শিরোনাম
ঢাকা, ৫ ডিসেম্বর ২০২৩ (বাসস) : নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথমবারের মত টেস্ট সিরিজ জয়ের লক্ষ্য নিয়ে আগামীকাল মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট খেলতে নামছে স্বাগতিক বাংলাদেশ। ম্যাচটি শুরু হবে সকাল ৯টা ৩০ মিনিটে।
সিলেটে প্রথম টেস্ট ১৫০ রানে জিতে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ম্যাচে জয় বা ড্র করতে পারলেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং জিম্বাবুয়ে ছাড়া অন্য কোন দলের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো টেস্ট জয়ের স্বাদ নিবে টাইগাররা।
নিয়মিত অধিনায়ক সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল, তাসকিন আহমেদ, লিটন দাস ও এবাদত হোসেনের মত গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়দের ছাড়াই প্রথম টেস্টে জয় পায় বাংলাদেশ।
ঘরের মাঠে বড় দলের বিপক্ষে জয় অবশ্য বাংলাদেশের জন্য নতুন কিছু নয়। কিন্তু অস্ট্রেলিয়া এবং ইংল্যান্ডের বিপক্ষে যেভাবে জিতেছিলো টাইগাররা, এবারের জয়টি তার চেয়ে ভালো উইকেটে খেলে পেয়েছে। যা বাংলাদেশ দলের আত্মবিশ^াস কয়েকগুন বাড়িয়ে দিয়েছে।
সিলেটের উইকেট স্পিন সহায়ক হলেও মিরপুরের মতো বেশি টার্ন ছিল না। এছাড়াও বাউন্স ছিল, একই সাথে উইকেট থেকে সুবিধাও পেয়েছে ব্যাটাররা। কিন্তু মিরপুরের উইকেট হবে সম্পূর্ণ ভিন্ন। যদি বেশি টার্ন না থাকে, তাহলে বাউন্সও হবে না এবং ধীর প্রকৃতির উইকেট হবে। ফলে ব্যাটাররা কঠিন পরীক্ষার মুখে পড়বে বলে ধারনা করা হচ্ছে।
যা-ই হোক না কেন, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম টেস্টে জয় পাওয়ায় আয়ারল্যান্ড, আফাগানিস্তানের পর ঘরের মাঠে এ বছর টানা তৃতীয় সিরিজ জয়ে চোখ টাইগারদের।
বাংলাদেশের প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে বলেন, ‘সিলেটে আমরা সত্যিই ভালো ক্রিকেট খেলেছি। আমরা পুরো পাঁচ দিন সত্যিই ভাল প্রতিন্দ্বন্দিতা করেছি। আমাদের শক্তি ও সিলেটের কন্ডিশন অনুযায়ী দলীয় সমন্বয় ঠিক করা হয়েছিলো।’
তিনি আরও বলেন, ‘মিরপুরের উইকেট মাঝেমধ্যে বুঝা কঠিন। এমনকি কয়েকটি সেশন না খেললে বোঝা যায় না। এই উইকেটে অনেক বেশি খেলা হয়। আমার মনে হয় না বিশ্ব ক্রিকেটে আর কোন ভেন্যুতে এত বেশি খেলা হয়। এ কারণেই এখানকাকার উইকেট সম্পর্কে স্পস্ট ধারনা পাওয়া কঠিন। আমরা চেষ্টা করবো দলে খুব বেশি পরিবর্তন না করতে।’
প্রথম ম্যাচ জিতে বিশ^ টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের তৃতীয় চক্রে যাত্রাটাও দারুন করেছে বাংলাদেশ। আগের দু’টি চক্রে মাত্র একটি জয় পেয়েছিলো তারা এবং কখনো জয় দিয়ে আসর শুরু করতে পারেনি টাইগাররা।
