বাসস
  ১১ মার্চ ২০২৪, ১৫:৫৪

হাই ভোল্টেজ ম্যাচে সিটি-লিভারপুল কেউই জিততে পারেনি

লন্ডন, ১১ মার্চ ২০২৪ (বাসস/এএফপি) : লিভারপুল ও ম্যানচেস্টার সিটির ম্যাচকে ঘিড়ে কাল প্রিমিয়ার লিগে যে উত্তেজনা ছড়িয়েছিল তাতে কোন দলই এগিয়ে যেতে পারেনি। শিরোপার লড়াইয়ে থাকা এই দুই দলের হাই ভোল্টেজ ম্যাচটি শেষ পর্যন্ত ১-১ গোলে   ড্র হয়েছে। আর এতে লাভ হয়েছে আর্সেনালের। লিভারপুলের সাথে সমান ৬৪ পয়েন্ট নিয়ে গোল ব্যবধানে এগিয়ে শীর্ষেই থাকলো গানার্সরা। এক পয়েন্ট পিছিয়ে তৃতীয় স্থানে নেমে গেছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ম্যানচেস্টার সিটি। তিন দলের হাতেই রয়েছে আর মাত্র ১০টি ম্যাচ। দিনের আরেক ম্যাচে টটেনহ্যাম ৪-০ গোলে চতুর্থ স্থানে থাকা এ্যাস্টন ভিলাকে বিধ্বস্ত করে শীর্ষ চারের লড়াইয়ে নিজেদের টিকিয়ে রেখেছে।
প্রথমার্ধে জন স্টোনসের গোলে এগিয়ে গিয়েছিল সিটিজেনরা। এ্যানফিল্ডে  বিরতির পর এ্যালেক্সিস ম্যাক এ্যালিস্টারের গোলে সমতায় ফিরে স্বাগতিক লিভারপুল। 
ঠিক এই ফলাফলটাই চাচ্ছিল আর্সেনাল। শনিবার কেই হাভার্টজের শেষ মুহূর্তের গোলে ব্রেন্টফোর্ডকে নাটকীয় ম্যাচে ২-১ গোলে পরাজিত করেছিল মিকেল আর্তেতার দল। 
শিরোপা লড়াইয়ে গত মৌসুমের মতই স্বপ্ন দেখতে থাকা আর্সেনাল লিগের পরবর্তী ম্যাচে আগামী ৩১ মার্চ সিটি সফরে যাবে। এই ম্যাচটিকে সম্ভাব্য শিরোপা নির্ধারনী ম্যাচ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
২৩ মিনিটে দারুন এক সেট পিস থেকে কাল এগিয়ে গিয়েছিল সিটি। কেভিন ডি ব্রুইনার লো কর্ণার থেকে পোস্টের খুব কাছে থেকে বল জালে জড়ান স্টোনস। ৫০ মিনিটে সিটি ডিফেন্ডার নাথান এ্যাকের ব্যাক পাসে ডারউইন নুনেজ বল পেয়ে যান। গোলরক্ষক এডারসন লাইন ছেড়ে বেরিয়ে এসে নুনেজকে আটকাতে গিয়ে ফাউল করে বসেন। স্পট কিক থেকে এডারসনকে পরাস্ত করেন ম্যাক এ্যালিস্টার। জেরেমি ডকুর বল পোস্টে লাগলে হতাশ হতে হয় সিটিকে। 
এই ম্যাচটিকে ঘিড়ে মূলত দুই দলের দুই অভিজ্ঞ কোচ জার্গেন ক্লপ ও পেপ গার্দিওলার মধ্যকার লড়াইয়ে কে বিজয়ী হয় সেটাই মূখ্য হয়ে উঠেছিল। বিশেষ করে মৌসুমের শেষে ক্লপের লিভারপুল ছাড়ার ঘোষনায় ধরেই নেয়া হয়েছে ইংলিশ লিগে অন্যতম জনপ্রিয় এই দুই কোচের দ্বৈরথ ভবিষ্যতে আর কখনই দেখা যাবেনা। এখনো যেহেতু দুই দলই শিরোপার অপেক্ষায় রয়েছে সে কারনে কোচদের মধ্যেও সেই উত্তেজনা টিকে থাকলো। যদিও গার্দিওলা ম্যাচ শেষে ক্লপকে উষ্ণ বিদায় জানাতে ভুল করেননি। 
