বাসস
  ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ১৬:৫৯

রানা প্লাজা হত্যাকাণ্ডের ১২ বছর স্মরণ করেছে শ্রমিকদের বিভিন্ন সংগঠন

বৃহস্পতিবার জুরাইনে গণকবরে রানা প্লাজায় প্রাণ হারানো শ্রমিকদের স্মরণ  করে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। ছবি: বাসস

সাভার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৫ (বাসস): ‘শ্রমিক স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করো শ্রমিক ইতিহাস রক্ষা করো’ স্লোগানে রানা প্লাজা হত্যাকাণ্ডের ১২ বছর স্মরণ করেছে শ্রমিকদের বিভিন্ন সংগঠন। 

আজ বৃহস্পতিবার সাভার ও ঢাকায় বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়। এর মধ্যে শ্রমিকদের স্মরণে শ্রদ্ধা নিবেদন, প্রতিবাদী র‌্যালি ও আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়।

দিবসটির শুরুতে সকাল ৯টায় জুরাইনে গণকবরে রানা প্লাজায় প্রাণ হারানো শ্রমিকদের স্মরণ  করে শ্রদ্ধা নিবেদন করে গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতি। 

এরপর সকাল ১১টায় সাভার রানা প্লাজার সামনে বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির উদ্যোগে সোহেল রানাসহ দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি, ক্ষতিপূরণ, শ্রমিক স্মৃতিসৌধ নির্মাণের দাবিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি, প্রতিবাদী র‍্যালি ও আলোকচিত্র অনুষ্ঠিত হয়। 

রানা প্লাজার সামনে প্রতিবাদী র‍্যালি ও শ্রদ্ধা শেষে আলোকচিত্র প্রদর্শনী উদ্বোধন করেন রানা প্লাজার দুর্ঘটনায় নিহত শ্রমিক সমাপ্তি রানীর মা রুনা রানী দাস। 

এ সময় বক্তব্য রাখেন তাসলিমা আখতার, মিজানুর রহিম চৌধুরি, অঞ্জন দাস, নিহত শ্রমিকের মা রুনারানী দাস, নিহত শ্রমিকের মা নাছিমা আক্তার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক প্রবীর সাহা এবং নিহত পরিবারের সদস্য ও আহত শ্রমিকরা।

বিকেল ৩ টায় ঢাকার ১৬ শুক্রাবাদ পান্থপথের দৃকপাঠ ভবনের প্রথম তলায় রানা প্লাজার নিহতদের স্মরণে কাঁথা-ছবি, সেলাই ও কথায় তৈরি স্মৃতি কাঁথা প্রদর্শিত হয়। স্মৃতি কাঁথা প্রদর্শনীতে বিকেল ৩ টায় উপস্থিত হন সংগঠনের সভা প্রধান তাসলিমা আখতার ও সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহিম চৌধুরী।

মেয়ে সমাপ্তিসহ হাজারো প্রাণ হারানো শ্রমিকদের স্মরণে রানা প্লাজার সামনে আলোকচিত্র প্রদর্শনী উদ্বোধন শেষে রুনা রানী দাস বলেন, ১২ বছর হয়ে গেছে মেয়ে সমাপ্তি রানীকে হারিয়েছি। আজও তাকে ভুলতে পারি না। এখনো বিচার হয়নি দোষী সোহেল রানাসহ অন্যান্যদের। রুনা রানী সকল দোষীর শাস্তি দাবি করেন এই নতুন বাংলাদেশে।

তাসলিমা আখতার ও অন্যান্যরা বলেন, ২৪ এপ্রিল আবারও সেই অতীতের দুঃসহ স্মৃতিকে সামনে এনেছে। এই ঘটনাকে ইতিহাসে বাঁচিয়ে রাখতে এবং তরুণদের লড়াইয়ে প্রেরণা দিতেই এই প্রদর্শনী। রানা প্লাজার শ্রমিকদের মতো যাতে আর কারো অকালে মরতে না হয় তার জন্য ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান আয়োজকরা। 

তারা বলেন, রানা প্লাজা শ্রমিক হত্যার ১২ বছরেও এই স্থানটি রক্ষা পায়নি। একইসঙ্গে জুরাইনের গণকবরে সমাধি দেয়া শ্রমিকদের স্মৃতিও অসংরক্ষিত আছে। বক্তারা জুরাইন কবরস্থানে শ্রমিকদের সকল কবরে নাম ফলক ও স্মৃতি ফলকের ব্যবস্থা করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

বক্তারা আরো বলেন, ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল রানা প্লাজা ধসে ১ হাজার ১৭৫ জনের বেশি শ্রমিকের প্রাণ ও স্বপ্ন নি:শেষ হয়ে গেছে। ১২ বছরেও এসব হত্যার বিচার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হয়নি। কারখানার ভবন মালিক সোহেল রানা ছাড়া অন্যান্য মালিক, সরকারি কর্মকর্তারা জামিনে জেলের বাইরে আছেন।

অন্যান্য বক্তারা বলেন, নিহত ও আহত পরিবারকে ১২ বছর আগে যে আইনি ক্ষতিপূরণ বা অনুদান দেয়া হয়েছে তা কখনোই সম্মানজনক বা মর্যাদাপূর্ণ নয়। শ্রম আইনে ক্ষতিপূরণের আইন যা বদল হয়েছে তা অতি নগণ্য।