শিরোনাম
ঢাকা, ২৪ নভেম্বর ২০২৩ (বাসস) : ২০২৮ সালের অলিম্পিক গেমসে পদক জয়ের লক্ষ্যে একটি রোডম্যাপ তৈরি করেছে বাংলাদেশ জিমন্যাস্টিকস ফেডারেশন (বিজিএফ)। সভাপতি শেখ বশির আহমেদ মামুনের দক্ষ নেতৃত্বে এই স্বপ্ন বাস্তবায়নে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে ফেডারেশন।
যার মধ্যে প্রথম পদক্ষেপটি ছিল আন্তর্জাতিক জিমন্যাস্টিকস ফেডারেশনের (এফআইজি) প্রতিনিধিদের বাংলাদেশে তাদের কার্যনির্বাহী সভা করার জন্য নিয়ে আসা। এফআইজি সাধারণত তাদের সদস্য রাস্ট্রে কার্যনির্বাহী সভা করে থাকে। তবে ফেডারেশনের ইতিহাসে প্রথম তারা সদস্য নয় এমন দেশে তাদের সভা করেছে। আর সেটি সম্ভব হয়েছে শুধুমাত্র বশির আহমেদ মামুনের দূরদৃষ্টিসম্পন্ন প্রচেস্টায়। নিজের সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের মাধ্যমে তিনি দেশের জিমন্যাস্টিকসকেও পৌঁছে দিয়েছেন অনন্য উচ্চতায়।
রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে দু’দিনের সভা শেষে এফআইজি সভাপতি মরিনারি ওয়াতানাবে বলেন, ‘বাংলাদেশে সভা করার এই উদ্যোগের নেপথ্যে ছিল তার (শেখ বশির আহমেদ মামুন)আন্তরিক প্রচেস্টা।’
কার্য নির্বাহী কমিটির সভা শেষে আজ বিজিএফের এক উন্নয়ন সভায়ও উপস্থিতি ছিলেন এফআইজি’র সভাপতি। আন্তর্জাতিক ফেডারেশনের নির্বাহী কমিটির প্রায় সব সদস্যই ওই সভায় উপস্থিত ছিলেন। এসময় তারা বাংলাদেশের প্রতি আকুণ্ঠ সমর্থন ব্যক্ত করেন। যেটি অবশ্য আগে থেকেই আশা করেছিলেন বশির আহমেদ।
ওয়াতানাবে আরো বলেন,‘ বাংলাদেশ যে প্রতিভাবান জিমন্যাস্ট তৈরি করেছে, তাতে আমি বিস্মিত। বৃহত্তর সাফল্য অর্জনের লক্ষ্যে তাদের অগ্রযাত্রা আমাকে খুশি করেছে। লক্ষ্য অর্জনে অবশ্যই আমরা তাদের প্রতি সমর্থনের হাত প্রসারিত করব। আমি বিশ্বাস করি তারা ২০২৮ সালের অলিম্পিক গেমসে অন্তত একটি পদক অর্জন করতে পারবে।’
কার্যনির্বাহী কমিটির গুরুত্বপূর্ণ এই বৈঠকে বিশ্ব জিমন্যাস্টিকসের শীর্ষ নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন এশিয়ান জিমন্যাস্টিকস ইউনিয়নের(এজিইউ) প্রেসিডেন্ট কাতারের আব্দুলরহমান বেন সাদ আলশাত্রি, আফ্রিকান জিমন্যাস্টিকস ইউনিয়নের (ইউএজি) পেসিডেন্ট মিশরের এহাব এসাইউ, ইউরোপিয়ান জিমন্যাস্টিকসের (ইজি) প্রেসিডেন্ট আজারবাইজানের ফরিদ গাঢিবভ, প্যান আমেরিকান জিমন্যাস্টিকস ইউনিয়নের (পিএজিইউ) প্রতিনিধি মেক্সিকোর নাওমি চিকো ভ্যালেনজো আওকি, ওশেনিয়া জিমন্যাস্টিকসের (ওজি) প্রসিডেন্ট নিউজিল্যান্ডের মব্রে এফসিজি এফজিএনজেড ও ২৭টি দেশের জিমন্যাস্টিকসের শীর্ষ কর্মকর্তাগণ।
