বাসস
  ১৩ এপ্রিল ২০২৫, ১৫:৫৬

বাণিজ্য ও বিনিয়োগের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাস্তবভিত্তিক পথনকশা জরুরি : এবি পার্টি

এবি পার্টি’র চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু রোববার বিজয় নগরস্থ দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন। ছবি: বাসস

ঢাকা, ১৩ এপ্রিল, ২০২৫ (বাসস): বিনিয়োগ ও বিশ্ব বাণিজ্যের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার জন্য বাস্তবভিত্তিক পথনকশা জরুরি বলে মন্তব্য করেছেন আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি)’র চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু। 

আজ বেলা ১২টায় বিজয় নগরস্থ দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ পথনকশার কথা জানান তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার যোবায়ের আহমদ ভূঁইয়া, অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মামুন রানা, আনোয়ার সাদাত টুটুল, কেন্দ্রীয় নেতা সেলিম খান ও হাজরা মেহজাবিন উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে মজিবুর রহমান মঞ্জু আরও বলেন, বিগত ফ্যাসিস্ট রেজিমের দেওয়া বিভিন্ন মিথ্যা ও কাল্পনিক তথ্য-উপাত্তের ওপর ভিত্তি করে ২০২৬ সালের নভেম্বরে অনুন্নত দেশের তালিকা থেকে বেরিয়ে এসে মধ্যম আয়ের দেশ হবার রূপকল্প দেশের অর্থনীতির মেরুদন্ড ভেঙে দিতে পারে। এ কারণে দক্ষিণ এশিয়াতে বাংলাদেশ যেসব কারণে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের জন্য উপযোগী ও প্রতিযোগিতামূলক অবস্থানে আছে, তা আর থাকবে না। 

আর সে অবস্থা হলে, দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীরা স্থানীয় বাজার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।

রপ্তানি বাজারের কৌশলগত দিক তুলে ধরে মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, যে কোন বিনিয়োগকারীকে স্থানীয় ও রপ্তানি বাজার সামনে রেখে বিনিয়োগের সম্ভাব্যতা যাচাই করতে হয়। সেক্ষেত্রে স্থানীয় বাজারের সক্ষমতা, দুনিয়া জুড়ে রপ্তানির সম্ভাবনা, অবকাঠামোগত সুবিধা, প্রতিযোগিতামূলক কর-ভ্যাট আছে কিনা, জ্বালানী নিরাপত্তা, স্থানীয় বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সংরক্ষণ ও ব্যাংক ঋণ-ডলারের মজুদ ইত্যাদি সকল চ্যালেঞ্জকে মোকাবিলা করবার জন্য বাস্তবভিত্তিক পথনকশা জরুরি। 

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সদিচ্ছা ও আন্তরিকতাকে সাধুবাদ জানিয়ে মঞ্জু বলেন, বিনিয়োগ সম্মেলনকে ঘিরে দেশে-বিদেশে যে আগ্রহ তৈরি হয়েছে, তাকে ইতিবাচকভাবে কাজে লাগাতে হবে। এজন্য দেশের অর্থনীতি ও বাণিজ্যের স্বচ্ছতার স্বার্থে প্রাসঙ্গিক সকল পরিসংখ্যান যাচাই বাছাই করে পুনঃপ্রকাশ জরুরি বলে মনে করেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে মঞ্জু বলেন, দেশের মোট জনসংখ্যা (প্রবাসী ও কর্মক্ষম তরুণসহ), জিডিপি’র পরিমাণ, মাথাপিছু গড় আয় ও আয়ু, বাৎসরিক প্রবৃদ্ধি, দারিদ্র্য সীমার নিচে বসবাসকারী জনগোষ্ঠী, শিক্ষা ও দক্ষতার হার, ক্রয় ক্ষমতা সম্পন্ন দেশীয় বাজারের পরিধি, রিজার্ভ ও ঋণের পরিমাণ, বৈশ্বিক ক্রেডিট রেটিং ইত্যাদির বিশ্বাসযোগ্য তথ্য দেশিয় ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য প্রকাশ করা আবশ্যক, যাতে তারা ভেবেচিন্তে সঠিক ও কার্যকর সিদ্ধান্ত নিতে পারে।

তিনি আরও বলেন, ১৯৭১ সালে অনুন্নত, উন্নয়নশীল ও উন্নত দেশের তালিকা করার পর থেকে বাংলাদেশ অনুন্নত দেশের তালিকাতে স্থান পায় ১৯৭৫ সালে। এর মোক্ষম সুযোগ কাজে লাগিয়ে দেশের অর্থনীতির ভিত গড়ে দেন সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান- যা এখনো আমাদের অর্থনীতির মেরুদণ্ড। কিন্তু দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের কবলে পড়ে মধ্যম আয়ের দেশ হবার চেষ্টা করলে দেশের রপ্তানিতে ধ্বস নামবে। এছাড়া অনুন্নত দেশ হবার কারণে গত কয়েক যুগ ধরে করবিহীন যে সকল সুবিধা সারা দুনিয়াতে আমরা পাচ্ছি, তা হারিয়ে ফেলব। তখন উচ্চ সুদে ঋণ ও কাঁচামাল আমদানি করে স্থানীয় বা বৈদেশিক বাণিজ্য সচল রাখা সম্ভব হবে না। 

মঞ্জু বলেন, এসব বিষয় সমাধান না হলে, বিনিয়োগ সম্মেলন থেকে আশানুরুপ সফলতা আসবে বলে মনে করে না এবি পার্টি। আর এ কারণে উচ্চাশা অনুযায়ী বিনিয়োগ সম্মেলনের সাফল্য অর্জিত না হলে তা হবে দুঃখজনক।