শিরোনাম
ঢাকা, ১ সেপ্টেম্বর ২০২৩ (বাসস): বিশ্ব ক্রিকেটে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ মানেই অন্যরকম উন্মাদনা, উত্তেজনা, যার জন্য সমগ্র বিশ্বের ক্রিকেট ভক্তরা থাকে উদগ্রীব। এর মধ্যেই এশিয়া কাপ ক্রিকেটের উত্তেজনাপুর্ন ও রোমঞ্চকর ম্যাচে কাল মুখোমুখি হচ্ছে উপমহাদেশের দুই চির বৈরী প্রতিবেশী রাস্ট্র ভারত ও পাকিস্তান। এমনিতেই দল দুটি নিয়ে ভক্তদের মধ্যে আগ্রহের শেষ নেই। তার উপর আবার বিগত ১০ বছর ধরে উল্লেখযোগ্য হারে কমে গেছে দুই দলের মধ্যে ম্যাচ সংখ্যা। যে কারণে পাক-ভারত ম্যাচের উত্তেজনার পারদ আরো বেড়ে গেছে। দলীয় লড়াই ছাড়াও দুই দলের মধ্যকার ম্যাচে থাকে কিছু ব্যক্তি লড়াইও।
১. শাহিন শাহ আফ্রিদি বনাম রোহিত শর্মা: ভারতীয় ওপেনার রোহিত শর্মা ও বাঁহাতি পাকিস্তানী পেসার শাহিন শাহ’র দ্বৈরথ স্বর্গীয় কিছু নয়। ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি, ২০১৯ সালের বিশ্বকাপ সেমিফাইনাল এবং ২০২১ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দিকে একবার তাকালেই বিষয়টি পরিস্কার হয়ে যাবে। একজন বাঁহাতি পেসার ছিন্ন ভিন্ন করে দিচ্ছে ভারতের টপ অর্ডার। পেসারদের তালিকার শীর্ষে আছেন মোহাম্মদ আমির, ট্রেন্ট বোল্ট ও শাহিন আফ্রিদি। এদের মধ্যে অবসরে চলে গেছেন আমির। আর বিশ্বকাপের আগে বোল্টের কোন হুমকি নেই। সে ক্ষেত্রে ভারতীয়দের জন্য হুমকি হয়ে আছেন নতুন বলে বিশেষ বৈশিষ্ঠ্যমন্ডিত পেসার শাহিন আফ্রিদি। প্রথম ওভারেই উইকেট শিকারের একটি তকমা লেগে গেছে তার গায়ে। এই মুহুর্তে তার টার্গেটে যিনি আছেন তিনি হচ্ছেন ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত শর্মা। পেসারদের বিপক্ষে ব্যাট হাতে ঝড় তোলা শর্মার মধ্যে সম্প্রতি প্রাথমিক ফুটওয়ার্কে কিছুটা দূর্বলতা ফুটে উঠছে। যেটিকে বেশ ভালোভাবেই নোট করে নিয়েছেন শাহিন।
২. হারিস রউফ বনাম বিরাট কোহলি: গত বছর অনুষ্ঠিত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে হারিস রউফের বলে টানা ছক্কা হাকানো বিরাট কোহলির সেই নজরকাড়া ব্যাটিং এখনো অনন্য এক আসন করে নিয়েছে ক্রিকেটের ইতিহাসে। যেটি তুলনা হতে পারে ১৯৯৮ সালে শরজায় প্রয়াত শেন ওয়ার্নের বল অব দ্য সেঞ্চুরি কিংবা শচিন টেন্ডুলকারের জোড়া সেঞ্চুরির সঙ্গে। এরপরও পকিস্তানি পেসার রউফ সাহসের সঙ্গে বলেছিলেন, ওই বলগুলো মোকাবেলার সময় ধুকতে হয়েছে কোহলিকে। এটি ছিল তার আত্মরক্ষার একটি পথ খুঁজে নেয়া।
তবে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৫ উইকেট সংগ্রহের মাধ্যমে মোমেন্টাম খুঁজে পেয়েছেন রউফ। যদিও ভারতীয় ব্যাটিং লাইনআপের কাছে আফগানরা কিছুই না। তবে ওই ঘটনায় কোহলির ব্যাটিংয়ের বিপক্ষে রউফের গতিময় পেস কিছুটা হলেও আঁচড় কাটবে বলে ধারনা করা হচ্ছে।
