শিরোনাম
ঢাকা, ৩০ ডিসেম্বর, ২০২৩ (বাসস) : সাফল্য-ব্যর্থতায় মোড়ানো একটি বছর পার করেছে বাংলাদেশের ক্রিকেট। শেষ দিকে ভাল করলেও চলতি বছরটি সাফল্যে রঙীন করার সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া করে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। ওয়ানডে বিশ^কাপে টাইগারদের ব্যর্থতা ২০২৩ সালে হতাশ করেছে ক্রিকেটপ্রেমিদের। বিশ্বকাপের ভরাডুবি, দেশের সবচেয়ে বড় দুই তারকা ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান এবং তামিম ইকবালের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেশের ক্রিকেটকে অনেকটাই লজ্জায় ফেলেছে। ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় ইভেন্ট ওয়ানডে বিশ^কাপে প্রথমবারের মতো সেমিফাইনালে খেলার লক্ষ্য পূরণে ব্যর্থ হওয়া টাইগাররা অষ্টমস্থানে থেকে আসর শেষ করায় কোন মতে ২০২৫ সালে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলার যোগ্যতা অর্জন করতে পেরেছে । বিশ^কাপে মাত্র ২টি ম্যাচ জিততে পেরেছে টাইগাররা। ২০০৩ সালের পর বিশ্বকাপে সবচেয়ে বাজে ফল সাকিববাহিনীর। বড় আসরে ব্যর্থতার পরও, সঠিক পথেই ছিলো দেশের ক্রিকেট। কারন বছরের শেষ দিকে নিউজিল্যান্ডের মাঠে প্রথমবারের মত ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টি ম্যাচ জয়ের নজির গড়ে টাইগাররা।
টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশ :
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৩ সালে টেস্টে ফরম্যাটে বলার মত সাফল্য পেয়েছে বাংলাদেশ। চার ম্যাচের মধ্যে তিনটিতেই জিতেছে তারা। এরমধ্যে বড় দল নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেও জয় পেয়েছে টাইগাররা। এছাড়া আয়ারল্যান্ডকে ৭ উইকেটে হারানোর পর আফগানিস্তানকে ৫৪৬ রানের বড় ব্যবধানে হারায় তারা। আফগানদের বিপক্ষে টেস্ট ইতিহাসে তৃতীয় বড় এবং যেকোনো দলের বিপক্ষে সবচেয়ে বড় জয় টাইগারদের। মোমিনুল হকের পর দ্বিতীয় বাংলাদেশি ব্যাটার হিসেবে ঐ টেস্টের দুই ইনিংসে সেঞ্চুরি করেন নাজমুল হোসেন শান্ত। রেকর্ড জয়ের পর সিলেটে ভালো মানের উইকেটে নিউজিল্যান্ডকে ১৫০ রানে হারায় বাংলাদেশ। ঐ জয়ের পর এ বছর টেস্টে অপরাজিত থাকার সুযোগ তৈরি করে বাংলাদেশ। কিন্তু মিরপুরে নিজেদের পাতানো ফাঁদে পড়ে কিউইদের কাছে ৪ ্উইকেটে ম্যাচ হেরে যায় টাইগাররা। সিলেটের মত উইকেট না বানিয়ে মিরপুরে স্পিন বান্ধব ট্রাকে খেলতে নেমে বিপদে পড়ে বাংলাদেশ। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথমবারের মত টেস্ট সিরিজ জয়ের সুযোগ নষ্ট করে স্বাগতিকরা।
বাংলাদেশের ওয়ানডে গর্ব ধুলিসাৎ :
