শিরোনাম
মিডলসব্রো (যুক্তরাজ্য), ১০ জানুয়ারি ২০২৪ (বাসস/এএফপি) : লিগ কাপে সেমিফাইনালের প্রথম লেগেই চ্যাম্পিয়নশীপ ক্লাব মিডলসব্রোর কাছে ১-০ গোলে পরাজিত হয়েছে চেলসি।
রিভার্সডেল স্টেডিয়ামে ৩৮ মিনিটে কাল হেইডেন হাকনির গোলে মরিসিও পোচেত্তিনোর দলের পরাজয় নিশ্চিত হয়। পূর্ণ শক্তির দল নিয়ে মাঠে নেমেও আরো একবার ঘরের বাইরে হারের তিক্ত স্বাদ পেল ব্লুজরা।
সব ধরনের প্রতিযোগিতায় শেষ ছয়টি এ্যাওয়ে ম্যাচের পাঁচটিতেই পরাজিত হয়েছে চেলসি। গত মৌসুম শুরুর পর এনিয়ে ২১টি এ্যাওয়ে ম্যাচে তারা পরাজিত হয়েছে যা প্রিমিয়ার লিগে যেকোন দলের জন্য সর্বোচ্চ।
আগামী ২৩ জানুয়ারি স্ট্যামফোর্ড ব্রীজে ফিরতি লেগে আবারো যখন দুই দল মুখোমুখি হবে তখন চেলসির সামনে আক্রমনাত্মক ফুটবল খেলার কোন বিকল্প থাকবে না। বিশেষ করে আর্জেন্টাইন কোচ পোচেত্তিনোর জন্য প্রথম মেয়াদে চাকরি বাঁচাতে হলে চেলসিকে জয় উপহার দিতেই হবে।
কাল ম্যাচ শেষে পোচেত্তিনো বলেছেন, ‘সার্বিক পারফরমেন্সের দিকে তাকালে দেখা যাবে আজ আমরা প্রতিপক্ষের তুলনায় ভাল খেলেছি। কিন্তু তারপরও সহজ সুযোগগুলো হাতছাড়া হয়েছে, আমরা গোল করতে পারিনি। যে কারনে ম্যাচ শেষে বলাই যায় প্রত্যাশা মাফিক আমরা খেলতে পারিনি। এবারের মৌসুমে এই ধরনের ঘটনা আরো বেশ কয়েকবার হয়েছে।’
ম্যাচ শুরুর মাত্র তিন মিনিটের মধ্যে ইনজুরির কারনে দলের সর্বোচ্চ গোলদাতা আইভরি কোস্টের স্ট্রাইকার এমানুয়েল লাটে ল্যাথকে হারিয়ে চাপে পড়েছিল মিডলসব্রো। কোচ মাইকেল ক্যারিককেও এ সময় বেশ নার্ভাস দেখাচ্ছিল। ২০ মিনিটে এ্যালেক্স বানগুরাকে উঠিয়ে নিতে বাধ্য হন ক্যারিক। কিন্তু দ্বিতীয় সারির দলটি মোটেই আত্মবিশ্বাস হারায়নি।
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সাবেক মিডফিল্ডার ক্যারিক বলেছেন, ‘এটা সত্যিই বিশেষ অর্জন। আমি জানি এটা দুই লেগের লড়াই, এখনো চেলসির ম্যাচে ফিরে আসার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু আজ ম্যাচের গুরুত্বপূর্ণ কিছু ইনজুরি সত্ত্বেও আমরা নিজেদের প্রমান করেছি। চেলসির মত দলকে পরাজিত করা সত্যিই অবিশ্বাস্য ঘটনা।’
গত ১৭ বছর যাবত চেলসির বিপক্ষে কোন সময়ই গোল করতে পারেনি মিডলসব্রো। এর আগে নয় মোকাবেলায় ব্লুজরা ২১-০ ব্যবধানে জয়ী হয়েছে।
বিরতির আট মিনিট আগে স্বাগতিকরা ডেডলক ভাঙ্গতে সক্ষম হয়। ডানদিক থেকে ইসাই জোনসের পাসে চেলসির পরিবর্তিক লেফট-ব্যাক লেখাই কোলউইল সমস্যা পড়েন। লো ক্রসের বলটিচ হাকনির কাছে আসলে পোস্টের খুব কাছে থেকে তিনি জালে জড়ান।
বিরতির আগে কোল পালমার গোলের সহজ সুযোগ নষ্ট না করলে চেলসি হয়তো তখনই সমতা ফেরাতে পারতো। ম্যানচেস্টার সিটি একাডেমীর সাবেক এই গ্র্যাজুয়েট বড় অর্থের বিনিময়ে এ মৌসুমের শুরুতে চেলসিতে যোগ দিয়েছিলেন। প্রথমার্ধে অন্তত দুটি গোলের সুযোগ পালমার নষ্ট করেছেন। জনি হাউসনের পাস থেকে তার শটটি পোস্টের বাইরে দিয়ে চলে যায়, এনজো ফার্নান্দেজের শট পোস্টে লেগে ফেরত আসলে সেখান থেকেও সমতা ফেরাতে পারেননি পালমার। বিরতির ঠিক আগে মিডলসব্রো গোলরক্ষক থমাস গ্লোভারকে একা পেয়ে পরাস্ত করতে পারেননি পালমার।
দ্বিতীয়ার্ধে ম্যাচের চেহারা অনেকটাই পাল্টে যায়। ম্যাচে ফিওে আসার তাগিদে চেলসি অনেকটাই আক্রমনাত্মক হয়ে উঠে। কিন্তু কোনভাবেই কাঙ্খিত গোলের দেখা পাচ্ছিল না।
গত তিনটি ট্রান্সফার মার্কেটে ১ বিলিয়নেরও বেশী অর্থ ব্যয় করার পর পোচেত্তিনো গত মাসে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন তার দলকে শক্তিশালী করার জন্য একজন স্বীকৃতি স্ট্রাইকারের প্রয়োজন। চেলসির আক্রমনভাগকে কাল নেতৃত্ব দিয়েছেন নোনি মাদুয়েকে। কিন্তু ঘন্টাখানেক পরেই তার পরিবর্তে পোচেত্তিনো মাঠে নামান মিখাইলা মাড্রিক ও আরমান্ডো ব্রোয়াকে। ম্যাচ শেষের ২০ মিনিট আগে রাহিম স্টার্লিংয়ের লো ক্রসে ব্রোয়া গোল করতে ব্যর্থ হন।
শনিবার এফএ কাপের তৃতীয় রাউন্ডে শেষ মুহূর্তে এ্যাস্টন ভিলার কাছে গোল হজম করে ১-০ গোলের পরাজয় বরণ করেছে মিডলসব্রো। কিন্তু চ্যাম্পিয়নশীপ টেবিলের ১২তম স্থানে থাকা ক্লাবটি এবার আর কোন ভুল করেনি। ওয়েম্বলির ফাইনালে খেলার স্বপ্ন এখনো তারা টিকিয়ে রেখেছে।