শিরোনাম
ম্যানচেস্টার (যুক্তরাজ্য), ১৮ এপ্রিল, ২০২৪ (বাসস/এএফপি) : কোয়ার্টার ফাইনালে ম্যানচেস্টার সিটিকে পেনাল্টিতে ৪-৩ গোলে পরাজিত করে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে রিয়াল মাদ্রিদ। এর মাধ্যমে গত আসরের মধুর প্রতিশোধও আদায় করে নিয়েছে গ্যালাকটিকোরা।
ইত্তিহাদ স্টেডিয়ামে রডরিগোর গোলে এগিয়ে গিয়েছিল সফরকারী মাদ্রিদ। কেভিন ডি ব্রুইনা দ্বিতীয়ার্ধে সিটিকে সমতায় ফেরালে নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময় মিলিয়ে ম্যাচটি দুই লেগে ৪-৪ ব্যবধানে শেষ হয়। এরপর ভাগ্য নির্ধারনের জন্য পেনাল্টির প্রয়োজন হয়। টাই ব্রেকারে মাদ্রিদের অনিয়মিত গোলরক্ষক আন্দ্রি লুনিন বার্নান্ডো সিলভা ও মাতেও কোভাচিচের শট রুখে দেন। এর মাধ্যমে সিটির শিরোপা ধরে রাখার স্বপ্নভঙ্গ হয়। ইউক্রেনিয়ান গোলরক্ষক এ মৌসুমে ইনজুরিতে থাকা এক নম্বর গোলরক্ষক থিবো কোর্তোয়ার ডেপুটি হিসেবে খেলে যাচ্ছেন। প্রথম লেগে তিনি যে ভুলগুলো করেছিলেন তারই খেসারত কাল দিয়েছেন।
শেষ চারে মাদ্রিদের প্রতিপক্ষ বায়ার্ন মিউনিখ। গতকাল জার্মান জায়ান্টরা আরেক ইংলিশ ক্লাব আর্সেনালকে দুই লেগ মিলিয়ে ৩-২ ব্যবধানে বিদায় করে শেষ চারের টিকেট কেটেছে।
২০১৮ সালের পর থেকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ঘরের মাঠে কোন ম্যাচে হারেনি সিটি। কিন্তু গতকাল রেকর্ড ১৪ বারের বিজয়ী মাদ্রিদের জেদী রক্ষনভাগকে ভাঙ্গা সম্ভব হয়নি। গোলের জন্য সিটি ৩৪ বার চেষ্টা চালিয়েছে। বলের পজিশন ৭২ শতাংশ নিজেদের মধ্যে রাখলেও শেষ রক্ষা করতে পারেনি।
১১ মাস আগে এই ইত্তিহাদ স্টেডিয়ামেই সিটির কাছে ৪-০ গোলে বিধ্বস্ত হয়ে সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নিয়েছিল মাদ্রিদ। ঐ আসরে পেপ গার্দিওলার দল প্রথমবারের মত চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপা জয় করে। দুই বছর আগে সেমিফাইনালের প্রথম লেগে ঘরের মাঠে ৪-৩ গোলে জয়ী হলেও দ্বিতীয় লেগে মাদ্রিদ ঠিকই ফিরে এসেছিল।
কাল ম্যাচ শেষে সিটি বস গার্দিওলা বলেছেন, ‘অন্য খেলায় এ ধরনের পরিসংখ্যানে সাধারণত একটি দল জয়ী হয়। কিন্তু ফুটবল এমনই। মাদ্রিদকে অভিনন্দন। কারন তাদের মধ্যে ম্যাচ ধরে রাখার ক্ষমতা আছে। শেষ পর্যন্ত তারা লড়াই চালিয়ে গেছে। শেষ পাস কিংবা শেষ শটে আমরা গোল আদায় করতে পারিনি। আমার মধ্যে কোন আফসোস নেই। সবসময়ই আমরা গোলের সুযোগ তৈরী করেছি, ম্যাচ জয়ের জন্য যা কিছু করা দরকার আমরা করেছি।’
কার্লো আনচেলত্তির দল রিয়াল কাল জয়ের জন্য প্রথম থেকেই মরিয়া হয়ে উঠেছিল। তার ফলও তারা পেয়েছে। বেলিংহামই প্রথম সুযোগ পেয়েছিল। কিন্তু ডানদিক থেকে তার প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। ১২ মিনিটে ডানদিক থেকে আরো একটি সংঘবদ্ধ আক্রমনে বেলিংহামের দারুন এক পাস থেকে ভিনিসিয়াস জুনিয়র ফাঁকায় দাঁড়ানো রডরিগোর দিকে বল বাড়িয়ে দেন। রডরিগোর প্রথম সুযোগের শটটি এডারসন রুখে দিলেও ফিরতি শটে ঠিকই তিনি বল জালে জড়ান। সমতায় ফিরতে সিটিতে ৭৬ মিনিট পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছে। রিয়ালের বিপক্ষে টানা চার ম্যাচে গোল করতে ব্যর্থ হলেন সিটি স্ট্রাইকার আর্লিং হালান্ড। যদিও রডরিগোর গোলের পরপরই তার একটি হেড ক্রসবারে লেগেে ফরত আসে। ফিরতি বলটি সিলভা কাজে লাগাতে পারেননি।
বক্সের বাইরে থেকে ডি ব্রুইনার একটি শট লুনিন দারুন দক্ষতায় রুখে দেন। জ্যাক গ্রিলিশের ডিফ্লেকটেড শট সাইড নেটে লেগে বাইরে চলে যায়।
দ্বিতীয়ার্ধ শুরু পর গ্রিলিশের আরো দুটি শট রুখে দিয়েছে লুনিন। ৭২ মিনিটে গ্রিলিশের স্থানে জেরেমি ডকুকে মাঠে নামান গার্দিওলা। এই পরিবর্তনেই ঘুড়ে দাঁড়ায় সিটি। ডকুর নিখুঁত ক্রসে ম্যাচ শেষের ১৪ মিনিট আগে ডি ব্রুইনার জোড়ালো শটে সমতায় ফিরে সিটিজেনরা। এরপর আরো একটি ভাল সুযোগ পেয়েছিলেন ডি ব্রুইনা। কিন্তু এবার তার শটটি ক্রসবারের উপর দিয়ে বাইরে চলে যায়।
অতিরিক্ত সময়ে হালান্ড ও ডি ব্রুইনাকে বদলী বেঞ্চে পাঠাতে বাধ্য হন গার্দিওলা। অতিরিক্ত সময়ের ৩০ মিনিটে মাদ্রিদের হয়ে সবচয়ে সহজ সুযোগ হাতছাড়া করেন রুডিগার।
টাই ব্রেকারে লুকা মড্রিচের শট আটকে গিয়ে এডারসন প্রথমে সিটিকে এগিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু সিলভা ও কোভাচিককে হতাশ করে লুনিন মাদ্রিদকে জয় উপহার দেন। বেলিংহাম, লুকাস ভাসকুয়েজ ও নাচো মাদ্রিদের হয়ে গোল করেছেন।