২০১৫ থেকে ২০২২ পর্যন্ত ওয়ানডে ফরম্যাটে মাত্র একটি সিরিজ হেরে ঘরের মাঠকে নিজেদের দুর্গে পরিণত করেছিলো বাংলাদেশ। কিন্তু ২০২৩ সালে দুর্গটি ভেঙে চুরমার হয়। যার ফলে ওয়ানডেতে বাংলাদেশের গর্ব করার মত সাফল্য কলঙ্কিত হয়। ২০২৩ সালে ঘরের মাঠে ইংল্যান্ড, আফগানিস্তান এবং নিউজিল্যান্ডের কাছে সিরিজ হারের লজ্জা পায় বাংলাদেশ। ধীর গতির উইকেট বানিয়েও প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে পারেনি টাইগাররা। অবশ্য আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে হোম ও অ্যাওয়ে, দু’জায়গাতেই সিরিজ জয়ের স্বাদ পেয়েছে বাংলাদেশ। এরমধ্যে দুঃস্বপ্নের বিশ্বকাপ অভিযান ছিলো বাংলাদেশের। তবে ওয়ানডে ফরম্যাটে যখন হতাশাজনক বছর শেষ করার পথে ছিলো বাংলাদেশ, ঠিক তখনই নিউজিল্যান্ডের কঠিন কন্ডিশনে জয়ের দেখা পায় তারা। প্রথম দুই ম্যাচ হেরে সিরিজ হাতছাড়া করার পর তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে নিউজিল্যান্ডকে ৯ উইকেটে বিধ্বস্ত করে বাংলাদেশ। নিউজিল্যান্ডকে মাত্র ৯৮ রানে গুটিয়ে প্রথমবারের মত ব্লাকক্যাপসদের আঙিনায় ওয়ানডে ম্যাচ জিতে টাইগাররা। এতে ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডের টানা ১৭ ম্যাচ অপরাজিত থাকার রেকর্ড থামিয়ে দেয় বাংলাদেশ। সব মিলিয়ে এ বছর ৩২টি ওয়ানডের মধ্যে ১১টিতে জয়, ১৮টিতে হার এবং তিনটি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয় বাংলাদেশের।
টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে খর্বশক্তির দল নয় :
২০২২ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভরাডুবির পর, সাকিব আল হাসানের চৌকস নেতৃত্বে এই ফরম্যাটে ঘুড়ে দাঁড়ায় বাংলাদেশ। ওয়ানডের মতো এই ফরম্যাটেও বাংলাদেশকে শক্তিশালী দলে পরিণত করতে বদ্ধপরিকর ছিলেন সাকিব এবং এখন পর্যন্ত নিজের কথা রাখতে পেরেছেন তিনি। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে বাংলাদেশ এখন আর দুর্বল দল নয়। এখন অবধি এ বছর ৭টি ম্যাচে অংশ নিয়ে (নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে চলমান তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ বাদে) ৬টিতে জয় ও মাত্র ১টিতে হেরেছে টাইগাররা। এরমধ্যে ঘরের মাঠে তিন ম্যাচের সিরিজে বর্তমান বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করে ইতিহাসের জন্ম দেয় বাংলাদেশ। এরপর আয়ারল্যান্ডকে ২-১ ব্যবধানে ও পুরনো শত্রু আফগানিস্তানকে দুই ম্যাচের সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করে টাইগাররা।
তামিমের অবসর ও অধিনায়কত্ব নিয়ে নাটক :
জুলাইয়ে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ চলাকালীন হঠাৎ করেই ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষনা দেন তামিম ইকবাল। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপে ২৮ ঘণ্টার মধ্যে অবসরের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে নেন তিনি। পরে জানা যায়, প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের সাথে তামিমের সম্পর্কে ফাটল ধরেছিলো। এমনকি সাকিব আল হাসানের সাথেও সম্পর্ক ভালো যাচ্ছিলো না তামিমের। তবে ইনজুরি নিয়ে উদ্বেগ থাকায় ওয়ানডে ফরম্যাটের অধিনায়কত্ব ছাড়েন তামিম। এতে তিন ফরম্যাটেরই অধিনায়ক হয়ে যান সাকিব।
