শিরোনাম
কেপ টাউন, ২ জানুয়ারি ২০২৪ (বাসস/এএফপি) : ভারতের বিপক্ষে আগামীকাল থেকে শুরু হওয়া সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানাবেন দক্ষিণ আফ্রিকার ডিন এলগার। জয় দিয়ে এলগারের বিদায়কে স্মরণীয় করে রাখার লক্ষ্য প্রোটিয়াদের। সিরিজ হার এড়াতে শেষ টেস্টে জয় ছাড়া অন্য কিছুই ভাবছে না ভারত। কেপ টাউনে বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে শুরু হবে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট।
ভারতের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় দেওয়ার ঘোষনা আগেই দিয়েছিলেন সাবেক অধিনায়ক এলগার। সেঞ্চুরিয়ানে প্রথম টেস্টের প্রথম সেশনে নিয়মিত অধিনায়ক তেম্বা বাভুমা ইনজুরিতে ছিটকে গেলে ম্যাচের বাকী সময়ে দলকে নেতৃত্ব দেন এলগার। দ্বিতীয় টেস্টেও খেলতে পারবেন না বাভুমা। তার জায়গায় দলকে নেতৃত্ব দিবেন এলগার। ২০১৭ সালে টেস্ট অধিনায়ক হবার পর ১৭ ম্যাচে দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। তার অধীনে ৯ জয়, ৭টি হার ও ১টি ম্যাচ ড্র করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা।
ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচেও দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার সুযোগ পেয়ে উচ্ছসিত এলগার। তিনি বলেন, ‘দেশকে প্রতিনিধিত্ব করা গর্বের বিষয়। এরমধ্যে অধিনায়ক হয়ে ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ খেলতে যাচ্ছি। অনুভূতিটা আসলেই অন্যরকম। সবসময় দলের জন্য অবদান রাখতে চেষ্টা করেছি। এবারও এর কমতি হবে না। শেষ ম্যাচে নিজের সেরা পারফরমেন্স উজার করে দিতেই মাঠে নামবো।’
ভারতের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট দলের জয়ে বড় অবদান রাখেন এলগার। প্রথম ইনিংসে ১৮৫ রানের অসাধারন ইনিংস খেলেন তিনি। তার ইনিংসের উপর ভর করে সেঞ্চুরিয়ান টেস্ট ইনিংস ও ৩২ রানে জিতেছিলো দক্ষিণ আফ্রিকা।
দ্বিতীয় টেস্ট জিতে সিরিজ জয় নিশ্চিত করতে চান এলগার। তিনি বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য থাকবে ম্যাচ জয়। তাহলেই সিরিজ জিততে পারবো। ভারত ঘুড়ে দাঁড়াতে মরিয়া থাকবে, কিন্তু তাদের ছাড় দেওয়া যাবে না।’
বাভুমার সাথে দ্বিতীয় টেস্ট থেকে ছিটকে গেছেন পেসার জেরাল্ড কোয়েৎজিও। বাভুমার পরিবর্তে শেষ টেস্টের জন্য দলে নেওয়া হয়েছে ডান হাতি ব্যাটার জুবায়ের হামজাকে। দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে ৬ টেস্টে ২১২ রান করেছেন তিনি। শেষ টেস্টের একাদশে সুযোগ পেতে হলে ট্রিস্টান স্টাবসের সাথে লড়াই করতে হবে হামজাকে।
কোয়েৎজির পরিবর্তে নতুন করে কাউকে দলে নেয়নি দক্ষিণ আফ্রিকা। কারন দলে দুই পেসার লুঙ্গি এনগিদি ও ওয়াইন মুল্ডার রয়েছেন। এছাড়াও আছেন স্পিনার কেশভ মহারাজ। প্রথম টেস্টে এই তিন জনের কেউই একাদশে ছিলেন না। এদের মধ্যে যেকেউ শেষ টেস্টে খেলার সুযোগ পাবেন।
শেষ টেস্টে ভারত একাদশে পরিবর্তনের সম্ভাবনা রয়েছে। অফ-স্পিনার রবীচন্দ্রন অশি^নের পরিবর্তে একাদশে ফিরতে পারেন ইনজুরির কারনে সেঞ্চুরিয়ানে খেলতে না পারা রবীন্দ্র জাদেজা।
বোলিং লাইনে আরও একটি পরিবর্তন আনতে পারে ভারত। প্রথম টেস্টে ১ উইকেট করে শিকার করেছেন দুই পেসার শারদুল ঠাকুর ও প্রষিদ্ধ কৃষ্ণ। তাদের পরিবর্তে একাদশে সুযোগের সম্ভাবনা রয়েছে মুকেশ কুমার ও আভেশ খানের।
সেঞ্চুরিয়ানে প্রথম টেস্টে ব্যাট হাতে ব্যর্থ হয়েছেন অধিনায়ক রোহিত শর্মা, যশ^সী জয়সওয়াল, শুভমান গিল ও শ্রেয়াস আইয়ার। দ্বিতীয় টেস্টে তাদের উপরই আস্থা রাখছে ভারত। ঐ টেস্টে সেঞ্চুরি করেন লোকেশ রাহুল। প্রথম ইনিংসে ১০১ রানের লড়াকু ইনিংস খেলেন তিনি। দুই ইনিংসে বিরাট কোহলি ৩৮ ও ৭৬ রানের ইনিংস খেললেও, সেগুলো দলের কোন কাজে আসেনি।
১৯৯২ সাল থেকে দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে টেস্ট সিরিজ খেলছে ভারত। এখন পর্যন্ত একবারও সিরিজ জিততে পারেনি টিম ইন্ডিয়া। প্রথম টেস্টে হেরে এবারও সেই স্বপ্ন ধুলিসাৎ হয়েছে তাদের। তবে ২০১০ সালের মত সিরিজ সমতায় শেষ করার সুযোগ রয়েছে ভারতের। ঐ সফরে সাবেক অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনির নেতৃত্বে তিন ম্যাচের সিরিজ ১-১ সমতায় শেষ করেছিলো টিম ইন্ডিয়া।
ভারত : রোহিত শর্মা (অধিনায়ক), জসপ্রিত বুমরাহ (সহ-অধিনায়ক), শুভমান গিল, যশস্বী জয়সওয়াল, বিরাট কোহলি, শ্রেয়াস আইয়ার, কেএস ভারত, লোকেশ রাহুল (উইকেটরক্ষক), রবিচন্দ্রন অশ্বিন, আভেশ খান, রবীন্দ্র জাদেজা, শারদুল ঠাকুর, মোহম্মদ সিরাজ, মুকেশ কুমার, অভিমান্যু ঈশ্বরন ও প্রসিধ কৃষ্ণা।
দক্ষিণ আফ্রিকার : ডিন এলগার (অধিনায়ক), ডেভিড বেডিংহ্যাম, নান্দ্রে বার্গার, টনি ডি জর্জি, মার্কো জানসেন, কেশভ মহারাজ, জুবায়ের হামজা, আইডেন মার্করাম, উইয়ান মুল্ডার, লুঙ্গি এনগিদি, কিগান পিটারসেন, কাগিসো রাবাদা, ট্রিস্টান স্টাবস ও কাইল ভেরেইনি।