শিরোনাম
বার্সেলোনা, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ (বাসস/এএফপি) : ১৬ বছর বয়সী লামি ইয়ামালের জোড়া গোলে রোববার লা লিগায় গ্রানাডার সাথে ৩-৩ গোলের ড্র নিয়ে মাঠ ছেড়েছে বার্সেলোনা।
১৯তম স্থানে থেকে রেলিগেশন লড়াই চালিয়ে যাওয়া গ্রানাডার কাছে আর একটু হলে হেরেই বসেছিল বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। কিন্ত অলিম্পিক স্টেডিয়ামে জাভি হার্নান্দেজের দলকে লজ্জা থেকে রক্ষা করেছেন তরুণ ইয়ামাল। এই ড্রয়ে লিগ টেবিলের শীর্ষে থাকা রিয়াল মাদ্রিদের থেকে ১০ পয়েন্ট পিছিয়ে গেল বার্সা।
রিয়াল মাদ্রিদ শনিবার দ্বিতীয় স্থানে থাকা জিরোনাকে ৪-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে পাঁচ পয়েন্টের ব্যবধানে শীর্ষস্থান মজবুত করেছে।
এর আগে দিনের শুরুতে সেভিয়ার কাছে ১-০ গোলে পরাজিত হয়ে হতাশ করেছে এ্যাথলেটিকো।
তরুণ ইয়ামাল প্রথম গোল করে বার্সেলোনাকে এগিয়ে দিয়েছিল। কিন্তু রিকার্ড সানচেজ ও ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড থেকে ধারে খেলতে আসা উইঙ্গার ফাকুন্ডো পেলিস্ট্রির গোলে লড়াইয়ে ফিরে গ্রানাডা। রবার্ট লিওয়ানদোস্কির গোলে ৬৩ মিনিটে সমতায় ফিরে বার্সা। কিন্তু ইগনাসি মিগুয়েল আবারো গ্রানাডাকে এগিয়ে দেয়। ম্যাচের শেষভাগে ইয়ামালের দুর পাল্লার শটে বার্সেলোনার এক পয়েন্ট নিশ্চিত হয়।
ম্যাচ শেষে ইয়ামাল বলেছেন, ‘আজকেও আমরা পারিনি, আরো একটি পরজায়ের শঙ্কায় পড়েছিলাম। কিন্তু আমাদের কাজ চালিয়ে যেতে হবে। আমাদের কোচের ওপর আস্থা আছে। কিন্তু এই মুহূর্তে আমি ড্রয়ের চিন্তা করছি। আমার পারফরমেন্সের থেকেও জরুরী হলো আমরা দুই পয়েন্ট হারিয়েছি।’
মৌসুমের শেষে ক্লাব ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেয়া জাভি আরো একবার প্রমান করলেন কেন ক্লাবে পরিবর্তণ প্রয়োজন। বার্সা বস বলেছেন, ‘আমরা ঘরের মাঠে তিন গোল হজম করেছি এবং ওদেরকে অনেক সুযোগ তৈরীতে সহযোগিতা করেছি। যদিও ক্লাবের সকলের মধ্যে বিশ্বাস আছে, সবসময়ের মতই সাহস আছে। কিন্তু এই মুহূর্তে মনে হচ্ছে লা লিগা শিরোপা ক্রমেই হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে।’
১৪ মিনিটে হুয়াও ক্যান্সেলোর ক্রসে ইয়ামালের গোলে এগিয়ে যায় স্বাগতিকরা। এর আগে অক্টোবরে যখন দুই দল মুখোমুখি হয়েছিল তখন ঐ ম্যাচে গোল করে লা লিগার ইতিহাসে সবচেয়ে কমবয়সী খেলোয়াড় হিসেবে গোলের রেকর্ড গড়েছিলেন এই উইঙ্গার। বিরতির আগে ব্যবধান দ্বিগুনের সুযোগ পেয়েছিল বার্সা। কিন্তু লিওয়ানদোস্কির শট লাইনের উপর থেকে ক্লিয়ার করেন মার্টিন হোংলা। এর কিছুক্ষনের মধ্যে গোল হজম করে বার্সা। পেলিস্ট্রির ক্রসে সানচেজ কোনাকুনি শটে মার্ক-আন্দ্রে টার স্টেগানকে পরাস্ত করেন। পিঠের ইনজুরি কাটিয়ে নভেম্বরের পর প্রথমবারের মত মাঠে নেমেছিলেন এই জার্মান গোলরক্ষক।
গত মৌসুমে এই একই সময়ে লা লিগায় বার্সেলোনা মাত্র আট গোল হজম করেছিল। কিন্তু এবার ২৪ ম্যাচে ৩১তম গোল হজমের পর আরো দুটি গোল তাদের জালে প্রবেশ করেছে। ৬০ মিনিটে পর কুবারসির ডিফেন্সিভ হেডে উজুনি বল পেয়ে তা বাড়িয়ে দেন পেলিস্ট্রির দিকে। গ্রানাডাকে এগিয়ে দিতে কোন ভুল করেননি পেলিস্ট্রি। তিন মিনিটের মধ্যে ইকে গুনডোগানের পাসে লিওয়ানদোস্কি বার্সেলোনাকে সমতায় ফেরান। লিগ মৌসুমে এটি পোলিশ তারকার ১০ম গোল।
এনিয়ে পাঁচ ম্যাচে বার্সেলোনার বিপক্ষে অপরাজিত থাকলো গ্রানাডা। ফেইতুত মুসাসের ক্রসে মিকুয়েলের হেডে আলেক্সান্দার মেদিনার দল আরো একবার এগিয়ে যায়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত টিনএজার ইয়ামাল আরো একবার বার্সেলোনাকে রক্ষা করেছেন।
সেভিয়ার বিপক্ষে এ্যাথলেটিকো মাদ্রিদ কোন প্রতিরোধই গড়তে পারেনি। এনিয়ে এবারের মৌসুমে প্রথমবারের মত টানা দুই ম্যাচে জয়ী হয়ে রেলিগেশন জোন থেকে চার পয়েন্ট উপরে থেকে ১৫তম স্থানে উঠে এসেছে সেভিয়া। ১৫ মিনিটে ইসান রোমেরো সেভিয়াকে এগিয়ে দিয়েছিলেন। সেই গোল আর পরিশোধ করতে পারেনি এ্যাথলেটিকো। এই পরাজয়ে রিয়াল মাদ্রিদের থেকে ১৩ পয়েন্ট পিছিয়ে গেছে দিয়েগো সিমিওনের দল। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে জায়গা ধরে রাখাই এখন তাদের জন্য কষ্ট সাধ্য হয়ে গেছে।
এ্যাথলেটিকো কোচ সিমিওনে বলেছেন, ‘আমরা যেভাবে খেলি সেটা করতে না পারলে বিষয়টা আমাকে দু:শ্চিন্তায় ফেলে। খেলোয়াড়রা যেভাবে খেলেছে তাতে আমি সন্তুষ্ট, তবে গোল হজম করা ঠিক হয়নি।’
ইনজুরির কারনে এ্যাথলেটিকো ফরোয়ার্ড আলভারো মোরাতা বিরতির পর আর মাঠে নামতে পারেননি। যদিও সিমিওনে ম্যাচ শেষে বলেছেন মোরাতার হাঁটুর ইনজুরি ততটা গুরুতর নয় বলেই ধারনা করা হচ্ছে।