কর্মকান্ডের প্রতিবাদে গণতন্ত্রকামী দেশসেরা চিকিৎসকদের নিয়ে, নবীন-প্রবীণের সমন্বয়ে ডা. ওয়াকিল আহমেদ, ডা. সৈয়দ জাকির হোসেন বিপ্লব, ডা. তাজুল ইসলাম রবির নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করে। নবগঠিত কমিটির পরিচিতি সভার দিন প্রত্যাখাত কমিটির নিন্দনীয় ও অগ্রহণযোগ্য কর্মকান্ডের কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সিনিয়র নেতৃবৃন্দের পরামর্শে ডিরেক্টর ‘নিটোর’ এর অফিস কক্ষে এবং উভয় কমিটির উপস্থিতিতে বাংলাদেশ অর্থোপেডিক সোসাইটির সব কার্যক্রম স্থগিত করা হয়। যার ভিডিও ফুটেজ সংরক্ষিত আছে। যদিও সিংহভাগ অর্থোপেডিক বিশেষজ্ঞ ডা. ওয়াকিল-ডা. বিপ্লব-ডা. রবির পরিষদের সঙ্গেই ছিলেন। তবুও বৃহত্তর স্বার্থে আমরা এতে সম্মত হই। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে ওই ক্ষুদ্র গোষ্ঠী পুনরায় আলাপ আলোচনার তোয়াক্কা না করে এবং ওয়াদা বরখেলাপ করে একটি পরিবর্তিত ও অগ্রহণযোগ্য কমিটি ঘোষণা করে যেখানে ফ্যাসিবাদী চক্রের সম্পৃক্ততা স্পষ্ট। আমরা অর্থোপেডিক চিকিৎসক সমাজের বৃহত্তর অংশের পক্ষ থেকে এই অগণতান্ত্রিক ও বিভ্রান্তিকর কমিটিকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছি। একই সঙ্গে ডা. ওয়াকিল, ডা. বিপ্লব, ডা. রবির নেতৃত্বে ১৫৯ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করছি।

এসময় নতুন কমিটির নেতারা তাদের পাঁচ দফা কর্মপরিকল্পনাও তুলে ধরেন। তাদের কর্মপরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে- দেশে শক্তিশালী চিকিৎসা ব্যবস্থা তৈরির অংশ হিসেবে জুনিয়র অর্থোপেডিক সার্জনদের দেশে বিদেশে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে তাদের সক্ষমতা ও দক্ষতা বৃদ্ধি,  উপজেলা জেলা ও বিভাগীয় শহরে কর্মরত অর্থোপেডিক সার্জনদের বিশ্বের উন্নত প্রযুক্তি ও আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থার সমপর্যায়ে প্রশিক্ষিত করার জন্য বিভাগীয় পর্যায়ে বৈজ্ঞানিক সম্মেলন ও ওয়ার্কশপের আয়োজন, একটি শক্তিশালী ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন করে সোসাইটির সব সদস্যের অংশ নেওয়ার মাধ্যমে এবং গণতান্ত্রিক উপায়ে আগামী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচনের ব্যবস্থা করে নির্বাচিত নেতৃত্বের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর, সোসাইটির কার্যক্রম গতিশীল করার জন্য বিভাগীয় পর্যায়ে অর্থোপেডিক সোসাইটির কমিটি গঠন করা, সোসাইটির সদস্যবৃন্দ/প্রতিনিধিবৃন্দের বিভিন্ন দেশে আন্তজার্তিক বৈজ্ঞানিক সম্মেলনে যোগদান করে সোসাইটিকে আন্তজার্তিক পরিমন্ডলে উন্নীত করা।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন নব কমিটির আহ্বায়ক ডা. মো. ওয়াকিল আহমদ, সদস্য সচিব ডা. সৈয়দ জাকির হোসেন বিপ্লব, কোষাধ্যক্ষ ডা. মো. তাজুল ইসলাম রবি, যুগ্ম আহ্বায়ক ডা. মো. আবু আউয়াল শামীম প্রমুখ।