তামিম বনাম সাকিব :
দেশ সেরা দুই ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান ও তামিম ইকবালের মধ্যকার অনাকাঙ্খিত ঘটনার জন্য এ বছরটি স্মরণীয় হয়ে থাকবে। বিশ্বকাপের আগে নিজের ফেসবুকে একটি ভিডিও পোস্ট করে তামিম বলেন, চারপাশের কিছু ব্যক্তির নোংরা আচরণে তিনি ক্লান্ত এবং ইনজুরি নিয়ে উদ্বেগ থাকার কারনে বিশ্বকাপে না খেলার সিদ্বান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন। তার ভিডিও পোস্টের কয়েক ঘন্টা পর, একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলের সাথে সাক্ষাৎকারে তামিমের শিশুসুলভ আচরণের জন্য ক্ষোভ প্রকাশ করেন সাকিব। যে কারণে অনেকেরই ধারনা বিশ্বকাপের ঠিক আগে দুই তারকার বিবাদে মেগা ইভেন্টে ভরাডুবি হয় বাংলাদেশের।
এশিয়ান গেমসে ব্রোঞ্জে সন্তুষ্ঠ :
চীনের হাংজুতে অনুষ্ঠিত এশিয়ান গেমসে স্বর্ণ জয়ের লক্ষ্য থাকলেও ব্রোঞ্জ পেয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে বাংলাদেশকে। জাতীয় দলে খেলা বেশিরভাগ ক্রিকেটারদের নিয়ে এশিয়ান গেমসের দল সাজানো হয়েছিলো। গ্রুপ পর্বে সহযোগী দেশগুলোর বিপক্ষে সব ম্যাচেই জয় পেয়েছিলো তারা। কিন্তু সেমিফাইনালের আসল পরীক্ষায় বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ভারতের কাছে ৯ উইকেটে হেরে যায় বাংলাদেশ। পরে পাকিস্তানকে হারিয়ে ব্রোঞ্জ জিতে বাংলাদেশ।
এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট পড়লো বাংলাদেশ
নিঃসন্দেহে ২০২৩ সালে বাংলাদেশ ক্রিকেটের বড় সাফল্য ছিল অনূর্ধ্ব-১৯ দলের এশিয়া কাপ জয়। এই সাফল্য সিনিয়রদের ওয়ানডে বিশ^কাপে ব্যর্থতাকে কিছুটা হলেও মুছে দিয়েছে। পাশাপাশি নারী দলের অগ্রগতিও চোখে পড়ার মত । অনূর্ধ্ব-১৯ দলের বেশ কিছু খেলোয়াড় নিজেদের প্রতিভা মেলে ধরতে পারায় অন্তত এটা এখন স্পস্ট যে, নিরাপদ হাতেই রয়েছে বাংলাদেশের ক্রিকেট। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) নারী দলের সুযোগ-সুবিধা বাড়ালেও সেটি পুরুষ দলের সমান হয়নি। কিন্তু এ বছর সাফল্যের দিক দিয়ে পুরুষ দলের চেয়ে অনেক এগিযে ছিলো নারীরা।
অনূর্ধ্ব-১৯ দলের এশিয়া কাপ জয় :
এবারের এশিয়া কাপে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়ে ইতিহসের জন্ম দেয় বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট দল। ফাইনালে ওপেনার আশিকুর রহমান শিবলির দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল ১৯৫ রানের বিশাল ব্যবধানে হারায় সংযুক্ত আরব আমিরাতকে। প্রথমবারের মত শিরোপা জয়ের পথে ভারত ও শ্রীলংকার মত দলকে হারায় তারা। দু’টি করে সেঞ্চুরি ও হাফ সেঞ্চুরিতে ১২৬ গড়ে টুর্নামেন্টে সর্বোচ্চ ৩৭৮ রান করেন শিবলি।
