শিরোনাম
লিপজিগ (জার্মানী), ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ (বাসস/এএফপি) : মূল একাদশে যার খেলার কথাই ছিল না সেই ব্রাহিম দিয়াজের চোখ ধাঁধানো গোলে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোলর প্রথম লেগে আরবি লিপজিগকে ১-০ ব্যবধানে পরাজিত করেছে রিয়াল মাদ্রিদ।
যদিও ম্যাচের বেশীরভাগ সময়ই দাপট দেখিয়েছে লিপজিগ, কিন্তু গোলের সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি। এর জন্য অবশ্য মাদ্রিদ গোলরক্ষক আন্দ্রি লুনিনও দায়ী। পুরো রিয়ালের ৩টি শটের বিপরীতে লিপজিগ টার্গেটে শট নিয়ে ১০টি যার বেশীরভাগই রুখে দিয়ে লুনিন নিজেকে আরো একবার প্রমান করেছেন। রেড বুল এরেনাতে ৪৮ মিনিটে দিয়াজ একক প্রচেষ্টায় জয়সূচক গোলটি করেন। এর আগে স্বাগতিকদের একটি গোল অফসাইডের কারনে বাতিল হয়ে গেলে তা নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়।
চোট পাওয়া জুড বেলিংহামের স্থানে মূল দলে খেলতে নেমে দিয়াজ প্রায় মধ্যমাঠ থেকে বল নিয়ে তিনজন ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে কোনাকুনি কার্লিং শটে লক্ষ্যভেদ করেন। এই গোল প্রসঙ্গে ম্যাচ শেষে দিয়াজ বলেছেন, ‘আমারও বিশ্বাস হয়নি। এক সময় ভিনিসিয়াস জুনিয়রকে দেখেছি, তাকে বল পাস দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু শেষ পর্যন্ত নিজেই শট নেই। এটা সত্যিই দারুন একটি গোল ছিল।’
রিয়াল মাদ্রিদের অভিজ্ঞ মিডফিল্ডার টনি ক্রুস দিয়াজের এই গোলের প্রশংসা করে বলেছেন, ‘ব্যক্তিগত দক্ষতা আজ ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দিয়েছে। তবে সত্যি বলতে কি এই ফলাফল ভিন্ন হতে পারতো।’
চ্যাম্পিয়ন্স লিগে এনিয়ে সাত ম্যাচে সাতটিতেই জয় ছিনিয়ে নিল মাদ্রিদ। টানা চতুর্থ মৌসুমে শেষ ষোল পার করার পথে মাদ্রিদ এখন শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে।
লিপজিগ গোলরক্ষক পিটার গুলাসি বলেছেন, ‘ম্যাচটি সবসময়ই উন্মুক্ত ছিল। সৌভাগ্যবশত: একটি গোল ম্যাচের ফলাফল নির্ধারন করে দিয়েছে।’
জিরোনার বিপক্ষে রোবরার লা লিগায় ৪-০ গোলের জয়ের ম্যাচটিতে গোঁড়ালিতে আঘাত পেয়ে ছিটকে যান ইংলিশ মিডফিল্ডার বেলিংহাম। সে কারনে তাকে ছাড়াই জার্মান সফরে যায় মাদ্রিদ। প্রথম পছন্দের তিন সেন্টার-ব্যাক এন্টোনিও রুডিগার, ডেভিড আলাবা ও এডার মিলিটাও ইনজুরির কারনে দলে ছিলেন না। কোচ কার্লো আনচেলত্তি সেন্ট্রাল ডিফেন্সে মিডফিল্ডার অরেলিয়েন টিচুয়ামেনিকে রাখতে বাধ্য হয়েছেন।
ইনজুরি শঙ্কা সত্ত্বেও রিয়াল লা লিগায় পাঁচ পয়েন্টে এগিয়ে টেবিলের শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে। এবারের মৌসুমে সব ধরনের প্রতিযোগিতায় মাত্র দুটি ম্যাচে তারা পরাজিত হয়েছে। পরাজিত দুটি ম্যাচই ছিল মাদ্রিদ ডার্বিতে এ্যাথলেটিকো মাদ্রিদের বিপরীতে।
লিপজিগ কোচ মার্কো রোজ বলেছেন তার দল রিয়াল মাদ্রিদকে মোটেই ভয় পায়না। ২০২২ সালে এই একই ভেন্যুতে ১৪ বারের ইউরোপীয়ান চ্যাম্পিয়নদের তারা ৩-২ গোলে পরাজিত করেছিল।
ম্যাচের ৩ মিনিটে লিপজিগ গোল পেয়েছিল। কিন্তু অফসাইডের কারনে তা বাতিল হয়ে যায়। বেঞ্জামিন হেনরিকস লুনিনকে বাঁধা দিচ্ছেন বলে ধরে নিয়ে গোলটি বাতিল করা হয়। যদিও ক্রুস বলেছেন রেফারির সিদ্ধান্তটি ভুল ছিল। তার মতে লুনিন বলের জন্য যায়নি, যে কারনে এটিকে গোল বলে ধরে নিতে হবে। গুলাসি পরবর্তীতে সাংবাদিকদের বলেছেন তিনি এই সিদ্ধান্তে দারুন হতাশ হয়েছেন। শুরুতে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে যেতে পারলে ম্যাচের চিত্র হয়তো ভিন্ন হতে পারতো।
প্রথমার্ধে বেশ কিছু সুযোগ পেয়েছিল লিপজিগ। কিন্তু স্ট্রাইকার বেঞ্জামিন সেসকোর ভুলে সেগুলো কাজে লাগাতে পারেনি। প্রথমার্ধের শেষভাগে রিয়াল একটি ভাল সুযোগ তৈরী করেছিল। ভিনিসিয়াসের লুপিং ক্রসে রডরিগো গোলের সুযোগ হাতছাড়া করেন।
দ্বিতীয়ার্ধ শুরুর তিন মিনিটের মধ্যে দিয়াজ মধ্যমাঠে ফাউলের শিকার হয়েছিলেন। কিন্তু সেই ফাউলকে আমলে না নিয়ে লিপজিগের রক্ষনভাগকে কাটিয়ে অসাধারণ এক গোলে রিয়ালকে এগিয়ে দেন। ম্যাচ শেষে দিয়াজ স্বীকার করেছেন রিয়াল আধিপত্য দেখাতে না পারলেও ভাল ম্যাচ খেলেছে। বিশেষ করে দলকে জয়ী হতে সহযোগিতা করতে পেরে তিনি দারুন খুশী।
বার্সেলোনা একাডেমীর খেলোয়াড় ডানি ওলমো দুইবার লিপজিগকে সমতায় ফেরানোর সুযোগ পেয়েছিলেন। কিন্তু দুইবারই লুনিন তাকে হতাশ করেন। কাউন্টার এ্যাটাক থেকে ম্যাচ শেষের ২০ মিনিট আগে ভিনির শট পোস্টে না লাগলে ব্যবধান দ্বিগুন করতে পারতো রিয়াল।
আগামী ৬ মার্চ ফিরতি লেগে স্প্যানিশ রাজধানীতে লিপজিগকে আতিথ্য দিবে রিয়াল।