বাসস
  ০৮ মার্চ ২০২৫, ১৯:৩২

দেশের টেকসই উন্নয়নে নারী-পুরুষের সমতাভিত্তিক সমাজ প্রয়োজন

উন্নয়নে নারী-পুরুষের সমতাভিত্তিক সমাজ প্রয়োজন। ছবি : বাসস

রংপুর, ৮মার্চ, ২০২৫ (বাসস): রংপুরে আজ এক আলোচনা সভায় বক্তারা বলেছেন, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে নারীরা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন। দেশের স্থায়ী ও টেকসই উন্নয়নের জন্য নারী-পুরুষের সমতাভিত্তিক সমাজ প্রয়োজন।

জেলা প্রশাসন ও মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপ-পরিচালকের কার্যালয়ের যৌথ উদ্যোগে ‘অধিকার, সমতা, ক্ষমতায়ন, নারী ও কন্যার উন্নয়ন’ প্রতিপাদ্য নিয়ে ‘আন্তর্জাতিক নারী দিবস-২০২৫, উদ্যাপন উপলক্ষে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এই আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। 

আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রংপুরের বিভাগীয় কমিশনার মো. শহিদুল ইসলাম। এতে সভাপতিত্ব করেন রংপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল।

আলোচনাসভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন- বাংলাদেশ পুলিশের রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি মো. আমিনুল ইসলাম, রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. মজিদ আলী, রংপুরের পুলিশ সুপার আবু মো. সাইম এবং রংপুর জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোছা. সেলোয়ারা বেগম।

প্রধান অতিথির বক্তৃতায় রংপুরের বিভাগীয় কমিশনার বলেন, নারীরা চিরকালই সমাজের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ থেকে পরিবর্তনশীল সময়ের সঙ্গে-সঙ্গে জাতি গঠনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছেন।
 
তিনি বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে নারীরা সফলতার সঙ্গে অসাধারণ অবদান রাখছেন। দেশের তৈরি পোশাক শিল্প থেকে সিংহভাগ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হয়। আর এই তৈরি পোশাক শিল্পে নারীদের ভূমিকা অপরিসীম। 

তিনি বলেন, ‘শুধু তৈরি পোশাক শিল্প খাতেই নয়, অন্যান্য খাতেও নারীর অংশগ্রহণ ব্যাপক এবং তা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এজন্য দেশের সুষম ও টেকসই উন্নয়নের জন্য সরকার নারীদের উন্নয়নে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। সমাজে নারীদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা ও কর্মদক্ষতা বৃদ্ধিতে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান নানান ধরনের প্রশিক্ষণ প্রদান করছে।

নারী ক্ষমতায়ন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নারীর ক্ষমতায়নে নারী শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। শিক্ষিত নারী সমাজে বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের মধ্য দিয়ে নিজেদের জীবন নির্ধারণমূলক সিদ্ধান্ত গ্রহণের সুযোগ পান। নারী ক্ষমতায়ন নারীর নিজস্ব মূল্যবোধকে বিকাশিত করতে সাহায্য করে। নারীর সুপ্ত প্রতিভাকে বিকশিত করলে দেশের আর্থসামাজিক অবস্থা উন্নত হবে।

তিনি বলেন, নারী নির্যাতন গর্হিত কাজ। সমাজে নারী নির্যাতন বন্ধে সরকার প্রণীত আইনের যথাযথ প্রয়োগ করা জরুরি। নারী নির্যাতন বন্ধে প্রশাসনকে সহযোগিতা করার জন্য তিনি সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান। 

আলোচনাসভায় ব্র্যাক, আরডিআরএস বাংলাদেশের জননী প্রজেক্ট, এডাব, টিআইবি (সনাক), দেবী চৌধুরাণী পল্লী উন্নয়ন কেন্দ্র, ইএসডিও, সিড, কমিউনিটি আই কেয়ার রিসার্চ সেন্টার, নব প্রভাত ফাউন্ডেশন, জাতীয় মহিলা সংস্থা, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ, নাগরিক উদ্যোগ, স্বর্ণ নারী এসোসিয়েশন, ব্র্যাক আইডিপি এবং স্বেচ্ছাসেবী মহিলা সংগঠনের প্রতিনিধিগণ নারীর ক্ষমতায়ন, সম-অধিকার, বাল্যবিবাহ রোধ, ধর্ষণ প্রতিরোধ প্রভৃতি বিষয়ে মতামত ব্যক্ত করেন।

অনুষ্ঠানে সরকারি কর্মকর্তা, সাংবাদিক, বিভিন্ন মহিলা সংগঠন ও এনজিওকর্মীগণ উপস্থিত ছিলেন। আলোচনাসভা শেষে প্রধান অতিথি মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উদ্যোগে ড্রেস মেকিং অ্যান্ড টেইলারিং ট্রেডে প্রশিক্ষিত ১০ জন নারীর মধ্যে সেলাই মেশিন বিতরণ করেন।