বাসস
  ১১ জানুয়ারি ২০২৪, ১৫:৫৫

এ্যাথলেটিকোকে ৫-৩ ব্যবধানে হারিয়ে সুপার কাপের ফাইনালে রিয়াল

রিয়াদ, ১১ জানুয়ারি ২০২৪ (বাসস/এএফপি) : অতিরিক্ত সময়ের দুই গোলে এ্যাথলেটিকো মাদ্রিদকে ৫-৩ ব্যবধানে পরাজিত করে স্প্যানিশ সুপার কাপের ফাইনাল নিশ্চিত করেছে রিয়াল মাদ্রিদ।
সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদের আল-আউয়াল পার্ক স্টেডিয়ামে মারিও হারমোসোর গোলে শুরুতেই এগিয়ে যায় এ্যাথলেটিকো। ২০ মিনিটে এন্টোনিও রুডিগার রিয়ালের হয়ে সমতা ফেরান। কিছুক্ষন পরে ফারলান্ড মেন্ডির গোলে রিয়াল লিড নেয়। আঁতোয়ান গ্রীজম্যানের রেকর্ড গোল ও রুডিগারের আত্মঘাতি গোলে এ্যাথলেটিকো জয়ের স্বপ্ন দেখতে থাকে। ম্যাচ শেষের পাঁচ মিনিট আগে ডানি কারভাহাল মাদ্রিদের পক্ষে সমতা ফেরালে ম্যাচটি অতিরিক্ত সময়ে গড়ায়। ম্যাচটি যখন নিশ্চিত টাই ব্রেকারের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল ঠিক তখনই স্টিভান সাভিচের আত্মঘাতি গোলে কপাল পুড়ে এ্যাথলেটিকোর। কাউন্টার এ্যাটাক থেকে বদলী খেলোয়াড় ব্রাহিম দিয়াজ ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারন করে দেন। সমতায় ফিরতে মহিয়া হয়ে ওঠা এ্যাথলেটিকোর গোলরক্ষক ইয়ান ওবলাক তার পজিশন ছেড়ে রিয়ালের অর্ধে চলে গিয়েছিলেন। সেই সুযোগটাই কাজে লাগিয়েছেন দিয়াজ।  
ম্যাচ শেষে মাদ্রিদ কোচ কার্লো আনচেলত্তি বলেছেন, ‘এ্যাথলেটিকো দুর্দান্ত খেলেছে, আমরও ছেড়ে কথা বলিনি। সত্যিকার অর্থেই এটি একটি রোমাঞ্চকর ম্যাচ ছিল। ম্যাচের শেষ ভাগে আমরা বেশী শক্তিমত্তা প্রয়োগ করতে পেরেছি, সে কারনেই জয়ী হয়েছি। বিশেষ করে বদলী খেলোয়াড়রা আমাদের এগিয়ে নিয়ে গেছে।’
দিয়েগো সিমিওনের এ্যাথলেটিকো এবারের মৌসুমে একমাত্র দল হিসেবে রিয়ালকে পরাজিত করেছে। সেপ্টেম্বরে লা লিগার ম্যাচটিতে এ্যাথলেটিকো ৩-১ গোলে জয়ী হয়েছিল। কাল ম্যাচের শুরুটাও দারুন করেছিল সিমিওনের শিষ্যরা। ম্যাচ শুরু হতে না হতেই স্যামুয়েল লিনো রিয়াল গোলরক্ষক কেপা আরিজাবালাগাকে পরীক্ষায় ফেলেন। 
