শিরোনাম
লন্ডন, ১ জানুয়ারি, ২০২৪ (বাসস/এএফপি) : টানা দ্বিতীয় ম্যাচে হারের তিক্ত স্বাদ পেয়েছে আর্সেনাল। রোববার বছরের শেষ দিনে ফুলহ্যামের কাছে ২-১ গোলে পরাজিত হয়ে প্রিমিয়ার লিগে শিরোপা দৌড়ে বড় ধাক্কা খেয়েছে গানার্সরা। দিনের আরেক ম্যাচে বোর্নমাউথকে ৩-১ গোলে পরাজিত করে শীর্ষ চারের কাছাকাছি চলে এসেছে টটেনহ্যাম।
২০ বছর পর লিগের প্রথম শিরোপা জয়ের স্বপ্নে গানার্সরা চারদিনে দ্বিতীয় পরাজয়ে অনেকটা পিছিয়ে পড়েছে। এর আগে বৃহস্পতিবার ঘরের মাঠে ওয়েস্ট হ্যামের কাছে ২-০ গোলে পরাজিত হয়েছিল মিকেল আর্তেতার দল। কালকের পরাজয়কে মৌসুমের সবচেয়ে বাজে পারফরমেন্স হিসেবে আখ্যা দিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন আর্তেতা।
এই পরাজয়ে লিগ টেবিলের শীর্ষে থাকা লিভারপুলের থেকে দুই পয়েন্ট পিছিয়ে ম্যানচেস্টার সিটির সাথে সমান ৪০ পয়েন্ট নিয়ে এখনো চতুর্থ স্থানেই রয়েছে আর্সেনাল। কিন্তু লিভারপুল ও সিটির তুলনায় এক ম্যাচ বেশী খেলেছে আর্সেনাল।
কাল ম্যাচ শেষে ক্ষুব্ধ আর্তেতা বলেছেন, ‘আমরা যদি আজকের মত খেলতে থাকি তবে কিছুদিনের মধ্যে সবকিছুর থেকে হারিয়ে যাবো। আজকের ম্যাচের পারফরমেন্স মেনে নেয়া সত্যিই কঠিন ছিল। দিনটা সত্যিই হতাশার, কারন এই ম্যাচে জয় আমাদের প্রাপ্য ছিল।’
ক্রাভেন কটেজে আর্সেনালের শুরুটা ভাল হয়েছিল। ৫ মিনিটে বুকায়ো সাকার গোলে এগিয়ে যায় সফরকারীরা। ছয় ম্যাচে এটি সাকার প্রথম গোল। গ্যাব্রিয়েল মার্টিনেলির প্রথম শটটি বার্নাড লেনো রুখে দেবার পর ফিরতি বলে সাকা বল জালে জড়ান। কিন্তু শুরুর এই সুবিধাটা ধরে রাখতে পারেনি আর্সেনাল। বিপরীতে তিন ম্যাচে কোন গোল ছাড়া পরাজিত ফুলহ্যাম নিজেদের লড়াইয়ে ফিরিয়ে নিয়ে আসে। নিউক্যাসলের সাথে লাল কার্ড পাওয়া রাউল জিমিনজে তিন ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে কাল দলে ফিরেছিলেন। মেক্সিকান অভিজ্ঞ এই এ্যাটাকারের গোলে সমতায় ফিরে ফুলহ্যাম। গত চার ম্যাচে এটি জিমিনেজের চতুর্থ গোল। আর্সেনালের সাবেক উইঙ্গার উইলিয়ান বামদিকে টম কেয়ারনির কাছে বল বাড়িয়ে দেন। কেয়ারনির বিপদজনক লো ক্রসে জিমিনেজ গোল করে ফুলহ্যামকে সমতায় ফেরান।
