শিরোনাম
মিউনিখ (জার্মানী), ১৮ এপ্রিল ২০২৪ (বাসস/এএফপি) : জসুয়া কিমিচের একমাত্র গোলে আর্সেনালকে কোয়ার্টার ফাইনালে ইংলিশ ক্লাব আর্সেনালকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে জার্মান ক্লাব বায়ার্ন মিউনিখ। দুই লেগ মিলিয়ে আর্সেনালকে ৩-২ ব্যবধানে পিছনে ফেলে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে বায়ার্ন মিউনিখ। ঘরের মাঠ আলিয়াঁজ এরেনাতে ৬৩ মিনিটে জয়সূচক গোলটি করেন কিমিচ।
এর আগে লন্ডনে প্রথম লেগের ম্যাচটি ২-২ গোলে ড্র হয়েছিল। ২০২০ সালে শিরোপা জয়ের পর এটাই বায়ার্নের প্রথম সেমিফাইনাল। শেষ চারে জার্মান জায়ান্টদের প্রতিপক্ষ রেকর্ড ১৪ বারের বিজয়ী রিয়াল মাদ্রিদ।
এর মাধ্যমে সপ্তাহের বাজে সময়টা কাটিয়ে উঠতে পারলো না আর্সেনাল। রোববার বছরের প্রথম পরাজয়ে প্রিমিয়ার লিগের শীর্ষস্থানও ম্যানচেস্টার সিটির কাছে হারিয়েছে মিকেল আর্তেতার দল।
ম্যাচ শেষে বায়ার্ন স্ট্রাইকার হ্যারি কেন বলেছেন, ‘আমাদের এখন এই জয় উপভোগের সময়। প্রথমার্ধটা কিছুটা কঠিন হলেও আমরা ম্যাচ ছেড়ে দেইনি। এই ধরনের ম্যাচে এগিয়ে যাওয়া খুবই কঠিন। আমরা নিজেদের পথ খুঁজে নিয়েছি। সেমিফাইনালও নি:সন্দেহে কঠিন হবে।’
আর্সেনাল বস মিকেল আর্তেতা বলেছে তারা যেকোন মূল্যে এই ম্যাচে জিততে চেয়েছিল, ‘আমাদের মত ক্লাবের এই পর্যায়ে আসতে ছয় থেকে সাত বছর লেগে যায়। আমরা ফাইনালের অনেকটাই কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিলাম।’
গত সপ্তাহে লন্ডনের ম্যাচটি বেশ উত্তেজনাকর হলেও কাল তার ছিটেফোঁটাও ছিলনা। দুই দলই গোলের খুব একটা সুযোগ তৈরী করতে পারেনি। দ্বিতীয়ার্ধে মাঝামাঝিতে বায়ার্ন কিছুটা জ¦লে ওঠে, তারই ফল পায় তারা। রাফায়েল গুয়েরেইরোর চিপে বক্সের ভিতর থেকে কিমিচের গোলে বায়ার্নের জয় নিশ্চিত হয়। বায়ার্নের ইনজুরি সমস্যার কারনে উইং-ব্যাক থেকে গুয়েরেইরোকে ফরোয়ার্ড লাইনে খেলানো হয়েছে। নিজের স্বাভাবিক ডিফেন্সিফ দায়িত্ব থেকে ভিন্ন ভূমিকায় দারুনভাবে প্রমান করেছেন গুয়েরেইরো।
ছয়বারের চ্যাম্পিয়ন বায়ার্নেও সাথে বুন্দেসলিগার আরো একটি ক্লাব বরুসিয়া ডর্টমুন্ডও সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে। শেষ চারে বরুশিয়ার প্রতিপক্ষ পিএসজি।
আর্সেনালের সাবেক উইঙ্গার সার্জি গ্যানাব্রিসহ আক্রমনভাগে বেশ কয়েকজন তারকাকে ইনজুরির কারনে হারিয়েছে বায়ার্ন। কেনের সাথে প্রথম লেগে গোল করেছিলেন গ্যানাব্রি। কাল কিংসলে কোম্যানও দলের বাইরে ছিলেন। সে কারনেই কোচ থমাস টাচেল গুয়েরেইরোকে নতুন দায়িত্বে মাঠে নামান। টাচেলের এই সিদ্ধান্ত শুরু থেকেই কাজে এসেছে। পর্তুগীজ এই ডিফেন্ডার বামদিক থেকে দারুন সব আক্রমনের নেতৃত্ব দিয়েছেন। মধ্যমাঠ থেকে তাকে দারুন সহযোগিতা করেছে জামাল মুসিয়ালা।
অন্যদিকে জ্যাকুব কিউরের স্থানে লেফট-ব্যাক পজিশনে লেরয় সানেকে আটকানোর জন্য আর্তেতা টাকেহিরো টোমিইয়াসুর উপর আস্থা রেখেছিলেন। কিন্তু ডিসেম্বরের পর প্রথমবারের মত মূল দলে খেলতে নেমে এই জাপানীজ ডিফেন্ডার বারবার ছন্দ হারিয়েছেন। মুসিয়ালার পাস সম্পূর্ণ ভুলভাবে আটকাতে গেলে সানে বল পেয়ে যান। যদিও সানের শট কর্ণারের মাধ্যমে রক্ষা করেন গানার্স গোলরক্ষক ডেভিড রায়া। প্রথমার্ধে সফরকারীদের সবচেয়ে বিপদজনক খেলোয়াড় হয়ে উঠেছিলেন গ্যাব্রিয়েল মার্টিনেলি। ৭ মিনিটে তার কার্লিং শট অল্পের জন্য পোস্টের বাইরে দিয়ে চলে যায়। এরপর ৩০ মিনিটে আরো একটি শট সরাসরি ম্যানুয়েল নয়্যারের হাতে ধরা পড়ে।
বিরতির পর ম্যাচের নিয়ন্ত্রন নিজেদের করে নেয় বায়ার্ন। কিমিচের ক্রস থেকে লিও গোরেতকার হেড পোস্টে লেগে ফেরত আসে। ৬৩ মিনিটে আর কোন ভুল করেননি কিমিচ। গুয়েরেইরোর চিপ থেকে দারুন এক হেডে তিনি বায়ার্নকে এগিয়ে দেন। কেনের পাসে ফাঁকায় দাঁড়ানো সানে ব্যবধান দ্বিগুন করতে ব্যর্থ হন। ইনজুরি টাইমে আর্সেনালও ম্যাচে ফিরে আসার সুযোগ তৈরী করেছিল। কেই হাভার্টজ ও বুকায়ো সাকা মিলে গোল আদায় করতে পারেননি। আর এতেই ২০০৯ সালের পর প্রথমবারের মত আর্সেনালের চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালে খেলার স্বপ্ন শেষ হয়ে যায়।