শিরোনাম
নেপলস (ইতালি), ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ (বাসস/এএফপি) : ভিক্টর ওশিমেনের ফেরার ম্যাচে দারুন এক রাত পার করেছে ইতালিয়ান চ্যাম্পিয়ন নাপোলি। নাইজেরিয়ান এই স্ট্রাইকারের গোলে বার্সেলোনার সাথে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোলর প্রথম লেগের ম্যাচে ১-১ গোলের ড্র নিয়ে মাঠ ছেড়েছে নাপোলি।
এস্তাদিও দিয়েগো আরমান্ডো ম্যারাডোনা স্টেডিয়ামে ম্যাচ শেষের ১৫ মিনিট আগে ওশিমেন নাপোলির হয়ে সমতাসূচক গোলটি করেন। আফ্রিকান নেশন্স কাপে জাতীয় দলকে নেতৃত্ব দেবার পর এটাই নাপোলির জার্সি গায়ে তার প্রথম ম্যাচ।
রবার্ট লিওয়ানদোস্কির ৬০ মিনিটের গোলকে কার্যকর হতে দেননি ২৫ বছর বয়সী ওশিমেন । ইউরোপীয়ান আসরে রেকর্ড বিবেচনায় বেশ কিছুদিন ধরে বার্সেলোনা নাপোলির থেকে নিজেদের এগিয়ে রেখেছিল। কিন্তু কাল সেই রেকর্ডের পনুরাবৃত্তি হতে দেয়নি ইতালিয়ান চ্যাম্পিয়নরা। টার্গেটে প্রথম শটেই তারা গোল আদায় করে নিয়েছে। ম্যাচ শেষে নাপোলি অধিনায়ক গিওভান্নি ডি লোরেঞ্জো বলেছেন, ‘ওশিমেন আমাদের জন্য অনেক বড় একজন খেলোয়াড়। সঠিক সময়ে সঠিক মানসিকতা নিয়েই সে ফিরে এসেছে। একজন অসাধারণ ও পেশাদার খেলোয়াড় হিসেবে তার কাছ থেকে এটা আশা করাই স্বাভাবিক। সে আমাদের দলকে আজ সবকিছু দিয়েছে।’
সর্বশেষ বড়দিনের ঠিক আগে রোমার বিপক্ষে নাপোলির সিরি-এ লিগে ২-০ গোলের পরাজয়ের ম্যাচটিতে খেলেছিলেন ওশিমেন। ঐ ম্যাচে নাপোলির দুই খেলোয়াড়কে লাল কার্ড দেখে মাঠের বাইরে চলে যেতে হয়েছিল যার মধ্যে ওশিমেন অন্যতম।
যদিও লিগ টেবিলের নবম স্থানে থাকা বর্তমান চ্যাম্পিয়ন নাপোলি নিজেদের ছন্দ ফিরে পাবার তাগিদে এবারের মৌসুমে তিনজন ম্যানেজার পরিবর্তন করেছেন। কাল নতুন কোচ ফ্রান্সেসকো কালজোনার অধীনে অন্তত বার্সেলোনার বিপক্ষে পরাজয় এড়াতে পেরেছে। সোমবার রাতে ওয়াল্টার মাজ্জারির স্থলাভিষিক্ত হবার পর নিজেকে বড় ম্যাচের জন্য প্রস্তুত করে তুলতে ৪৮ ঘন্টারও কম সময় পেয়েছেন কালজোনা। আগামী মাসে দ্বিতীয় লেগের ম্যাচ খেলতে কাতালান রাজধানীতে যাবার আগে নাপোলির সামনে অন্তত একটি আত্মবিশ্বাস থাকবে, ওশিমেন দলে থাকলে পুরো দলের পারফরমেন্স যাই হোক না কেন ম্যাচে সবসময়ই গোলের সুযোগ থাকবে।
ডি লোরেঞ্জো বলেন, ‘এটা আমাদের জন্য দারুন একটি শুরু। আমরা জানি আমাদের আরো অনেক দুর যেতে হবে। কিন্তু আমরা আজকের ম্যাচ দিয়ে একধাপ এগিয়ে গেছি। এখন আমাদের সামনে দ্বিতীয় লেগের সুযোগ।’
মৌসুমের শেষে বার্সেলোনার কোচের পদ ছাড়ার ঘোষনা দিয়েছেন জাভি। কিন্তু কোচকে বিদায় জানানোর আগে আরো একটি জটিল মৌসুম শেষ করার পথে রয়েছে কাতালান জায়ান্টরা। প্রেসিডেন্ট হুয়ান লাপোর্তা মৌসুমের আগেই কোচকে বরখাস্ত করার সুযোগ আর পাচ্ছেন না। পুরো ম্যাচে সফরকারী দল হিসেবে বার্সেলোনাই বেশী সুযোগ পেয়েছে। কিন্তু এ্যাওয়ে ম্যাচে গোলের সুবিধা সেভাবে আদায় করতে পারেনি। বার্সা মিডফিল্ডার রোনাল্ড আরাউজো বলেছেন, ‘এই ফলাফলে আমরা কিছুটা হলেও হতাশ। কারন এই ম্যাচে জয়টা আমাদের প্রাপ্য ছিল। শেষ ১৫ মিনিটে নাপোলি অনেক বল পেয়েছে। কিন্তু সেভাবে সুযোগ তৈরী করতে পারেনি। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ এমনই।’
প্রথমার্ধে বার্সেলোনা প্রমান করেছে কেন তাদেরকে প্রাক-ম্যাচ ফেবারিট হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। বলের পজিশনে নিজেদের করে নিয়ে একের পর এক সুযোগও তারা তৈরী করেছে। টিন সেনসেশন লামিন ইয়ামাল ৯ মিনিটে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ইতিহাসে সর্বকনিষ্ট গোলদাতা হিসেবে নিজের নাম প্রায় লিখিয়ে ফেলেছিলেন। কিন্তু নাপোলির গোলরক্ষক এ্যারেক্স মেরেত তা রুখে দেন। ২৩ মিনিটে লিওয়ানদোস্কির ফ্লিক ও ইকে গুনডোগানের দুর পাল্লার শক্তিশালী শট সেভ করে মেরেত নাপোলিকে রক্ষা করেছেন। ঐ মুহূর্ত থেকে ম্যাচে নাপোলির আধিপত্য বাড়তে থাকে। যদিও বিরতির আগে একটি ও তারা টার্গেটে নিতে পারেনি।
বিরতির পর আবারো গুনডোগানকে হতাশ করেন মেরেত। পেড্রির পাস থেকে ৬০ মিনিটে লিওয়ানদোস্কি লো ফিনিশ অবশ্য আর রক্ষা করতে পারেননি মেরেত। বার্সেলোনা যখন এ্যাওয়ে গোলের সুবিধা নিয়ে সন্তুষ্ট হয়ে গিয়েছিল ঠিক তখনই ওশিমেন ম্যাচে সমতা ফিরিয়ে পুরো স্টেডিয়ামের পরিবেশ পাল্টে দেন। ম্যাচের শেষ ভাগে আন্দ্রে-ফ্রাংক জাম্বো আনগুইসা ও বদলী খেলোয়াড় গিওভান্নি সিমিওনে নাপোলির হয়ে সহজ সুযোগ হাতছাড়া করেন। স্পটেজ টাইমে আবারো গুনডোগানের লো শট পোস্টের বাইরে দিয়ে চলে গেলে হতাশ হতে হয় পুরো বার্সা শিবিরকে।