শিরোনাম
মিউনিখ, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩ (বাসস/এএফপি) : গোলরক্ষক আন্দ্রে ওনানার ভুলে বায়ার্ন মিউনিখের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের প্রথম ম্যাচে ৪-৩ গোলে পরাজিত হয়েছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড।
সব মিলিয়ে টানা তিন পরাজয়ে ইউনাইটেডর ম্যানেজার এরিক টেন হাগ পড়েছেন তোপের মুখে।
মিউনিখের আলিয়াঁজ এ্যারেনাতে ম্যাচের শেষভাগে কাসেমিরো জোড়া গোল করেও ইউনাইটেডকে রক্ষা করতে পারেননি।
২৮ মিনিটে লেরয় সানের দুর্দান্ত শট ওনানার হাত ফসকে জালে জড়ালে এগিয়ে যায় বায়ার্ন। ম্যাচ শেষে ওনানা বলেছেন, ‘আমার ভুলের কারনে আমরা ম্যাচের নিয়ন্ত্রন হারিয়ে ফেলেছিলাম। এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত কঠিন সময়, বিশেষ করে আমার কাছে। কারন আমি পুরো দলকে ছোট করেছি। আমার কারনেই ইউনাইটেড আজ পরাজিত হয়েছে।’
গত বছর চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে খেলা ইন্টার মিলানের হয়ে দারুন ছন্দে ছিলেন ক্যামেরুনের এই গোলরক্ষক। কিন্তু ৪৭ মিলিয়ন পাউন্ডে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে আসার পর থেকে ইউনাইটেড ক্যারিয়ারে এখনো নিজেকে প্রমান করতে পারেননি। ১৯৭৮ সালের পর এই প্রথমবারের মত টানা তিন ম্যাচে ইউনাইটেড তিন বা তার বেশী গোল হজম করেছে। ওনানা আরো বলেন, ‘ম্যানচেস্টারে আমার শুরুটা মোটেই ভাল হলোনা। এভাবে আমি খেলতে চাইনি। আজ ক্যারিয়ারে অন্যতম বাজে খেলা খেলেছি। পুরো দলের জন্য বিষয়টা কঠিন। কারন আমরা জয়ী হতেই মাঠে নামি, আমাদের লক্ষ্য শুধুমাত্র জয়। যে ধরনের পরিস্থিতির মোকাবেলা আমরা করছি তা থেকে ফিরে আসার সবচেয়ে ভাল সুযোগ ছিল আজকের ম্যাচটি। আমাদের এই কঠিন পরিস্থিতিতে সবাইকে একত্রিত থাকতে হবে, ভুল থেকে শিক্ষা নিতে হবে।’
৩৭ বছরের মধ্যে এই প্রথমবারের মত মৌসুমের প্রথম ছয় ম্যাচের চারটিতেই পরাজিত হলো ইউনাইটেড।
মেয়াদের প্রথম বছরেই ইউনাইটেডকে আবারো চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ফিরিয়ে আনার পাশাপাশি ছয় বছরের খরা কাটিয়ে লিগ কাপ উপহার দিয়েছেন টেন হাগ। কিন্তু সব ধরনের প্রতিযোগিতা মিলিয়ে শেষ ১২ এ্যাওয়ে ম্যাচের আটটিতেই পরাজিত হয়ে ইউনাইটেড রয়েছে তোপের মুখে। গত সপ্তাহের শেষে ব্রাইটনের বিপক্ষে ওল্ড ট্রাফোর্ডে ৩-১ গোলে বিধ্বস্ত হবার পর টেন হাগ পুরো দলকে ফিরে আসার আহবান জানিয়েছিলেন। কিন্তু ওনানার ভুলের পর দুই গোল দেবার সেকেন্ডের মধ্যে আবারো গোল হজম করার বিষয়টি মেনে নিতে পারছেন না সাবেক এই আয়াক্স বস। ৩২ মিনিটে জামাল মুসিয়ালা সহজেই ইউনাইটেড রক্ষনভাগকে ফাঁকি দিয়ে বল বাড়িয়ে দেন সার্জি গ্যানাব্রির কাছে। ব্যবধান দ্বিগুন করতে কোন ভুল করেননি গ্যানাব্রি। রাসমাস হোলান্ডের ক্লাবের হয়ে প্রথম গোল ছিল টেন হাগের জন্য কালকের ম্যাচের একমাত্র ইতিবাচক দিক। ক্রিস্টিয়ান এরিকসেনের হ্যান্ডবলে প্রাপ্ত পেনাল্টি থেকে ৫৩ মিনিটে গোল করে বায়ার্নকে ৩-১ ব্যবধানে এগিয়ে দেন হ্যারি কেন। বায়ার্ন তাদের স্কোরলাইন আরো সমৃদ্ধ করতে পারতো। কিন্তু তাদের দুটি প্রচেষ্টা বারে লেগে ফেরত আসলে ব্যবধান বাড়ানো সম্ভব হয়নি। ৮৮ মিনিটে কাসেমিরোর গোলে ইউনাইটেড আবারো লড়াইয়ে ফেরার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। কিন্তু তিন মিনিটের মধ্যে জসুয়া কিমিচের সহায়তায় মাথিস টেলের গোলে বায়ার্নের জয় সময়ের ব্যপার হয়ে দাঁড়ায়। পোস্টের কাছ থেকে তার শটটি ধরার সাধ্য ছিলনা ওনানার। ম্যাচের শেষ আক্রমন থেকে ক্যাসেমিরোর হেডে ইউনাইটেড পরাজয়ের ব্যবধান কমালেও শেষ পর্যন্ত হার এড়াতে পারেনি।
ইউনাইটেড বস বলেছেন, ‘বায়ার্নে এসে যখন তুমি তিন গোল করবে তখন অন্তত এক পয়েন্ট পাওয়া উচিৎ ছিল। প্রথম ২৫ মিনিটে আমাদের গোল করা উচিৎ ছিল। যে গোলগুলো আমরা হজম করেছি সেগুলো হওয়ার কথা ছিলনা। এটা শুধুমাত্র একটি ভুল নয়। সকলেই এখানে দায়ী।’