শিরোনাম
ঢাকা, ১৬ এপ্রিল, ২০২৫ (বাসস) : দীর্ঘ ১৫ বছর পর পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠক ‘ফরেন অফিস কনসালটেশন’- এফওসি’তে অংশ নিতে ঢাকায় পেঁছেছেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব আমনা বালুচ।
বুধবার দুপুরে তিনি ঢাকায় পৌঁছেছেন বলে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দক্ষিণ এশিয়া উইংয়ের মহাপরিচালক ইশরাত জাহান।
আগামীকাল রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় এফওসি’তে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন পররাষ্ট্র সচিব মো. জসীম উদ্দিন। আর পাকিস্তান প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন দেশটির পররাষ্ট্র সচিব আমনা বালুচ।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, বৈঠকে উভয় পক্ষ দ্বিপাক্ষিক ইস্যুর সকল দিক নিয়ে আলোচনা করবে বলে আশা করা হচ্ছে। নির্দিষ্ট কোনো এজেন্ডা নির্ধারণ করা হয়নি। পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় আলোচনায় অন্তর্ভুক্ত থাকার কথা রয়েছে।
তিনি বলেন, দীর্ঘ বিরতির পর আগে থেকে বিষয়গুলোকে নির্ধারণ করা কঠিন, তবে আলোচনা হবে ব্যাপক।
পাকিস্তানে বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. ইকবাল হোসেন খান বৈঠকে যোগ দিতে বর্তমানে ঢাকায় অবস্থান করছেন।
তিনি আজ বাসস’কে বলেন, ইসলামাবাদ ঢাকার সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক বৃদ্ধিতে বিশেষভাবে আগ্রহী। পাকিস্তান বাংলাদেশে রপ্তানি বৃদ্ধির সম্ভাবনা দেখছে। বিশেষ করে যদি তাদের পণ্যের দাম এখানে প্রতিযোগিতামূলক হয়।
তিনি বলেন, যেহেতু পাকিস্তান আফগানিস্তান ও ইরান থেকে পণ্যের প্রবেশদ্বার হিসেবে কাজ করে, তাই পরিবহন খরচ কম থাকলে বাংলাদেশের পাকিস্তানের মাধ্যমে আমদানি করার সুযোগ রয়েছে।
সরাসরি বিমান যোগাযোগের বিষয়ে হাইকমিশনার বলেন, ফ্লাই জিন্নাহ ছাড়াও আরেকটি পাকিস্তানি বেসরকারি ক্যারিয়ার, শিয়ালকোট-ভিত্তিক এয়ার সিয়াল ঢাকায় ফ্লাইট পরিচালনার জন্য বাংলাদেশ সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছে।
তিনি বলেন, ফ্লাই জিন্নাহ বর্তমানে ঢাকায় কার্যক্রম শুরু করার আগে তার বহর সম্প্রসারণের অপেক্ষায় রয়েছে। অন্যদিকে এয়ার সিয়াল অনুমোদন পাওয়ার দুই মাসের মধ্যে সরাসরি ফ্লাইট শুরু করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
ইকবাল হোসেন খান বলেন, সরাসরি বিমান যোগাযোগের ফলে পর্যটন এবং দুই দেশের জনগণের মধ্যে যোগাযোগ আরো বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
দুই দেশের মধ্যে অমীমাংসিত ঐতিহাসিক সমস্যা সম্পর্কে জানতে চাইলে হাইকমিশনার বলেন, বিশ্বব্যাপী দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে এই ধরনের বিষয়গুলো প্রায়শই বিদ্যমান থাকে। কিন্তু এগুলোর জন্য বর্তমান সম্পর্ক বা অর্থনৈতিক সহযোগিতাকে বাধাগ্রস্ত করা উচিত নয়।
ঢাকায় অবস্থানকালে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব বালুচ বৃহস্পতিবার এফওসি শেষে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করার কথা রয়েছে।
এদিকে পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র মন্ত্রী ইসহাক দার এই মাসের শেষের দিকে ঢাকা সফরের কথা রয়েছে। ২০১২ সালের পর এটিই হবে পাকিস্তানি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রথম বাংলাদেশে সফর।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ওই সফরের তারিখ এখনো চূড়ান্ত হয়নি। সফরটি এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
সর্বশেষ ২০১০ সালে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে এফওসি অনুষ্ঠিত হয়েছিল।