শিরোনাম
বার্সেলোনা, ২ অক্টোবর ২০২৩ (বাসস/এএফপি) : রিয়াল মাদ্রিদ কোচ কার্লো আনচেলত্তি মনের মধ্যে ক্ষোভ পুষে রাখার মানুষ নন। নাহলে ২০১৫ সালে লস ব্ল্যাঙ্কোস প্রধান ফ্লোরেন্তিনো পেরেজের দ্বারা বাজেভাবে বরখাস্ত হওয়া সত্তেও আবারো স্প্যানিশ রাজধানীতে তিনি ফিরে আসতেন না।
যদিও ৬৪ বছর বয়সী এই অভিজ্ঞ ইতালিয়ান কাল যখন নাপোলিতে ফিরছেন তখন আদৌ কিছু প্রমান করতে চাইবেন কিনা তা হয়তো সময়ই বলে দিবে। আগামীকাল দিয়েগো আরমান্ডো ম্যারাডোনা স্টেডিয়ামে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে নিজেদের দ্বিতীয় গ্রুপ পর্বের ম্যাচে স্বাগতিক নাপোলির মুখোমুখি হবে রিয়াল মাদ্রিদ। ২০১৯ সালের এই ক্লাব থেকেই সভাপতি অরেলিও ডি লরেনটিস ছাঁটাই করেছিলেন আনচেলত্তিকে। অথচ এর মাত্র ঘন্টখানেক আগে জেঙ্ককে ৪-০ গোলে বিধ্বস্ত করে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে নাপোলিকে নক আউট পর্ব উপহার দিয়েছিলেন আনচেলত্তি। ঐ সময় সিরি-এ লিগে নাপোলি সপ্তম স্থান লাভ করেছিল। গত মৌসুমে ৩৩ বছর পর প্রথমবারের মত সিরি-এ লিগ শিরোপা জয় করার পর ডি লরেনটিস স্বীকার করেছিলেন চার বছর আগে তার সিদ্ধান্ত যথার্থ ছিল।
মাত্র দেড় বছর নাপোলিতে কোচ হিসেবে কাজ করেছেন আনচেলত্তি। তার অধীনে নাপোলি ২০১৮-১৯ মৌসুমে লিগে দ্বিতীয় স্থান পেয়েছিল। কিন্তু পরের বছরই তার বিদায় নিশ্চিত হয়।
পরের বছর আনচেলত্তি এভারটনের দায়িত্ব পান। সেখানেও কাটিয়েছেন দুই বছর। কিন্তু নাপোলির চাকরিচ্যুত হবার পর আনচেলত্তিকে নিয়ে সমালোচনা কম হয়নি। ড্রেসিং রুম টেনশন ও ডি লরেনটিসের সাথে বিভিন্ন বিষয়ে মতবিরোধই তার বিদায় তরান্বিত করেছিল। সভাপতি খুব ভালমতই বুঝে গিয়েছিলেন নাপোলিকে পরিচালনা করার মত পরিকল্পনা আনচেলত্তির মধ্যে নেই।
কিন্তু ২০২১ সালে আবারো মাদ্রিদে ফিরে আসার মাধ্যমে আনচেলত্তি পুনরায় নিজেকে এলিট পর্যায়ের কোচ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন। ২০২২ সালে তার অধীনে মাদ্রিদ চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপা জয় করে। কোচ হিসেবে আনচেলত্তির এটি চতুর্থ চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপা ছিল, যা কিনা যেকোন কোচের জন্য একটি রেকর্ড। একইসাথে লা লিগার শিরোপাও ঘরে তুলে রিয়াল।
জিরোনার বিপক্ষে রোববার ৩-০ গোলের জয়ের মাধ্যমে লা লিগার শীর্ষ দল হিসেবেই ইতালিতে খেলতে যাচ্ছে মাদ্রিদ। গত ২৪ সেপ্টেম্বর মেট্রোপলিটানোতে মাদ্রিদ ডার্বিতে এ্যাথলেটিকোর বিপক্ষে ৩-১ গোলের পরাজয়ে আনচেলত্তির কৌশল সমালোচনার মুখে পড়ে। যদি পরের ম্যাচে সামান্য কিছু পরিবর্তন করে দল সাজিয়ে সফল হন আনচেলত্তি। ঐ ম্যাচে জয়ের পর আনচেলত্তি বলেছেন, ‘জিরোনার মাঠে জয়ের অর্থ হচ্ছে আমরা ভাল ফুটবল খেলছি। আমি এখানে রক্ষনভাগকে কৃতিত্ব দিতে চাই, আজ তারা দুর্দান্ত খেলেছে।’
অপেক্ষাকৃত বেশ আগ্রাসী ফ্র্যান গার্সিয়ার জায়গায় লেফট-ব্যাক এডুয়ার্ডো কানভিনগাকে খেলিয়েছেন আনচেলত্তি। ভিনিসিয়াস জুনিয়রের উপর চাপ কমাতে তাকে সবদিক থেকে সহযোগিতা করেছেন জুড বেলিংহাম। ইতোমধ্যেই এবারের মৌসুমে সব ধরনের প্রতিযোগিতায় সাত গোল করা ছাড়াও দুটি এ্যাসিস্ট করেছেন বেলিংহাম। তাকে মূলত নাম্বার ১০’র ভূমিকায় বেশী খেলতে দেখা যাচ্ছে। করিম বেনজেমার বিদায়ের পর আনচেলত্তির ইচ্ছাতেই বেলিংহামকে দলে ভিড়িয়েছে রিয়াল, আর তার সুফলও পাচ্ছে। এখন পর্যন্ত স্প্যানিশ লিগে সর্বোচ্চ গোল করেছেন এই ইংলিশ মিডফিল্ডার।
আনচেলত্তির পরিকল্পনা ও মাদ্রিদের বর্তমান দল, উভয়ের জন্য নাপোলি সফর আরো একটি কঠিন চ্যালেঞ্জ হয়েই আসছে। নাপোলির নাইজেরিয়ান স্ট্রাইকার ভিক্টর ওশিমেহ দুর্দান্ত ফর্মে রয়েছেন। তাকে আটকানোর জন্য মাদ্রিদকে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
লস ব্ল্যাঙ্কোস দলে থাকছেন না ইনজুরিতে থাকা ডিফেন্ডার ডেভিড আলবা। এ কারনে সেন্ট্রাল ডিফেন্সে এন্টোনিও রুডিগার ও নাচো ফার্নান্দেজকে দেখা যেতে পারে।
নাপোলি কোচ রুডি গার্সিয়াও এই ম্যাচের জন্য মুখিয়ে আছেন। ২০১৬ সালে রোমার কোচ হিসেবে মাদ্রিদের মোকাবেলা করার কথা ছিল তার। কিন্তু শেষ ১৬’র ঐ লড়াইয়ের আগেই তিনি ক্লাব থেকে ছাঁটাই হয়েছিলেন।