বাসস
  ১৩ মার্চ ২০২৫, ২০:৩৭

মা ও নবজাতকের মৃত্যু: কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া প্রশ্নে হাইকোর্টের রুল

ঢাকা, ১৩ মার্চ, ২০২৫ (বাসস) : নোয়াখালীর সাউথবাংলা হাসপাতালে চিকিৎসকদের অবহেলা ও অপচিকিৎসার কারণে মা ও নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনায় কেন কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে না- তা জানতে চেয়ে সংশ্লিষ্টদের প্রতি রুল জারি করেছে হাইকোর্ট বিভাগ।

এ সংক্রান্ত বিষয়ে আনা রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি মুবিনা আসাফের সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ আজ বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন।

আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে সংশ্লিষ্ট বিবাদীদের এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

আজ রিটের পক্ষে শুনানি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সোলায়মান (তুষার)। তাকে সহযোগিতা করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এডভোকেট বায়োজিদ হোসাইন ও এডভোকেট নাঈম সরদার (অয়ন)। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এডভোকেট মোহাম্মদ শফিকুর রহমান। তাকে সহযোগিতা করেন ডেপুটি  এটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট মাহফুজ বিন ইউসুফ।

এর আগে, গত ৫ ফেব্রুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় নোয়াখালীর সেনবাগ প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক এমএ আউয়ালের পক্ষে রিটটি দায়ের করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মো. সোলায়মান (তুষার)। 

রিটে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি), বাংলাদেশ মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিলের রেজিস্টার, বাংলাদেশ নার্সিং মিডওয়াইফারি কাউন্সিলের রেজিস্টার, নোয়াখালী জেলার সিভিল সার্জন, নোয়াখালীর সাউথবাংলা হাসপাতাল, হাসপাতালের পরিচালক মহিউদ্দিন, নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জুনিয়র কনসালটেন্ট (অ্যানেস্থেসিয়া) ডাক্তার মো. আক্তার হোসেন অভি, তার স্ত্রী ও নোয়াখালী মেডিক্যাল অ্যাসিসট্যান্ট ট্রেনিং স্কুলের (ম্যাটস) জুনিয়র লেকচারার ডাক্তার ফৌজিয়া ফরিদ, সাউথ বাংলা হাসপাতালের মেডিকেল সহকারী জাহিদ হোসেন ও সাউথ বাংলা হাসপাতালের ওটি ইনচার্জ সজিব উদ্দিন হৃদয়কে বিবাদী (রেসপনডেন্ট) করা হয়।

এর আগে ২০২৪ সালের ২৯ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মো. সোলায়মান (তুষার) ডাকযোগে সংশ্লিষ্টদের লিগ্যাল নোটিশ পাঠান। নোটিশের পরও কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় এই রিট আবেদন করা হয়েছে। ওই রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে রুল জারি করে আদালত।

রিটে বলা হয়, ২০২৩ সালের ১৬ অক্টোবর রাতে সেনবাগ প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক এমএ আউয়াল তার অন্তঃসত্ত্বা মেয়ে উম্মে সালমা নিশির চিকিৎসার জন্য সাউথ বাংলা হাসপাতালে আসেন। এ সময় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, কর্মরত মেডিক্যাল সহকারী জাহিদ হোসেনের সহায়তায় ডা. আক্তার হোসেন অভি ও তার স্ত্রী ডা. ফৌজিয়া ফরিদ রোগীকে হাসপাতালে আনুষ্ঠানিকভাবে ভর্তি না করে রোগীর কোনও রকম পরীক্ষা-নিরীক্ষা না করে এবং অভিভাবকের সম্মতি না নিয়েই তাড়াহুড়া করে সিজার করেন। 

এ সময় ঘটনাস্থলেই মা ও সন্তানের মৃত্যু হয়। ঘটনা ধামাচাপা দিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও চিকিৎসক ডা. অভি ও তার স্ত্রী ফৌজিয়া ফরিদ প্রসূতির অবস্থা সংকটাপন্ন জানিয়ে আইসিইউ সাপোর্টের কথা বলে কুমিল্লায় রেফার করে। ভিকটিমের অভিভাবকরা তাকে কুমিল্লার টাওয়ার হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান অনেক আগেই রোগীর মৃত্যু হয়েছে।