শিরোনাম
লন্ডন, ৫ মে ২০২৪ (বাসস/এএফপি) : আর্লিং হালান্ডের চার গোলে শনিবার প্রিমিয়ার লিগে উল্ফসকে ৫-১ ব্যবধানে বিধ্বস্ত করেছে ম্যানচেস্টার সিটি। দিনের আরেক ম্যাচে শীর্ষে থাকা আর্সেনাল ৩-০ গোলেবোর্নমাউথকে পরাজিত করে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য সিটির থেকে চার পয়েন্টের লিড নিয়েছিল।
আর্সেনালের এই জয়ের মাত্র ঘন্টাখানেক পর ইত্তিহাদ স্টেডিয়ামে সিটির দাপুটে জয় নিশ্চিত হয়।
১২ মিনিটে রায়ান এইত-নৌরির বিপক্ষে জাসকো গাভারডিওলের আদায় করা পেনাল্টি থেকে হালান্ড গোলক্ষক হোসে সাকে পরাস্ত করলে এগিয়ে যায় সিটি। ৩৫ মিনিটে রড্রির ক্রস থেকে দারুন এক হেডে ব্যবধান দ্বিগুন করেন হালান্ড। প্রথমার্ধের স্টপেজ টাইমে ডি বক্সের মধ্যে হালান্ডকে ফাউল করেন উল্ফস ডিফেন্ডার নেলমন সেমেডো। নরওয়েজিয়ান স্ট্রাইকার স্পট কিক থেকে আবারো গোল করলে ৩-০ গোলের লিড নিয়ে বিরতিতে যায় স্বাগতিকরা।
সিটি গোলরক্ষক এডারসনের ভুলে ৫৩ মিনিটে হওয়ায় হি-চ্যান উল্ফসের হয়ে এক গোল পরিশোধ করেন। ৫৪ মিনিটে কোনাকুনি শটে হালান্ড সিটির হয়ে চতুর্থ গোলটি করেন। এর মাধ্যমে মৌসুমে সব ধরনের প্রতিযোগিতায় হালান্ড ৩৬ গোল করার কৃতিত্ব দেখালেন। ৮২ মিনিটে জুলিয়ান আলভারেজকে জায়গা ছেড়ে দেবার সময় মাঠ থেকে বের হতে হালান্ডকে কিছুটা অখুশী মনে হয়েছে। ৮৫ মিনিটে এই আলভারেজের গোলে সিটির বড় জয় নিশ্চিত হয়। লিগে এটি সিটির টানা ষষ্ঠ জয়। এনিয়ে সব ধরনের প্রতিযোগিতায় টানা ২০ ম্যাচে অপরাজিত থাকলো সিটিজেনরা। শেষ তিনটি ম্যাচে জয়ী হতে পারলে টানা চতুর্থবারের মত ইংলিশ লিগ শিরোপা জয়ের বিরল কৃতিত্ব অর্জন করবে সিটি। আর্সেনালের চেয়ে এক ম্যাচ কম খেলায় সিটির সামনে সেই সম্ভাবনা এখন উজ্জ্বল।
আগামী শনিকার তাদের প্রতিপক্ষ ফুলহ্যাম। এরপর ১৪ মে টটেনহ্যাম ও পাঁচদিন পর ওয়েস্ট হ্যামের মোকাবেলা করতে পেপ গার্দিওলার দল। কাল ম্যাচ শেষে গার্দিওলা বলেছেন, ‘বাকি তিন ম্যাচের মধ্যে আশা করছি প্রথম দুটিতে জয়ী হতে পারবো। তৃতীয়টির ভাগ্য আমাদের উপর নির্ভর করছে।’
বদলী বেঞ্চে আসার সময় হালান্ডের প্রতিক্রিয়া প্রসঙ্গে গার্দিওলা বলেন, ‘সে রেফারির উপর হতাশ হয়েছিল। লম্বা কিছু পাসে মাঝে মাঝে তাকে ধাক্কা দেয়া হচ্ছিল, অনেক ক্ষেত্রে রেফারি সেগুলো এড়িয়ে গেছে, যে কারনে তাকে হতাশ হতে দেখা গেছে। কিন্তু হালান্ড তার স্বরূপে ফিরেছে। পেনাল্টিগুলো নিশ্চিত করেছে। তবে তার দ্বিতীয় ও চতুর্থ গোলটি ছিল অবিশ^াস্য।’
