বাসস
  ২৬ এপ্রিল ২০২৫, ১৬:২০

দ্বি-কক্ষ বিশিষ্ট সংসদে আপত্তি নেই, অধিকতর আলোচনা চলছে: জামায়াত ইসলামের নায়েবে আমীর

জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। ফাইল ছবি

ঢাকা, ২৬ এপ্রিল, ২০২৫ (বাসস) : সংস্কারের লক্ষ্যে অন্তবর্তী সরকারের গঠিত বিভিন্ন সংস্কার কমিশনের দেয়া সুপারিশসমূহের মধ্যে দ্বি-কক্ষ বিশিষ্ট সংসদের প্রস্তাবসহ আরো কিছু বিষয়ে ঐকমত্য কমিশনকে নিজেদের সমর্থনের কথা জানিয়েছে জামায়াতে ইসলামী।

দলটির নায়েবে আমীর ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের এ কথা জানান।

আজ (শনিবার) জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সাথে মতবিনিময় শেষে নামাজ ও মধ্যাহ্নভোজনের বিরতিতে যাবার আগে সংক্ষিপ্ত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি গণমাধ্যম কর্মীদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত সংবিধান নিয়ে আলোচনা অত্যন্ত ফলপ্রসূ হয়েছে।  দ্বি-কক্ষ বিষয়ক সংসদের ব্যাপারে আমরা আমাদের সহমত কমিশনকে জানিয়েছি এখন এর প্রকৃতি, গঠন নিয়ে আলোচনা করছি। সংস্কার প্রস্তাবে চার বছর মেয়াদী সংসদ ও রাষ্ট্রপতির কার্যকালীন সময়ের বিষয়ে আমরা কমিশনকে জানিয়েছি যে আমরা এখানে মেয়াদ পাঁচ বছরকে সমর্থন জানাচ্ছি।’

তিনি আরও জানান, ‘জাতীয় স্বার্থের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা চলমান থাকবে, কারণ মেজর স্টেকহোল্ডার হিসেবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী অত্যন্ত গুরুত্বের ও মনোযোগের সাথে বিষয়গুলো নিয়ে বিবেচনা করছে।’

তিনি বলেন, ‘দেশ ও জাতির জন্য যা যা কল্যাণকর তা বিবেচনা করে আমরা আমাদের মত দিচ্ছি। এখানে ব্যক্তি বা দল আমাদের বিবেচ্য বিষয় নয়। বাংলাদেশ, এদেশের মানুষ ও তাদের ভবিষ্যত আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ।’

এর আগে, সকাল সাড়ে দশটায় জাতীয় সংসদ ভবনের এল ডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সাথে সংস্কার কমিশনসমূহের সুপারিশ নিয়ে আলোচনা শুরু করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।

সেখানে জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে সূচনা বক্তব্য দেয়ার সময় ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন,  জুলাই আগস্ট বিপ্লবের মধ্য দিয়ে আমরা একটি নতুন স্বাধীনতা পেয়েছি, কিন্তু আসলে স্বাধীন হয়েছি কি না সেটা সময় বলে দিবে।  আমরা আশা করি এই যে নতুন পরিবর্তন হয়েছে, যে সুযোগ এসেছে সেটা অতীতের মতো আবার হারিয়ে যাবে না। সেজন্য আমাদের অনেক বেশি সাবধান হতে হবে, প্রয়োজনে খানিকটা কঠোর হতে হবে।

দলটির আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমানের নেতৃতে ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আহত ও চিকিৎসাধীন আন্দোলনকারীদের দেখতে যান তিনি।

সে সময়ের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন,‘সেখানে গিয়ে আমরা লক্ষ্য করি যে অসুস্থ ও পঙ্গু রোগীদের ৮০ ভাগই ছিলেন সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ, যেমন -দিনমজুর, রিকশাচালক ও ফেরিওয়ালা। এই আন্দোলনে সাধারণ জন-মানুষের যে অসামান্য অবদান রয়েছে সেটাকে কোন ভাবেই ভুলে যাওয়া যাবে না।’ 

বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। বৈঠকে রয়েছেন কমিশনের সদস্য বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান, সফর রাজ হোসেন ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (ঐকমত্য) মনির হায়দার।

অপরদিকে, জামায়াতের প্রতিনিধিদলে উপস্থিত রয়েছেন-জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর মো. নুরুল ইসলাম বুলবুল, জামায়াতের নায়েবে আমীর ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের, কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি এডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ, ড. হামিদুর রহমান আযাদ, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য সাইফুল আলম খান মিলন,কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, এবং আইনজীবী শিশির মনির।

সংবিধান, জনপ্রশাসন, বিচারবিভাগ, দুর্নীতি দমন কমিশন ও নির্বাচন- এই পাঁচটি সংস্কার কমিশনের দেয়া প্রস্তাবের ওপর ভিত্তি করে আলোচনা চলছে তাঁদের।