শিরোনাম
ঢাকা, ১৫ এপ্রিল, ২০২৫ (বাসস): পিরোজপুরে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)-এর বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে কাজ না করে ১ হাজার ৭৯ কোটি ৪ লাখ ৯৩ হাজার ৮৩৯ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) আটটি মামলা দায়ের করেছে। এই ঘটনায় ইতোমধ্যে পাঁচ আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
দুদক-এর সমন্বিত জেলা কার্যালয়, পিরোজপুরে দায়ের করা আটটি মামলাতে পিরোজপুর ২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মো. মহিউদ্দিন মহারাজ, এলজিইডি’র সাবেক দুই প্রধান প্রকৌশলী মো. আলি আখতার হোসেন ও মো. আব্দুর রশীদ খান, সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আব্দুস সাত্তার হাওলাদারসহ জেলা হিসাব ও অর্থ কার্যালয়ের কর্মকর্তা ও ঠিকাদারসহ ২৭ জনকে আসামি করা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)-এর প্রধান কার্যালয়ে নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানানো হয়। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন দুদক-এর মহাপরিচালক আক্তার হোসেন।
দুদক জানায়, ২০১৮-১৯ অর্থবছর থেকে ২০২৩-২৪ অর্থবছর পর্যন্ত সময়কালে পিরোজপুর জেলার বিভিন্ন উপজেলায় বাস্তবায়নযোগ্য আটটি প্রকল্পের আওতায় শত শত কোটি টাকার প্রকল্প গ্রহণ করা হলেও, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কোন কাজ না করে টাকা আত্মসাত করেন অভিযুক্তরা।
দুদক-এর দেওয়া প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ‘দেশের দক্ষিণাঞ্চলের আয়রন ব্রিজ পুনর্বাসন’ প্রকল্পে ১২৮টি স্কিমের বিপরীতে ব্যয় দেখানো হয়েছে ২৭৭ কোটি ৫৭ লাখ ৯৮ হাজার টাকা, ‘ঘূর্ণিঝড় আম্ফান ও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পল্লি সড়ক অবকাঠামো পুনর্বাসন’ প্রকল্পে ৬৪টি স্কিমে বরাদ্দ ২০৬ কোটি ৬০ লাখ ৫৫ হাজার টাকা, ‘পিরোজপুর জেলা পল্লি অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প’ প্রকল্পে ৩১টি স্কিমে ব্যয় দেখানো হয়েছে ৯০ কোটি ৮৬ লাখ ১৯ হাজার টাকা, ‘বরিশাল বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা ও ইউনিয়ন সড়ক প্রশস্তকরণ ও শক্তিশালীকরণ’ প্রকল্পে ১১৮টি স্কিমের বিপরীতে ৪০৮ কোটি ৫৭ লাখ ৮৯ হাজার ৪০০ টাকা বরাদ্দ দেখানো হলেও প্রকৃতপক্ষে কোনো কাজ হয়নি ও ‘উপজেলা শহর (নন-মিউনিসিপ্যাল) মাস্টারপ্ল্যান ও মৌলিক অবকাঠামো’ প্রকল্পে ২টি স্কিমে ৩ কোটি ৭৩ লাখ ৫৮ হাজার টাকার কাজ হয়নি।
এছাড়া আরও তিনটি প্রকল্পে মিলিয়ে প্রায় ৯১ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে।
এভাবে প্রকল্পগুলোতে সরকারি অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় দায়ের করা মামলাগুলোর নম্বর হচ্ছে—০১ থেকে ০৮। গত ১৫ এপ্রিল তারিখে এ মামলাগুলো করা হয়।
সব ঘটনায় গ্রেফতার আসামিরা হলেন- পিরোজপুর এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয়ের হিসাবরক্ষক (সাময়িক বরখাস্ত) একেএম মোজাম্মেল হক খান, জেলা হিসাব ও অর্থ কর্মকর্তা মোহাম্মদ মোহাসীন, জেলা হিসাব ও অর্থ অফিসের এসএএস সুপার মোহাম্মদ মাসুম হাওলাদার, সাবেক জেলা হিসাব ও অর্থ কর্মকর্তা (বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত), মোহাম্মদ আলমগীর হাসান ও একজন ঠিকাদার (পরিচয় যাচাইধীন)।
দুদক জানায়, বাকি আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।