বাসস
  ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ২৩:৪২

আমরা সংখ্যালঘু আর সংখ্যাগুরু রাজনীতিতে বিশ্বাসী নই: ডা. শফিকুর রহমান

ছবি : বাসস

ঢাকা (উত্তর), ২৩ এপ্রিল ২০২৫ (বাসস) : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, যারা অন্যকে সম্মান করতে পারে, তারা প্রকৃত মানুষ। আমরা এমন রাজনীতি করতে চাই, যেখানে আপনারা আমাদের চোখের দিকে তাকিয়ে ভুলগুলো ধরিয়ে দিবেন এবং আমাদের অগোচরে আমাদের প্রশংসা করবেন। সেই প্রকৃত বন্ধু যে আমার ভুল ধরিয়ে দেবে।

আজ বুধবার সন্ধ্যায় রাজধানীর আইডিইবি হলে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের উদ্যোগে ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের নিয়ে এক প্রীতি সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি।

আমীরে জামায়াত বলেন, মানুষকে মানুষ হিসেবে দেখতে হবে। কিছুদিন আগে দেশে বেশ ভাঙচুর হয়েছিল। আমি স্ট্যাটাস দিয়েছিলাম, কতজন কত কথা বলেছে। আমি তোয়াক্কা করি না। আমি একই বিষয় দুইভাবে দেখবো, সেটার নাম সুবিচার না। এখানে অনেকে বলেছেন, অতীতে অনেকে নির্বাচনী মেনিফেস্টোতে তাদের দাবিগুলো উল্লেখ করেছেন কিন্তু বাস্তবায়ন করেননি।

তিনি আরও বলেন, রাজনীতিবিদ ও সাংবাদিকরা সমাজকে চতুর্দিক থেকে দেখে থাকেন। আমরা সংখ্যালঘু আর সংখ্যাগুরু, এই রাজনীতিতে বিশ্বাসী নই।

সমাবেশে একুশে পদকপ্রাপ্ত শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. সুকোমল বড়ুয়া বলেন, সর্বধর্মের সবাই আমীরে জামায়াতকে ভালোবাসে। আমরা আমাদের বক্তব্যগুলো সংসদে বলতে চাই। আমরা জামায়াতকে নিয়ে আশাবাদী।

বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের সভাপতি দীনবন্ধু রায় বলেন, ধর্ম ধার্মিককে রক্ষা করে, অহিংসা পরম ধর্ম। জামায়াতে ইসলামী ঢাকা শহরে কয়টা বাড়ি দখল করে রেখেছে আর অন্যরা কয়টা বাড়ি দখলে রেখেছে? এই হিসাবটা নেন তাহলেই সব প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন। জামায়াতের আমীরকে দেখলে মনে হয়, এই মানসিকতার লোক যে সমাজে থাকে, সেখানে গন্ডগোল করে কারা? আগামী নির্বাচনে সংখ্যানুপাতে যে কয়টা আসন পাই, তাই আমাদের দেন।

বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব অ্যাডভোকেট গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক বলেন, স্বাধীন দেশে আমাদের সহায়-সম্পত্তি শত্রু সম্পত্তি হিসেবে পরিগণিত হলো। হিন্দুদের বিপদে আমরা যা করতে পারি নাই, জামায়াতের আমাদের আগেই সেখানে পৌঁছে গেছেন।

বাংলাদেশ বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘের সহকারী সেক্রেটারি প্রিন্সিপাল অনুপম বড়ুয়া বলেন, আমাদের মহাবিহারে আজকে দশ বৎসরের উপর মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের জন্য রমজান মাসে ইফতার করানো হয়। বৌদ্ধ ধর্মের অন্যতম মূলনীতি ‘জগতের সকল প্রাণী সুখী হোক‘।

বাংলাদেশ পূজা উদ্‌যাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক কালবেলা সম্পাদক সন্তোষ শর্মা বলেন, ৫৪ বছরের মধ্যে চব্বিশের দুর্গাপূজা সবচেয়ে কম দূর্ঘটনাপূর্ণ হয়েছে। বাংলাদেশের হিন্দুদের প্রাণের দাবি ৮ দফা। আমরা আশা করি এই ৮ দফা  আপনাদের নির্বাচনী মেনিফেস্টোতে অন্তর্ভুক্ত করবেন। তিনি আমীরে জামায়াতকে উদ্দেশ্য করে বলেন, পঞ্চগড়ে নৌকাডুবিতে আপনি সরাসরি উপস্থিত হয়ে তাদের দায়িত্ব নিয়েছেন। বরগুনার হিন্দু ধর্মাবলম্বী ধর্ষিতা মেয়েটির পরিবারের কাছে গেছেন। এরকম অসংখ্য উদাহরণ আপনার বেলায় দেওয়া যায়।

মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের সঞ্চালনায় কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির মো. নূরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে এ সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন দলের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, বাংলাদেশ পূজা উদ্‌যাপন পরিষদের সভাপতি ও সাংবাদিক শ্রী বাসুদেব ধর, বাংলাদেশ বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘের ভাইস-প্রেসিডেন্ট স্বরূপানন্দ ভিক্ষু, ইমানুয়েল ব্যাপটিস্ট চার্চের পাস্তুর তপন রায়, শুভাশীষ বিশ্বাস মহানগর সর্বজনীন পূজা কমিটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক,সিদ্ধেশ্বরী সার্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি ও সাবেক ডিআইজি নিবাক চন্দ্র মাঝী, বৌদ্ধ ধর্মের বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী লিটন কুমার বড়ুয়া, স্যার কালচারাল সোসাইটির সভাপতি সুজন দে, কীর্তিক বড়ুয়া এবং জামায়াতের ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি ড. আব্দুল মান্নান।