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেও সম্প্রতি আগ্রাসন চালিয়েছেন রউফ।তবে কোহলির চ্যালেঞ্জ এখনো তার সামনে জ্বলজ্বল করছে। শুধু তাই নয় বিরাট এখন ফিরেছেন নিজের সবচেয়ে সফল ফর্মেটে। যে কারণে এই দুই তারকার দ্বৈরত হবে দর্শকদের জন্য খুবই আকর্ষনীয়।
৩. বাবর আজম বনাম জসপ্রিত বুমরাহ: দুবাইয়ে জসপ্রিত বুমরাহকে বাবর আজম তুলোধুনা করেছিলেন এবং পাকিস্তান ১০ উইকেটে হারিয়েছিল ভারতকে। তবে সেটা ছিল ২০২১ সাল এবং টি-টোয়েন্টি ভার্সনে। দুই বছর আগের সেই ক্লান্ত বুমরাহও এখন আর নেই। নতুন ভার্সনের বুমরাহ এখন বেশ পুনরুজ্জিবীত।
খর্ব শক্তির নেপালের বিপক্ষে অবশ্য সেঞ্চুরি হাকিয়ে এশিয়া কাপ মিশন শুরু করেছেন বাবর। তবে ভারতের বিপক্ষে সম্পুর্ন নতুন আঙ্গিকে ব্যাট করতে হবে তাকে। বাবরের বিপক্ষে বুমরাহ’র আগের ট্র্যাক রেকর্ডই এখনো পর্যন্ত রয়ে গেছে। তবে ওই পরিসংখ্যান পাল্টানোর সুযোগ এবার পেতে পারেন বুমরাহ।
৪. কুলদ্বীপ যাদব বনাম ইফতেখার আহমেদ: আসন্ন পাক-ভারত ম্যাচে গুরুত্বপুর্ন হয়ে উঠতে পারে কুলদ্বীপ যাদব ও ইফতেখার আহমেদের মধ্যকার দ্বৈরথ। ইফতেখারের সাধারনত আক্রমনাত্মক খেলে থাকেন। অপরদিকে সুক্ষ ও বৈচিত্র্যময় স্পিনার কুলদ্বীপ ছাড়িয়ে যেতে পারেন অন্যদের।
মোহাম্মদ রিজওয়ানের মতো দক্ষ ব্যাটারেদর উপস্থিতি সত্ত্বেও ইনফর্ম ইফতেখার পাকিস্তানের মিডল অর্ডারে অন্যতম ভরসার নাম।
এদিকে রহিুল দ্রাবিড় ও রোহিত শর্মাদের যুগে বিকশিত হওয়া কুলদ্বীপকে আপন মহিমায় টিকিয়ে রেখেছে তার আত্মবিশ্বাস। বাঁ হাতি ওই স্পিনারের বোলিংয়ে রয়েছে দারুন বৈচিত্র্য। যা এই প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অবশ্যই দেখার মতো দৃশ্যের অবতারনা করতে পারে।
৫. বিরাট কোহলি বনাম বাবর আজম: তারা ব্যাট-বলে পরস্পরের মুখোমুখি না হলেও ভারত-পাকিস্তান ম্যাচে এই দুই ব্যাটারকে নিয়ে আলোচনা হবেনা তাতো হতে পারে না। কিংবদন্তি কোহলির মাহাত্য এবং উদীয়মান সুপার স্টার বাবরের প্রতিভা এই ম্যাচের বড় উপাদান। দুই ক্রিকেটারের তুলনা মুলক বিশ্লেষন প্রায়ই গণমাধ্যম গুলোর খবরের শিরোনাম হচ্ছে।
এই ফর্মেটে একে অপরের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও দুই জনের মধ্যে রয়েছে দারুন হৃদ্যতা। পাকিস্তান ভারতকে হারানোর পর এই দুই জনের হৃদয়স্পর্শী দৃশ্য কে ভুলতে পরে? কোহলি যেমন তার ফর্মে ফিরেছেন তেমনি বাবরের ধারাবাহিকতায় কিছুটা চিড় ধরেছে। তারপরও বাবরকে বিশ্বের শীর্ষ ব্যাটার হিসেবে উল্লেখ করেছেন কোহলি। আবার বাবরও কোহলিকে শুভেচ্ছা জানিয়ে টুইট করছেন।