এদিকে দিনের আরেক গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে স্পার্স বস আনগে পোস্তেকোগ্লু জানতেন ভিলা পার্কে পরাজয় মানে প্রতিপক্ষের হাতে টেবিলের চতুর্থ স্থানটি ছেড়ে দেয়া। যদিও শেষ পর্যন্ত তা হতে দেয়নি তার শিষ্যরা। বৃষ্টি বিঘিœত ম্যাচটিতে দ্বিতীয়ার্ধের চার গোলে টটেনহ্যাম বড় জয় নিয়েই মাঠ ছেড়েছে। 
জেমস ম্যাডিসন প্রথমে গোল করে সফরকারী টটেনহ্যামকে এগিয়ে দেন। ব্রেনান জনসন ব্যবধান দ্বিগুন করেন। ডেসটিনি উডোগিতে বিপদজনক ভাবে ফাউলের অপরাধে লাল কার্ড পেয়ে মাঠ ছাড়তে বাধ্য হন ভিলা অধিনায়ক জন ম্যাকগিন। স্টপেজ টাইমে সন হেয়াং-মিন ও টিমো ওয়ার্নারের দুই গোলে টটেনহ্যামের জয় নিশ্চিত হয়। এই জয়ে ভিলার থেকে দুই পয়েন্ট পিছিয়ে টেবিলের পঞ্চম স্থানে রয়েছে টটেনহ্যাম, হাতে আবার এক ম্যাচ বেশী রয়েছে। 
ম্যাচ শেষে পোস্তেকোগ্লু বলেছেন, ‘আমরা ভিলার জন্য সমীকরন কঠিন করে দিয়েছি। এখন তাদের কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। দ্বিতীয়ার্ধে আমরা নিজেদের ভাল খেলার পুরস্কার পেয়েছি। সবাই জানতো এটা আমাদের জন্য জীবন-মরন ম্যাচ। আমি প্রমান করতে পেরেছি এখনো আমরা শেষ হয়ে  যাইনি। এর অর্থ হচ্ছে আমরা শীর্ষ চারে টিকে থাকার অন্যতম দাবীদার।’
১৯৮৩ সালের পর প্রথমবারের মত চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলার স্বপ্ন ধরে রেখেছে ভিলা। কিন্তু এই ম্যাচটিতে পরাজয় তাদের  অনেকটাই পিছিয়ে দিবে। ভিলা বস উনাই এমেরি বলেছেন, ‘আমাদের অবশ্যই আবেগ প্রশমিত করতে হবে। প্রথম দুটি গোল হজম করা ঠিক হয়নি।’
লন্ডন স্টেডিয়ামে বার্নলি দুই গোলে এগিয়ে থেকেও ড্যানি ইনগিসের শেষ মুহূর্তের গোলে ওয়েস্ট হ্যামের সাথে ২-২ গোলের ড্র নিয়ে মাঠ ছেড়েছে বার্নলি ।  এই ড্রয়ে ভিনসেন্ট কোম্পানীর দল শেফিল্ড ইউনাইটেডকে টপকে ১৯তম স্থানে উঠে এসেছে। কিন্তু লিগে টিকে থাকতে মরিয়া বার্নলির জন্য এই ম্যাচটাতে জয় খুবই জরুরী ছিল। বিশেষ করে দুই গোলে এগিয়ে থেকেও তা ধরে রাখতে না পারা ছিল চরম হতাশার। এই মুহূর্তে সেফটি জোন থেকে এখনো ১০ পয়েন্ট দুরে রয়েছে বার্নলি, হাতে রয়েছে ১০ ম্যাচ। 
ব্রাইটনের কাছে ১-০ গোলে পরাজিত হয়ে আরো পিছিয়ে গেছে নটিংহ্যাম ফরেস্ট। এই পরাজয়ে রেলিগেশন শঙ্কা থেকে নিজেদের রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে ১৭তম স্থানে থাকা ফরেস্ট। তিন ম্যাচ পর জয়ের দেখা পাওয়া ব্রাইটন অষ্টম স্থানে উঠে এসেছে।