শিরোনাম
ডর্টমুন্ড (জার্মানী), ১৪ ডিসেম্বর ২০২৩ (বাসস/এএফপি) : বরুসিয়া ডর্টমুন্ডের সাথে বুধবার গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে ১-১ গোলে ড্র করে পিএসজি চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোল নিশ্চিত করেছে।
২০১১ সালের পর কাতারি মালিক ক্লাবের দায়িত্ব নেবার পর এই প্রথমবারের মত চ্যাম্পিয়ন্স লিগের গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায়ের শঙ্কায় পড়েছিল পিএসজি। কিন্তু কাল ডর্টমুন্ডের সিগন্যাল ইডুনা পার্কে পিছিয়ে পড়েও শেষ পর্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এক পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়ে প্যারিসের জায়ান্টরা। এই ড্রয়ে গ্রুপ-এফ’র রানার্স-আপ হিসেবে এসি মিলানকে গোল ব্যবধানে পিছনে ফেলে নক আউট পর্বের টিকেট পেয়েছে পিএসজি। তিন পয়েন্ট এগিয়ে গ্রুপের শীর্ষস্থান লাভ করেছে ডর্টমুন্ড। তলানির দল হিসেবে গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নিয়েছে প্রিমিয়ার লিগের ক্লাব নিউক্যাসল।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে করিম আদেইয়েমির গোলে এগিয়ে যায় জার্মান জায়ান্টরা। কিন্তু ৫৬ মিনিটে টিনএজার ওয়ারেন জাইরে-এমেরি পিএসজির হয়ে সমতা ফেরান। এক পয়েন্ট নিশ্চিত হবার পাশাপাশি টানা ১২ মৌসুম চ্যাম্পিয়ন্স লিগের নক আউট পর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জন করলো পিএসজি। কিলিয়ান এমবাপ্পে ম্যাচের শেষভাগে বল জালে জড়িয়েছিলেন। কিন্তু ভিএআর অল্পের জন্য ফরাসি এই স্ট্রাইকারের পজিশন অফসাইড ছিল বলে মত দেয়।
ম্যাচ শেষে গোলদাতা জাইরে-এমেরি ব্রডকাস্টার চ্যানেল প্লাসকে বলেছেন, ‘আমরা খুশী। কিন্তু এর থেকে ভাল করার সুযোগ আমাদের ছিল। আমরা ভাল খেলেছি, কিন্তু ফুটবলে সব দিন একরকম যায়না। কোন কোন সময় বল জালে প্রবেশ করতে চায়না।’
এই ম্যাচে এটাই প্রমানিত হয়েছে লুইস এনরিকের দলকে ইউরোপীয়ান আসরে ভাল করতে হলে অনেক জায়গায় উন্নতির প্রয়োজন রয়েছে। পিএসজি কোচ এনরিকে বলেছেন, ‘আমরা এখনো বেঁচে আছি। পরের রাউন্ডে কোন দলই আমাদের বিরুদ্ধে খেলার আশা করেনা।’
গ্রুপের শীর্ষস্থান পাওয়া ডর্টমুন্ড ফেবারিট ম্যানচেস্টার সিটি, রিয়াল মাদ্রিদের মত দলগুলোকে হয়তোবা পরের রাউন্ডে এড়াতে পারবে। আগামী সোমবার নক আউট পর্বের ড্র অনুষ্ঠিত হবে।
পিএসজি অধিনায়ক মারকুইনহোস বলেছেন, ‘আমরা ভালভাবে শেষ করার চেয়ে এখনো অনেক দুরে রয়েছি। আমাদের আরো ভালভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে। কারন এখনো বড় দলগুলোর সাথে খেলা বাকি রয়েছে।’
ছয় মৌসুমে এনিয়ে পঞ্চমবারের মত নক আউট পর্বে খেলছে ডর্টমুন্ড। এর মধ্যে ২০১৭ সালে একবারই কোয়ার্টার ফাইনালে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছিল।
ডর্টমুন্ড বস এডিন টারজিক বলেছেন, ‘অবশ্যই প্যারিসের মত দলের বিপক্ষে সুযোগ দেবার কোন অবকাশ নেই। তারা যেকোন ভাবেই সুযোগ তৈরী করে নিবে। দিনের শেষে গ্রুপের শীর্ষস্থান পেতে আমাদের কঠোর পরিশ্রম করতে হয়েছে।’
উভয় দলই বেশ কিছু সুযোগ হাতছাড়া করায় প্রথমার্ধে কেউই এগিয়ে যেতে পারেনি। পরাজয় এড়াতে পারলে গ্রুপের প্রথম স্থান নিশ্চিত হবে, এমন সমীকরণ মাথায় নিয়ে মাঠে নেমেছিল স্বাগতিক ডর্টমুন্ড। তারই ধারাবাহিকতায় স্ট্রাইকাররা উজ্জীবিত হয়েই মাঠে নেমেছিল। কিন্তু পিএসজিও ছেড়ে কথা বলেনি। তাদের গতিময় স্ট্রাইকাররা প্রায়ই ডর্টমুন্ডের জন্য বিপদের কারন হয়ে দাঁড়িয়েছিল। রিউস ও মরিয়াস উল্ফ ডর্টমুন্ডের দুটি সুযোগ নষ্ট করেন। ২৫ মিনিটে লি ক্যাং-ইন পিএসজিকে কোন সুখবর দিতে পারেননি। পরের মিনিটে এমবাপ্পে আরো সহজ সুযোগ নষ্ট করেন। ২০১৮ বিশ্বকাপ জয়ী এই তারকা ডর্টমুন্ডের গোলরক্ষক গ্রিগর কোবেলকে পরাস্ত করলেও নিকলাস সুয়েলে লাইনের উপর থেকে ক্লিয়ার করেন। পিএসজি উইঙ্গার ব্র্যাডীল বারকোলার কার্লিং শট পোস্টে লেগে ফেরত আসে। রানডাল কোলো মুয়ানির শট পোস্টের বাইরে দিয়ে চলে যায়। এরপর ডর্টমুন্ড বেশ কিছু সহজ সুযোগ নষ্ট করে। রিউসের ড্রাইভ কোনমতে রুখে দেন সফরকারী গোলরক্ষক গিয়ানলুইগি ডোনারুমা। ৫১ মিনিটে অবশ্য আর শেষ রক্ষা হয়নি। আদেইয়েমির দারুন এক ফিনিশিংয়ে এগিয়ে যায় ডর্টমুন্ড। পিএসজি ফরোয়ার্ড কোলো মুয়ানিকে হতাশ করেন কোবেল। বিদায়ের শঙ্কায় পড়া পিএসজিকে অবশ্য সমতায় ফিরতে খুব বেশী দেরী করতে হয়নি। বামদিক থেকে এমবাপ্পের পাসে জাইরে-এমেরির ডিফ্লেকটেড শটে ৫৬ মিনিটে সমতায় ফিরে পিএসজি। ম্যাচ শেষের ১০ মিনিট আগে এমবাপ্পে বল জালে জড়িয়েছিলেন। কিন্তু ভিএআর অফসাইডের কারনে তা বাতিল করে দেয়।
এই এক পয়েন্টই পিএসজরি নক আউট পর্বের টিকেট পেতে যথেষ্ট ছিল।