এফআইজি সভাপতি বলেন,‘ কোন কিছু আকাশ থেকে পড়বেনা। লক্ষ্য অর্জনের জন্য আপনাদেরকেই কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। আমরা আপনাকে অবকাঠামোগত সুবিধা দিতে পারবনা। কারণ এটি সরকার এবং ফেডারেশনের দায়িত্ব। তবে আমরা আপনাদের প্রশিক্ষণের সুবিধা এবং এই সেক্টরে উন্নতির জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ দিতে পারি।
আমি জানি মি: মামুন একজন দূরদর্শী মানুষ। তিনি কিছু চৌকশ পরিকল্পনা নিয়ে এসেছেন। ইতিমধ্যে আমাদের কাছে এটি প্রকাশ করেছেন এবং আমরা সবাই একমত যে, বাংলাদেশ সঠিক পথে রয়েছে। তাই আমরা তাদের সেই সুযোগ-সুবিধা দেব যা তাদের জিমন্যাস্টদের এই সেক্টরে উন্নতির জন্য প্রয়োজন।’
খেলাধুলার যেকোনো ডিসিপ্লিনের সাফল্য সাধারণত নির্ভর করে এর মৌলিক ভিত্তি কতটা শক্তিশালী তার উপর। আর তাই স্কুল পর্যায়ে জিমন্যাস্টিকস চালু করার ওপর জোর দিয়েছেন বিজিএফ সভাপতি বশির আহমেদ মামুম।
তিনি বলেন,‘ স্কুল পর্যায়ে (জিমন্যাস্টিকস) চালু করার জন্য ইতিমধ্যে আমি শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। আমি চাই খেলোয়াড়রা তৃণমুল পর্যায় থেকে প্রস্তুত হোক, যাতে আমরা আমাদের পাইপলাইনকে শক্তিশালী করতে পারি।’
স্কুল পর্যায় ছাড়াও বর্তমানে পরিকল্পিত রূপরেখার উপর জোর দিয়েছেন বিজিএফ সভাপতি, যেটির উপর তাদের উচ্ছাশা রয়েছে। মামুন বলেন,‘ এখানে এফআইজি সভার আয়েজনটি ছিল আমাদের জন্য বড় এক সাফল্য। বৈঠক ছাড়াও তারা আমাদের জিমন্যাস্টিকসের অবস্থা দেখতে পেরেছে। ব্যস্ত সুচির কারণে আমরা তাদেরকে বিকেএসপিতে নিতে পারছি না। তবে অনলাইনে আমরা তাদেরেক বিকেএসপির বর্তমান সুযোগসুবিধাগুলো উপস্থাপন করেছি।
তারা আমাদের লক্ষ্য ও পরিকল্পনা দেখে সন্তুষ্ট। কিছু সদস্য দেশ আমাদের প্রতি তাদের সমর্থন দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। যেটি আমাদের দক্ষতা বাড়াতে কাজে লাগবে। যেহেতু আমরা ২০২৮ সালের অলিম্পিক গেমসে পদক পাওয়ার লক্ষ্যের দিকে অগ্রসর হতে চাই, এতে তারা তাদের সমর্থন দেবে।
প্রশিক্ষণের জন্য আমরা জিমন্যাস্ট, কোচ এবং বিচারকসহ ১৫ সদস্যের একটি দল ৫ ডিসেম্বর কোরিয়া পাঠাব। এরপর মিশর ও আজারবাইজানেও আমরা দল পাঠাব। তারা আমাদের সহায়তা করবে। দক্ষতা বাড়ানোর জন্য আমাদের অনলাইন কোর্স এবং অনলাইন প্রশিক্ষণও থাকবে। আশা করি আমরা আমাদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হব।’