এখন সুবিধাজনক অবস্থানে থাকার সুযোগ পেয়েছে বাংলাদেশ। ঘরের মাঠে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ম্যাচ জয়ই এখন প্রধান লক্ষ্য বাংলাদেশের। সেটি করতে পারলে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ জয়ে বাড়তি আত্মবিশ^াস পাবে টাইগাররা।
হাথুরুসিংহে বলেন, ‘বাস্তবিক লক্ষ্য (টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে) হবে ঘরের মাঠে সবগুলো ম্যাচ জেতার চেষ্টা করা। আমার মতে, আমরা এটি করতে পারবো। সিরিজ শুরুর আগেও আমি বলেছি-আমাদের লক্ষ্য ঘরের মাঠে ভালো খেলা। এরপর বাইরে গিয়ে লড়াই করা।’
তিনি আরও বলেন, ‘ভিন্ন কন্ডিশনে লড়াই করার জন্য আমাদের ভালো পেস বোলার আছে। আমাদের তরুণ ক্রিকেটাররা এই মুহূর্তে যে কোন কন্ডিশনে ভালো খেলার সামর্থ্য রাখে। আমাদের সেভাবে তৈরি হতে হবে। ডিউক বল ব্যবহার ও উইকেটে ঘাস রেখে খেলার জন্য ভালো উদ্যোগ নিয়েছে বোর্ড। ভালো পেসার এবং পেস বোলিংয়ের বিপক্ষে ভালো খেলার মতো ব্যাটার তৈরিতে এসব সহায়ক ভ’মিকা রাখে।’
টেস্ট ফরম্যাটে বাংলাদেশের রেকর্ড শোচনীয়। তবে দলের অগ্রগতি দেখে মনে হচ্ছে খুব শীঘ্রই এ থেকে বেড়িয়ে আসবে দল। এখন পর্যন্ত ১৩৯টি টেস্ট ম্যাচ খেলে ১৯টিতে জয়, ১০২টিতে হার ও ১৮টি ড্র করেছে বাংলাদেশ।
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ১৮টি ম্যাচ খেলে মাত্র ২টিতে জয়, ১৩টিতে হার এবং ৩টিতে ড্র করেছে বাংলাদেশ। ওয়েস্ট এবং জিম্বাবুয়ে বাদে, শুধুমাত্র নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দু’টি টেস্ট জিতেছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ যখন সিরিজ জয়ের স্বপ্ন দেখছে, তখন সিরিজ হার এড়াতে মরিয়া প্রথম টেস্ট হেরে ব্যাকফুটে থাকা নিউজিল্যান্ড।
নিউজিল্যান্ডের অধিনায় টিম সাউদি বলেন, ‘আবারও, স্পিন সহায়ক কন্ডিশনের প্রত্যাশা করছি আমরা। কিন্তু গত ম্যাচের পর আমরা এসব নিয়ে আলোচনা করেছি- কিভাবে বোলিং গ্রুপ বেশি সময় ধারাবাহিক হতে পারে। এরপর অবশ্যই ব্যাটিংয়ে বড় জুটির বিষয়টি থাকছে। গত দু’দিন আমরা ভালো অনুশীলন করেছি, আমরা আরেকটি টেস্ট ম্যাচ খেলার অপেক্ষায় আছি।
বাংলাদেশ দল : নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক), মাহমুদুল হাসান জয়, জাকির হাসান, সাদমান ইসলাম, মোমিনুল হক, মুশফিকুর রহিম, নুরুল হাসান সোহান, মেহেদি হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, নাঈম হাসান, খালেদ আহমেদ, শরিফুল ইসলাম, হাসান মাহমুদ, শাহাদাত হোসেন দিপু ও হাসান মুরাদ।
নিউজিল্যান্ড দল : টিম সাউদি (অধিনায়ক), টম ব্লাডেল (উইকেটরক্ষক), ডেভন কনওয়ে, কাইল জেমিসন, টম লাথাম, ড্যারিল মিচেল, হেনরি নিকোলস, আজাজ প্যাটেল, গ্লেন ফিলিপস, রাচিন রবীন্দ্র, মিচেল স্যান্টনার, ইশ সোধি, কেন উইলিয়ামসন, উইল ইয়ং ও নিল ওয়াগনার।