শিরোনাম
ঢাকা, ২৬ মার্চ ২০২৫(বাসস): জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার সাবেক উপদেষ্টা ড. মোজাহেরুল হক বলেছেন, পতিত স্বৈরাচার হাসিনার আমলে সংগঠিত সকল গুম খুনের বিচারকেই এখন সরকারের প্রধান প্রায়োরিটি হতে হবে। আমরা অতিদ্রুত তার বিচার দাবি করছি। জুলাই বিপ্লবের পর এখন ঘন ঘন নির্বাচনের কথা আসছে। কিন্তু আমরা স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, গুম খুন ও গণহত্যার বিচার ব্যতিত বাংলাদেশে কোন নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না।
আজ বুধবার মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টি আয়োজিত এক আলোচনা সভা ও গণইফতার অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই অভিমত ব্যক্ত করেন। এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু'র সভাপতিত্বে ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহাদাতুল্লাহ টুটুলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিল মানবাধিকার সংগঠন মায়ের ডাকের সমন্বয়ক সানজিদা ইসলাম তুলি।
এবি পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয় সংলগ্ন বিজয় একাত্তর চত্বরে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এবি পার্টির নেতৃবৃন্দের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ভাইস চেয়ারম্যান লে. কর্ণেল (অব:) দিদারুল আলম, এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, জাতীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য আব্বাস ইসলাম খান নোমান, কেন্দ্রীয় মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা হায়দার আলী চৌধুরী, যুব পার্টির সদস্য সচিব হাদিউজ্জামান খোকন, আন্তর্জাতিক কমিটির সদস্য হাজরা মেহজাবিন ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. মোজাহেরুল হক আরও বলেন, একটি দেশে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত না থাকলে রাষ্ট্র কার্যকর থাকেনা। ন্যায়বিচারের স্বার্থে সৎ বিচারকের খুবই প্রয়োজন। আগামীতে আমরা এবি পার্টি'র নেতাদের মতো সৎ ও যোগ্য নেতৃত্বকে ভোট দিয়ে সংসদে আনতে চাই। আপনারা যদি এবি পার্টিকে বিশ্বাস করেন, তাহলে আগামীতে একটি ভালো সরকার আপনারা পেতে পারেন বলে দাবি করেন তিনি।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মায়ের ডাকের সমন্বয়ক সানজিদা তুলি বলেন, বিগত দেড় যুগেরও বেশি সময় ধরে যে কষ্ট আমরা গুম পরিবারের সদস্যরা ভোগ করছি তা কল্পনাতীত । আমার ভাইকে এখনো ফিরে পাই নি, বিচারও পাইনি। আজকে মহান স্বাধীনতা দিবস, আরেকটা স্বাধীনতা আমরা আগষ্টে পেয়েছি। সব গুম খুনের বিচার স্বচ্ছতার সহিত করতে হবে। আমরা শেখ হাসিনার বিচার চাই। আওয়ামী লীগের মতো কাউকে আমরা ক্ষমতায় দেখতে চাইনা। আমরা আর কোনদিন হাসিনা রেজিমকে ফিরতে দিবোনা বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, গত ১৬ বছরে কাউকে বাসা থেকে, কাউকে রাস্তা থেকে, অফিস থেকে গুম করে আয়নাঘরে বন্দী করা হয়েছিলো। বিভিন্ন গোয়েন্দাসংস্থা ও আওয়ামীলীগের গুন্ডা পান্ডারা বাসা থেকে আমাদের নাগরিকদের তুলে নিয়ে যেত। অনেকের লাশটা এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। আমাদের সবার ইচ্ছে থাকে, আমার আত্মীয়ের, ভাইয়ের কবর জিয়ারত করবো, কিন্তু হাসিনা সরকার সেই সুযোগটুকুও রাখেনি। ভালোবাসার মানুষটা বেঁচে আছে না মরে গেছে, এটা না জানা কতো কষ্টের, সেটি শুধু মাত্র ভুক্তভোগীই অনুধাবন করতে পারবে। গুমের সাথে জড়িত অনেকে এখনো বহাল তবিয়তে আছে, এখনো তাদের শাস্তির আওতায় নিয়ে আসা হয় নাই, যা খুবই দূর্ভাগ্যজনক।
সভাপতির বক্তব্যে মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, আমরা পূর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিম পাকিস্তান একটা দেশ ছিলাম। পশ্চিম পাকিস্তান আমাদেরকে হেয় প্রতিপন্ন করেছে, বৈষম্য করেছে, যার ফলশ্রুতিতে মুক্তিযুদ্ধ অপরিহার্য হয়ে পরেছিলো। ৭১ এ আমাদের বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের জন্ম হয়, ২৪ ঘটেছে ৭১ এর স্বপ্ন বাস্তবায়িত না হওয়ার জন্য। ৭১আমাদের অস্তিত্ব ২৪ আমাদের অনুপ্রেরণা। অনেকে ৭১ আর ২৪ কে মুখোমুখি দাঁড় করানোর অপচেষ্টা করছে কিন্তু প্রকৃতপক্ষে ৭১ কে রক্ষা করতেই ২৪ এর সৃষ্টি হয়েছে। যে প্রত্যাশা নিয়ে দেশ স্বাধীন হয়েছিলো সে স্বপ্ন পূরণ না হওয়াতেই ২৪ এর গণঅভ্যুত্থান অপরিহার্য হয়ে পরে বলে মন্তব্য করেন তিনি।