শিরোনাম
লুটন, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ (বাসস/এএফপি) : প্রিমিয়ার লিগ ইতিহাসে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করেছেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের স্ট্রাইকার রাসমাস হোলান্ড। ড্যানিশ এই তরুণ স্ট্রাইকারের জোড়া গোলে রোববার লুটনকে ২-১ ব্যবধানে পরাজিত করেছে ইউনাইটেড।
সবচেয়ে কম বয়সী খেলোয়াড় হিসেবে প্রিমিয়ার লিগে টান ছয় ম্যাচে গোলের কৃতিত্ব দেখিয়েছেন হোলান্ড। গতকাল কেনিলওয়ার্থ রোর্ডে প্রথম সাত মিনিটে করেছেন দুই গোল।
২১ বছর ১৪ দিন বয়সে হোলান্ড গতকাল গোল করার মাধ্যমে নিউক্যাসল মিডফিল্ডার জো উইলককের ২১ বছর ২৭২ দিন বয়সের আগের রেকর্ড ভেঙ্গেছেন।
২০০৩ সালে টানা ১০ ম্যাচে গোল করে ইউনাইটেডের হয়ে রেকর্ড গড়েছিলেন রুড ফন নিস্তেরলয়। ২০১৫ সালে ১১ ম্যাচে গোল করে প্রিমিয়ার লিগে লিস্টারের জেমি ভার্দি সেই রেকর্ড ভেঙ্গেছিলেন যা এখনো অক্ষুন্ন আছে।
আগস্টে আটালান্টা থেকে ইউনাইটেডে যোগ দেবার পর প্রথম ১৪ লিগ ম্যাচে কোন গোল করতে পারেননি হোলান্ড। সব ধরনের প্রতিযোগিতায় শেষ আট ম্যাচে তিনি আট গোল করেছেন। গতকাল তার জোড়া গোলে ইউনাইটেডের ম্যাচের পূর্ণ নিয়ন্ত্রন নেয়া উচিৎ ছিল। কিন্তু ১৪ মিনিটে কার্লটন মরিসের গোলে লুটন দারুনভাবে ফিরে আসার ইঙ্গিত দেয়। টেবিলের তলানি থেকে চতুর্থ স্থানে থাকা লুটনের বিপক্ষে ম্যাচের শেষ ভাগটা বেশ টেনশনে কাটাতে হয়েছে ইউনাইটেডকে। একের পর এক গোলের সুযোগ নষ্ট করে কার্যত ইউনাইটেড নিজেরাই ম্যাচটি কঠিন করে তুলে।
হোলান্ডের মানসিকতার প্রশংসা করে ইউনাইটডে কোচ এরিক টেন হাগ বলেছেন, ‘আমরা তাকে বুঝে-শুনেই তার দায়িত্ব দিয়েছি। আমরা জানি এক্ষেত্রে সে কতটা শক্তিশালী। চাপের মধ্যে থেকে সে সত্যিই দারুন পারফর্ম করে। ম্যান ইউনাইটেডের একজন স্ট্রাইকারের কাছ থেকে এটাই সবাই প্রত্যাশা করে। সে কখনই নার্ভাস হয়না, আত্মবিশ্বাস হারায়না। তার মধ্যে প্রচুর আত্মবিশ্বাস রয়েছে। আমি নিশ্চিত সে আরো বেশী গোল করবে।’
হোলান্ড বলেছেন, ‘আমি সতীর্থদের ও কোচকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। কারন তারা আমার উপর আস্থা রেখেছে, আমাকে বিশ্বাস করেছে। আমি জানতাম গোলের দেখা আমি পাবো। কিন্তু প্রিমিয়ার লিগে গোল করতে না পারা সত্যিই হতাশার।’
ষষ্ঠ স্থানে থাকা ইউনাইটেড টানা চতুর্থ লিগ ম্যাচে জয়ী হয়ে চতুর্থ স্থানে থাকা এ্যাস্টন ভিলার থেকে পয়েন্টের ব্যবধান পাঁচে নামিয়ে এনেছে। আগামী মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে জায়গা করে নিতে বেশ ভালভাবেই এগিয়ে যাচ্ছে রেড ডেভিলসরা। যদিও কঠিন মৌসুমে লম্বা সময় ধরে এই লক্ষ্য পূরণে বেশ পিছিয়েই ছিল ইউনাইটেড। কিন্তু হোলান্ডের দুর্দান্ত ফর্মে আবারো তারা আশা ফিরে পায়। টেন হাগ বলেন, ‘আমরা আবারো প্রতিদ্বন্দ্বীতায় ফিরে এসেছি। ক্রমেই নিজেদের প্রমান করছি। আমাদের আরো বেশী চাপ সৃষ্টি করতে হবে। মৌসুমের এই পর্যায়ে এসে প্রতিটি ম্যাচই ফাইনাল।’
ম্যাচের মাত্র ৩৭ সেকেন্ডের মধ্যে আমারি বেলের ভুল একটি ব্যাক পাস থেকে হোলান্ড বল ছিনিয়ে নিয়ে গোলরক্ষক থমাস কামিনিস্কিকে কাটিয়ে খালি জালে বল পাঠান। এবারের মৌসুমে এটি ইউনাইটেডের সবচেয়ে দ্রুততম গোল। সাত মিনিটে ইউনাইটেডের কর্ণার থেকে আলেহান্দ্রো গারাঞ্চোর ভলি হোলান্ডের বুকে লেগে ডিফ্লেকটেড হয়ে জালে জড়ালে ব্যবধান দ্বিগুন হয় ইউনাইটেডের। কিন্তু ১৪ মিনিটে প্রত্যাশার বাইরে গিয়ে মরিস লুটনকে এক গোল উপহার দেন। আর এতেই নড়েচড়ে বসে স্বাগতিকরা। কর্ণার থেকে গাব্রিয়েল ওশোর হেড অল্পের জন্য ক্রসবারের উপর দিয়ে বাইরে চলে যায়। গারাঞ্চো পজিশন হারালে মরিসের শক্তিশালী শট পোস্টের বাইরে দিয়ে চলে যায়। বিরতির ঠিক আগে ইনজুরিতে পড়ে মাঠ ছাড়তে বাধ্য জন ইউনাইটেডের লেফট-ব্যাক লুক শ। এর মাধ্যমে এবারের মৌসুমে আরো একবার ফিটনেস নিয়ে সমস্যায় পড়লেন শ।
ম্যাচে আধিপত্য ধরে রাখার লক্ষ্যে টেন হাগ দ্বিতীয়ার্ধে কাসেমিরো ও হ্যারি ম্যাগুয়েরের স্থানে জনি ইভান্স ও স্কট ম্যাকটোমিনেকে মাঠে নামান। কিন্তু এই পরিবর্তন সত্ত্বেও লুটনই বারবার আক্রমন চালিয়েছে। কলিং উড ও চং অল্পের জন্য সমতা ফেরাতে পারেননি। ইউনাইটেডের ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ নষ্ট করেন মার্কাস রাশফোর্ড, গারাঞ্চো ও ব্রুনো ফার্নান্দেস।