গ্রুপ পর্বে সংযুক্ত আরব আমিরাত, জাপান ও শ্রীলংকাকে হারিয়ে সেমিফাইনালে শক্তিশালী ভারতের বিপক্ষে ৪ উইকেটের জয় পায় বাংলাদেশ। গ্রুপ পর্বে শ্রীলংকা এবং জাপানকে হারায় সংযুক্ত আরব আমিরাত। সেমিফাইনালে পাকিস্তানকে হারিয়ে চমক দেখায় তারা। কিন্তু ফাইনালে আরব আমিরাতের স্বপ্ন ভেঙে চুরমার করে দেয় বাংলাদেশের তরুণ-তুর্কিরা। যারা এখন পর্যন্ত দেশকে দু’টি বড় মেগা ইভেন্টের ট্রফি জয়ের স্বাদ দিয়েছে। কিন্তু জাতীয় দল এখনও কোন ট্রফি জিততে পারেনি। এর আগে ২০২০ সালে ভারতকে হারিয়ে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জিতেছিল বাংলাদেশের যুবারা। তবে এশিয়া কাপ জয় আগামী বছর দ্বিতীয়বারের মতো দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে বাংলাদেশকে যুব বিশ্বকাপ জয়ের জন্য আত্মবিশ^াসী করেছে।
সব মিলিয়ে দ্বিপাক্ষিক সিরিজে মিশ্র সাফল্য ছিলো বাংলাদেশের যুবাদের। পাঁচ ম্যাচ সিরিজে দক্ষিণ আফ্রিকা অনূর্ধ্ব-১৯ দলকে ৩-২ ব্যবধানে হারালেও পাকিস্তাানের কাছে ৪-১ ব্যবধানে হেরে যায় বাংলাদেশ। পাশাপাশি পাকিস্তানের কাছে এক ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজও হারে তারা। ভারতের মাটিতে চার দলের টুর্নামেন্টে সাফল্যের দেখা পায়নি বাংলাদেশের তরুণরা।
সারা বছরই আলো ছড়িয়েছে নারী দল :
দারুন একটি বছর পার করেছে বাংলাদেশ নারী দল। জুলাইয়ে ঘরের মাঠে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে শক্তিশালী ভারতের সাথে ১-১এ ড্র করে নিজেদের উন্নতির ইঙ্গিত দেয় তারা। এমনকি ভারতের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে হারলেও, ১টি ম্যাচে জয় পেয়েছিলো বাংলাদেশ। সিরিজটি ২-১ ব্যবধানে হারে তারা। ঐ সিরিজে ভারতের সাথে সমান তালে লড়তে দুর্দান্ত ক্রিকেট খেলেছে বাংলাদেশ। বিশেষ করে টাই হওয়া তৃতীয় ম্যাচটি, যেই ম্যাচে সহজেই জিততে পারতো ভারত। মানসিকভাবে নিজেদের শক্তিশালী মানসিকতার প্রমান দিয়েছে বাংলাদেশ নারী দল । পরবর্তীতে এশিয়ান গেমসে ব্রোঞ্জ পদক জিতে নেয় তারা। এরপর পাকিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টি সিরিজে ২-১ ব্যবধানে জয় পায় বাংলাদেশ। কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে নারীদের পারফরমেন্সের অগ্রগতি ফুটে উঠে। প্রোটিয়াদের বিপক্ষে প্রথমবারের মত টি-টোয়েন্টি ও ওয়ানডে ম্যাচ জয়ের স্বাদ পায় তারা। টি-টোয়েন্টি সিরিজ ১-১এ ড্র করলেও ২-১ ব্যবধানে ওয়ানডে সিরিজে হারে বাংলাদেশ। তারপরও নারী ক্রিকেটারদের জন্য এটি স্মরণীয় বছরই ছিল।
দুর্দান্ত পিংকি, অসাধারন শান্ত :