তারই ধারাবাহিকতায় ৬ মিনিটে গ্রীজম্যানের কর্ণার থেকে হারমোসোর হেডে এগিয়ে যায় এ্যাথলেটিকো।  হারমোসোকে আটকাতে ব্যর্থ হন রডরিগো । লুকা মড্রিচের কর্ণার থেকে প্রায় একইভাবে রুডিগার মাদ্রিদকে   সমতা ফেরান। ২০ ম্যাচে অপরাজিত মাদ্রিদ ধীরে ধীরে নিজেদের ছন্দ ফিরে পায়। কারভাহালের লো ক্রস থেকে ফুল-ব্যাক মেন্ডি ২৯ মিনিটে রিয়ালকে এগিয়ে দেন। ৩৭ মিনিটে গ্রীজম্যান আরিজাবালাগাকে পরাস্ত করে বিরতির আগে এ্যাথলেটিকোর হয়ে সমতা ফেরান। এই গোলের মাধ্যমে লুইস এ্যারাগোনসকে ছাড়িয়ে এ্যাথলেটিকোর হয়ে সর্বকালের সর্বোচ্চ ১৭৪ গোলের রেকর্ড গড়েছে ফরাসি তারকা গ্রীজম্যান। বিরতির আগে রডরিগো মাদ্রিদকে আবারো এগিয়ে দেবার সুযোগ পেয়েছিলেন। এ্যাথলেটিকোর রক্ষনভাগকে ফাঁকি দিলেও ওবলাক এ যাত্রা দলকে রক্ষা করেন। 
সৌদি সমর্থকদের বেশীরভাগই কাল রিয়ালকেই সমর্থন করেছে। তবে দ্বিতীয়ার্ধে লস ব্ল্যাঙ্কোসদের অভিজ্ঞ মিডফিল্ডার টনি ক্রুস মাঠে নামার পর সমর্থকদের উপহাস শুনেছেন। গত গ্রীষ্মে ইউরোপীয়ান ফুটবল ছেড়ে সৌদি আরবের লোভনীয় প্রস্তাবে খেলোয়াড়দের সাড়া দেবার বিষয়টিতে সবচেয়ে বেশী সমলোচনা করেছিলেন ক্রুস। ম্যাচ শেষের ১২ মিনিট আগে এ্যাথলেটিকো লিড নেবার আগে কারভাহালের শট দারুনভাবে রুখে দেন ওবলাক। আলভারো মোরাতা সাথে সংঘর্ষে আরিজাবালাগা বল ধরতে চেষ্টা করলেও রুডিগারের ডিফ্লেকটেড হয়ে বল জালে জড়ায়। মাদ্রিদ অবশ্য মোরাতার বিরুদ্ধে ফাউলের আবেদন করে সফল হতে পারেনি। ম্যাচ শেষে পাঁচ মিনিট আগে জুড বেলিংহামে প্রচেষ্টা থেকে ফিরতে বলে কারভাহাল মাদ্রিদকে রক্ষা করেন। 
ম্যাচের প্রথম ৯০ মিনিট উভয় দল যেভাবে সাহসী খেলা দেখিয়েছে তার কিছুই দেখা যায়নি অতিরিক্ত সময়ে। অতি সতর্ক হয়ে খেলতে গিয়ে সুস্পষ্ট কোন আক্রমনও তারা তৈরী করতে পারেনি। ম্যাচ শেষের চার মিনিট আগে কারভাহালের ক্রস থেকে বদলী খেলোয়াড় জোসেলুর হেড স্টাভিচের মাধ্যমে জালে প্রবেশ করে। এ্যাথলেটিকো বাকি সময়টা সমতার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছিল। তারই ধারাবাহিকতায় ওবলাক তার পজিশন ছেড়ে বেরিয়ে আসে। দিয়াজ তাকে কাটিয়ে বল নিয়ে অনেকটা দুর থেকে খালি জালে প্রবেশ করালে মাদ্রিদের জয় নিশ্চিত হয়। 
এক মাসের মাথায় তিনবার এ্যাথলেটিকোর মোকাবেলা করবে রিয়াল মাদ্রিদ। আগামী বৃহস্পতিবার পরবর্তী ম্যাচে কোপার ডেল রে’তে দুই দল একে অপরের মুখোমুখি হবে। এ্যাথলেটিকো মিডফিল্ডার কোকে বলেছেন, ‘আমরা প্রতিশোধ নেবার সুযোগ পেয়েছিলাম। এই স্টেডিয়ামে আমাদের সমর্থকদের সমর্থনের প্রয়োজন ছিল।’
যদিও কোকের এই মন্তব্যের বিরোধীত করে সিমিওনে বলেছেন, এখানে প্রতিশোধের কোন বিষয় নেই। ফুটবলে প্রতিশোধ বলে কিছু নেই।