এদিকে এমিরেটস স্টেডিয়ামে আর্সেনাল টানা চতুর্থ জয় তুলে নিয়েছে। বিরতির ঠিক আগে বুকায়ো সাকার পেনাল্টিতে গানার্সরা এগিয়ে যায়। লিয়ান্ড্রো ট্রোসার্ড ৭০ মিনিটে বোর্নমাউথ গোলরক্ষক মার্ক ট্রেভার্সকে পরাস্ত করলে ব্যবধান দ্বিগুন হয়। স্টপেজ টাইমে ডিক্লান রাইস দলের হয়ে তৃতীয় গোলটি করেছেন।
২০০৪ সালের পর থেকে প্রথমবারের মত লিগ শিরোপা জয়ের দ্বারপ্রান্তে থাকা আর্সেনালের এটি প্রিমিয়ার লিগে ২৬তম জয়। এর মাধ্যমে ক্লাব ইতিহাসে এক মৌসুমে লিগে সবচেয়ে বেশী ম্যাচ জয়ের রেকর্ড তারা স্পর্শ করেছে। গানার্স বস মিকেল আর্তেতা বলেছেন, ‘এটা সম্ভবত এবারের মৌসুমে আমাদের খেলা সেরা প্রথমার্ধ ছিল। আমরা সত্যিই অবিশ^াস্য খেলেছি, সবাই নিজ নিজ পজিশন থেকে দলকে এগিয়ে নেবার চেষ্টা করেছে। বল নিয়ে আমরা দারুন সংঘবদ্ধ একটি দল হিসেবে নিজেদের প্রমান করেছি। যে কয়টি সুযোগ আমরা তৈরী করেছি তাতে সহজেই চার থেকে পাঁচটি গোল হতে পারতো।’
আগামী সপ্তাহে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড সফরে যাবে আর্সেনাল। এরপর ১৯ মে শেষ ম্যাচে এভারটনকে আতিথ্য দিবে।
আরেক ম্যাচে টার্ফ মুরে নিউক্যাসলের কাছে ৪-১ গোলে বিধ্বস্ত হয়ে রেলিগেশন এড়ানোর স্বপ্নে বড় ধাক্কা খেয়েছে বার্নলি। ভিনসেন্ট কোম্পানির দল এই মুহূর্তে তলানির থেকে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে, সেফটি জোন থেকে তারা পাঁচ পয়েন্ট দুরে রয়েছে। নিউক্যাসলের হয়ে প্রথমার্ধে গোল করেছেন ক্যালুম উইলসন, সিন লংস্টাফ ও ব্রুনো গুইমারায়েস। বিরতির পরপরই আলেক্সান্দার ইসাকের পেনাল্টি রুখে দেন বার্নলি গোলরক্ষক আরিজানেত মুরিচ। কিন্তু তিন মিনিট পর ৫৫ মিনিটে ইসাক গোল করে তার ভুলের মাশুল দিয়েছেন। মৌসুমে এটি ইসাকের ২০তম গোল। ডারা ও’শিয়ার ৮৬ মিনিটের হেড শেষ পর্যন্ত সান্তনা হয়েই থেকেছে।
দিনের আরেক ম্যাচে ব্রামাল লেনে ইতোমধ্যেই রেলিগেটেড হয়ে যাওয়া শেফিল্ড ইউনাইটেডকে ৩-১ গোলে হারিয়ে তলানির চতুর্থ দল নটিংহ্যাম ফরেস্ট সেফটি জোনে নিজেদের অবস্থান মজবুত করেছে। এর মাধ্যমে ৩৮ ম্যাচের প্রিমিয়ার লিগের মৌসুমে প্রথম ক্লাব হিসেবে শেফিল্ড ১০০ গোল হজমের বাজে রেকর্ড গড়েছে।