সাকিব আল হাসানের অনুপস্থিতিতে অধিনায়কত্বের গুরুদায়িত্ব পাবার পর দারুণভাবে দলকে নেতৃত্ব দেন নাজমুল হোসেন শান্ত। আত্মবিশ্বাস ধরে রেখে পুরো বছরই দুর্দান্ত ফর্ম ছিলেন তিনি। ওয়ানডে এবং টেস্ট দুই ফরম্যাটে বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ছিলেন এই বাঁ-হাতি। টি-টোয়েন্টিতে তৃতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ছিলেন শান্ত। টেস্টে ৪ ম্যাচে ৫৫ গড়ে তিন সেঞ্চুরিতে ৪৪০ রান করেছেন তিনি। অল্পের জন্য এ বছর ওয়ানডে ১হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করতে পারেননি ২৭ ম্যাচে ২টি সেঞ্চুরি এবং ৮টি হাফ সেঞ্চুরিতে ৯৯২ রান করা শান্ত। ওয়ানডে ও টেস্ট মিলিয়ে শান্তর পর রান সংগ্রহের দিক দিয়ে দ্বিতীয়স্থানে আছেন মুশফিকুর রহিম। ৮ ম্যাচে ২৮২ রান নিয়ে টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ছিলেন লিটন দাস। ৭ ম্যাচে রনি তালুকদার ১৮৩ এবং ৮ ম্যাচে ১৮২ রান করেন শান্ত।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথম বাংলাদেশী নারী ক্রিকেটার হিসেবে এ বছর ভারতের বিপক্ষে তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে দারুন সেঞ্চুরিতে ১৬০ বলে ১০৭ রানের ইনিংস খেলেন ফারজানা হক পিংকি। তার সেঞ্চুরির ইনিংস খেলা ম্যাচটি শেষ পর্যন্ত টাই হয় এবং তিন ম্যাচের সিরিজ ১-১ সমতায় শেষ করে বাংলাদেশ। তবে সেখানেই থামেননি পিংকি। প্রথম নারী ক্রিকেটার হিসেবে বিদেশের মাটিতে সেঞ্চুরির করেন তিনি। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে রেকর্ড গড়া ইনিংসে ১০২ রান করেন তিনি। প্রোটিয়াদের কাছে ৮ উইকেটের হারে পিংকির রেকর্ড গড়া সেঞ্চুরিটি বৃথা যায়।
প্রথম বাংলাদেশী নারী ক্রিকেটার হিসেবে আইসিসি ওয়ানডে ব্যাটিং র্যাংকিং তালিকায় শীর্ষ ২০-এর মধ্যে প্রবেশ করেন পিংকি। বছরের শেষ সপ্তাহে আইসিসির সর্বশেষ আপডেট অনুযায়ী ১৩তম স্থানে জায়গা করে নেন তিনি।
নতুন সেনসেশন হৃদয়-তানজিম :
২০২০ সালে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জয়ী দলের সদস্য ছিলেন ব্যাটার তাওহিদ হৃদয় এবং পেসার তানজিম হাসান সাকিব। এ বছর জাতীয় দলে সুযোগ পেয়েই নিজেদের মেলে ধরেন তারা। অবশ্য মাঝে কিছুটা খারাপ সময় গেলেও ওয়ানডেতে এ বছর ২৭ ম্যাচে ৬টি হাফ-সেঞ্চুরিতে ৭২৭ রান করেন হৃদয়। বড় দলের বিপক্ষে বাংলাদেশের কিছু জয়ে দারুন অবদান রেখেছিলেন তিনি। ৮ টি-টোয়েন্টিতে ১৫৬ রান করেন এই ডান হাতি। দুই ফরম্যাটে বাংলাদেশের পক্ষে চতুর্থ সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ছিলেন হৃদয়।
নিয়মিত না হলেও, দলে সুযোগ পেলেই নিজের প্রতিভা মেলে ধরেছেন তানজিম। হতাশার এশিয়া কাপে নিজেদের শেষ ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে সান্ত¡নার জয় পায় বাংলাদেশ। এই ম্যাচে অভিষেক হওয়া তানজিম ৩২ রানে ২ উইকেট নিয়ে দলের জয়ে অবদান রাখেন। সদ্যই নিউজিল্যান্ডের মাটিতে বাংলাদেশের প্রথম ওয়ানডে জয়ের নায়ক ছিলেন এই পেসার। নিউজিল্যান্ডকে মাত্র ৯৮ রানে গুটিয়ে দিয়ে ৯ উইকেটে জয় পাওয়া ম্যাচে ১৪ রানে ৩ উইকেট নেন তানজিম। দুর্দান্ত পারফরমেন্সের জন্য ম্যাচের সেরা হন তানজিম।