দ্বিতীয়ার্ধে ফুলহ্যাম অপেক্ষাকৃত ভাল খেলেছে। তারই ধারাবাহিকতায় ৫৯ মিনিটে এগিয়ে যায়। কর্ণার থেকে বল ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হয় আর্সেনাল। সেই সুযোগে পোস্টের খুব কাছে থেকে ববি ডি করডোভা-রেইড ফুলহ্যামকে এগিয়ে দেন। পরবর্তীতে এই গোলেই স্বাগতিকদের জয় নিশ্চিত হয়েছে। পশ্চিম লন্ডনের বৃষ্টি¯œাত ম্যাচটিতে কেয়ারনি শট ডেভিড রায়া দুর্দান্ত দক্ষতায় রুখে না দিলে এবং ম্যাচের শেষ ভাগে আন্দ্রেস পেরেইরার ফ্রি-কিক ক্রসবারে লেগে ফেরত না আসলে জয়ের ব্যবধান হয়তো আরো বাড়াতে পারতো ফুলহ্যাম। তবে গত সপ্তাহের মত কালকের ম্যাচেও শেষ পর্যন্ত হার এড়াতে না পারা আর্সেনালের জন্য এখন শিরোপা জয় করা কিছুটা হলেও ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। প্রায় তিন সপ্তাহ পর পরবর্তী লিগ ম্যাচে ক্রিস্টাল প্যালেসের মোকাবেলা করবে আর্তেতার দল।
এদিকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে জায়গা করার ক্ষেত্রে আর মাত্র এক পয়েন্ট দুরে রয়েছে টটেনহ্যাম। আনগে পোস্তেকোগ্লুর দল ইনজুরির কারনে কিছুটা পিছিয়ে থাকরেও বোর্নমাউথকে আট ম্যাচে প্রথম পরাজয়ের স্বাদ দিতে একটুও কার্পন্য করেনি। পঞ্চম স্থানে থাকা স্পার্সরা লিভারপুলে তুলনায় মাত্র তিন পয়েন্ট পিছিয়ে রয়েছে।
২০২৪ সাল শুরুর আগে প্রিমিয়ার লিগের পয়েন্ট টেবিলের দিকে তাকালে যে কেউই বিস্ময় প্রকাশ করবে। নিকট অতীতে নতুন বছরের শুরুতে ইংলিশ লিগে এতটা প্রতিদ্বন্দ্বীতা খুব একটা দেখা যায়নি।
টটেনহ্যাম বস পোস্তেকোগ্লু বলেছেন, ‘শীর্ষ দলের থেকে আমরা তিন পয়েন্ট পিছিয়ে রয়েছি। আর এটাই এই মৌসুমে আমাদের ভিন্ন এক পজিশনে নিয়ে গেছে। আমরা প্রাথমিক লক্ষ্য পূরনে সক্ষম হয়েছি। প্রিমিয়ার লিগে সবসময়ই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করেই এগিয়ে যেতে হয়।’
ঘরের মাঠে ৯ মিনিটে পেপে সারের কোনাকুনি শটে এগিয়ে যায় স্পার্সরা। কিন্তু ইনজুরির কারনে প্রথমার্ধের মাঝামাঝিতে এই সেনেগালিন মিডফিল্ডার মাঠ ছাড়তে বাধ্য হন। আসন্ন আফ্রিকান নেশন্স কাপেও তার খেলা নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। বিরতির আগে ইন-ফর্ম ডোমিনিক সোলাঙ্কের শট বারে না লাগলে তখনই হয়তো সমতা ফেরাতে পারতো বোর্নমাউথ। ৭১ মিনিটে অধিনায়ক সন হেয়াং মিন ব্যবধান দ্বিগুন করেন। এশিয়ান কাপে দক্ষিণ কোরিয়াকে প্রতিনিধিত্ব করবেন সন, যে কারনে আগামী কয়েক সপ্তাহ তিনি টটেনহ্যামে খেলতে পারছেন না। ৮০ মিনিটে রিচার্লিসন ব্যবধান ৩-০’তে নিয়ে যান। ম্যাচ শেষের ছয় মিনিট আগে এ্যালেক্স স্কট এক গোল পরিশোধ করেন। কিন্তু চেরিসদের জন্য এই গোল শেষ পর্যন্ত সান্তনা হয়েই থেকেছে। ১৯ ম্যাচে ২৫ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের ১২তম স্থানেই রয়েছে বোর্নমাউথ।