শিরোনাম
লন্ডন, ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ (বাসস/এএফপি) : ফিল ফোডেনের হ্যাট্রিকে সোমবার প্রিমিয়ার লিগে ব্রেন্টফোর্ডকে ৩-১ গোলে পরাজিত করেছে ম্যানচেস্টার সিটি। এই জয়ে শীর্ষ তিন দল মাত্র দুই পয়েন্টে একে অপরের থেকে পিছিয়ে রয়েছে। ম্যাচ শেষে সিটি বস পেপ গার্দিওলা বলেছেন ফোডেন তার সিটি ক্যারিয়ারে সেরা মৌসুম উপভোগ করছেন।
এ্যাওয়ে ম্যাচের এই জয়ে আর্সেনালের সাথে ৪৯ পয়েন্ট নিয়ে গোল ব্যবধানে এগিয়ে লিগ টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে সিটিজেনরা। দুই পয়েন্ট এগিয়ে শীর্ষে অবস্থান করছে লিভারপুল। কিন্তু গার্দিওলার দল দুই দলের চেয়েই এক ম্যাচ কম খেলেছে।
বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ম্যানচেস্টার সিটি প্রিমিয়ার লিগ ইতিহাসের প্রথম দল হিসেবে টানা চারটি এ্যাওয়ে ম্যাচে প্রথমে গোল হজম করে শেষ পর্যন্ত জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে। ¯্রােতের বিপরীতে গিয়ে নিল মপে বিসদের প্রথমে এগিয়ে দেন। কিন্তু প্রথমার্ধের স্টপেজ টাইমে ফোডেন সিটির হয়ে সমতা ফেরান। কেভিন ডি ব্রুইনা ও আর্লিং হালান্ডের সহায়তায় এরপর ইংলিশ মিডফিল্ডার বিরতির পর হ্যাট্রিক পূর্ণ করেছেন।
এনিয়ে মৌসুমে ১৪ গোল করলেন ফোডেন। ম্যাচ শেষে গার্দিওলা বলেছেন, ‘তার মধ্যে সবসময়ই গোলে ক্ষুধা থাকে। আমি মনে করি ক্যারিয়ারের সেরা মৌসুম সে খেলছে। এই ধরনের পজিশনে থেকে গোল ও এ্যাসিস্ট করার দক্ষতা সত্যিই অবিশ্বাস্য।’
সাম্প্রতিক সময়ে দলের দুই প্রাণ ভোমরা ডি ব্রুইনা ও হালান্ড ইনজুরির কারনে মাঠ থেকে ছিটকে গেলে সিটির শিরোপা ধরে রাখার মিশনে কিছুটা হলেও বাঁধার সৃষ্টি হয়। প্রথম দল হিসেবে ইংলিশ লিগে টানা চার মৌসুম শিরোপা ধরে রাখার লক্ষ্য নিয়েই মাঠে নেমেছে সিটি।
ব্রেন্টফোর্ড গোলরক্ষক মার্ক ফ্লেকেন শট সেভ করার দিক থেকে পরিসংখ্যানগত ভাবে সবচেয়ে খারাপ গোলরক্ষক হিসেবে কার ম্যাচ শুরু করেছিলেন। কিন্তু বিরতির আগে নয়টি সেভ করে এই ডাচ গোলরক্ষক বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের হতাশ করার পাশাপাশি নিজের আত্মবিশ্বাসও বাড়িয়েছেন। একইসাথে দলকেও রক্ষা করেছেন। ২১ মিনিটে এগিয়ে যাবার আগে ব্রেন্টফোর্ড অবশ্য তেমন কোন সুযোগ তৈরী করতে পারেনি। অক্টোবরের পর মাত্র এক ম্যাচে কোন গোল হজম করেনি সিটিজেনরা। ফ্লেকেনের গোলকিক থেকে ইভান টনিকে ব্লক করেন নাথান এ্যাকে, কিন্তু এই সুযোগে অনেকটা ফাঁকায় দাঁড়ানো মপে গোল করে স্বাগতিকদের এগিয়ে দেন। এনিয়ে টানা পঞ্চম ম্যাচে গোল করলেন মপে। পরের মিনিটেই হালান্ড গোলের দারুন সুযোগ পেয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ফ্লেকেনকে পরাস্ত করতে পারেননি। দুই মাসের মধ্যে প্রথমবারের মত মূল দলে সুযোগ পাওয়ার দিনটিকে তাই স্মরণীয় করে রাখতে পারেননি। প্রথমার্ধে সব মিলিয়ে সিটি ব্রেন্টফোর্ডে গোলপোস্টে ১৭টি শট মেরেছে যার মধ্যে ১০টি ছিল টার্গেটে। কিন্তু স্টপেজ টাইমে শেষ পর্যন্ত একটি গোল তারা দিতে পেরেছে। ডি ব্রুইনার ক্রস থেকে ইথান পিনকের হেডে বল পেয়ে যান ফোডেন। বুক দিয়ে বলটি নিয়ন্ত্রন করে লো শটে সিটিকে সমতায় ফেরান ফোডেন।
দ্বিতীয়ার্ধের আট মিনিটে ডি ব্রুইনার ডেলিভারিতে ফোডেনের হেডে ফ্লেকেন পরাস্ত হলেও প্রথমবারের মত এগিয়ে যায় সিটিজেনরা। ম্যাচে ফিরে আসার বেশ কিছু চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে ব্রেন্টফোর্ডের। এর মধ্যে সবচেয়ে সহজ সুযোগ নষ্ট করে ক্রিস্টিয়ান নোরগার্ড। তার শটটি শেষ মুহূর্তে ব্লক করেন রুবেন দিয়াস।
ব্রেন্টফোর্ড বস থমাস ফ্রাংক বলেছেন, ‘সিটিকে হারাতে ঐ সুযোগগুলো আমাদের কাজে লাগানো উচিৎ ছিল। সিটি বিশ্বের সেরা দল। যে কারনে সিটির বিপক্ষে খেলাটাই সবসময় কঠিন। আমরা আজ অনেক কিছুই সঠিক ভাবে পালন করেছি। কিছু কিছু গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে আমরা আমরা নিজেদের প্রমান করতে পারিনি, কিন্তু তারা পেরেছে।’
ম্যাচ শেষের ২০ মিনিট আগে সিটি শেষ ১২ ম্যাচে ১১তম জয় নিশ্চিত করে। হালান্ড হয়তো স্কোরশিটে নাম লেখাতে পারেননি। কিন্তু তার নিখুঁত পাসে ফোডেন কোর ভুল করেননি। ঠান্ডা মাথায় ফ্লেকেনকে পরাস্ত করেছেন।
পরাজয় সত্ত্বেে ব্রেন্টফোর্ড রেলিগেশন জোন থেকে তিন পয়েন্ট উপরে রয়েছে।
এর আগে রোববার লিভারপুলের বিপক্ষে ৩-১ গোলের জয়ে ২০ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মত লিগ শিরোপা জয়ে আর্সেনাল নিজেদের স্বপ্ন টিকিয়ে রেখেছে।