শিরোনাম
প্যারিস, ১১ জুন ২০২৪ (বাসস/এএফপি) : ইউরো ২০২৪ চ্যাম্পিয়নশীপে গ্রুপ-ডি’তে ফ্রান্স নিশ্চিতভাবেই ফেবারিট হিসেবে মাঠে নামবে। যদিও নেদারল্যান্ডস ও উজ্জীবিত অস্ট্রিয়াও ছেড়ে কথা বলবে না। প্রথম রাউন্ডে তাই কোভাবেই নির্ভার হতে পারছে না তারকা সমৃদ্ধ ফরাসিরা।
এবারের আসরে শিরোপা জয়ে ফ্রান্সকে অন্যতম ফেবারিট হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। কিন্তু ২০২২ বিশ^কপের রানার্স-আপ দলটির বর্তমান অবস্থা অনেক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। মার্চে ঘরের মাঠে প্রীতি ম্যাচে জার্মানীর কাছে হারের কয়েকদিন পর চিলিকে কোনমতে হারিয়েছে ফ্রান্স। দিদিয়ের দেশ্যমের দলের ফর্ম নিয়ে তখন থেকেই শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
দলের মূল তারকা কিলিয়ান এমবাপ্পের ফর্ম নিয়েও কিছুটা শঙ্কা রয়েছে। মৌসুমের শেষ মাসটিতে পিএসজির হয়ে নিয়মিত ছিলেন না। মৌসুম শেষে ক্লাব ছেড়ে যাবার ঘোষনায় পিএসজি তাকে খেলাতে চায়নি। পরে রিয়াল মাদ্রিদে যোগ দিয়ে ট্রান্সফার মার্কেটের বহুল প্রতিক্ষীত গুঞ্জনের অবসান ঘটিয়েছেন এমবাপ্পে।
এমবাপ্পের ফর্ম নিয়ে অবশ্য এই মুহূর্তে কোন শঙ্কা দেখছেন না দেশ্যম। তার মতে এক মৌসুমে যে ৪৪ গোল করতে পারে তাকে নিয়ে আবার দু:শ্চিন্তা কিসের।
তবে দেশ্যমের রক্ষনভাগের ফর্ম ও ফিটনেস নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। শুধুমাত্র ডায়ট উপমেকানো নয়, মধ্যমাঠে মূল খেলোয়াড় অরেলিয়েন টিচুয়ামেনির পায়ের ইনজুরি থেকে পুরোপুরি সুস্থ হয়ে ওঠা নিয়েও দু:শ্চিন্তা রয়েছে। এই ইনজুরির কারনে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনাল থেকে তিনি ছিটকে গিয়েছিলেন।
ইউরোতে গ্রুপ পর্বে ২৪ দলের মধ্যে ছয় গ্রুপের শীর্ষ দুই দলের সাথে সেরা চারটি তৃতীয় স্থান পাওয়া দল পরের রাউন্ডে যাবে। এ কারনেই ফ্রান্সের নক আউটে যাবার কোন কারনই নেই। দেশ্যমের অধীনে শেষ দুটি ইউরোতে হতাশাজনক বিদায় নিতে হয়েছিল ফ্রান্সকে। ২০১৬ সালে ঘরের মাঠে ফাইনালে পর্তুগালের কাছে ও ২০২১ সালে শেষ ষোলতে সুইজারল্যান্ডের কাছে পেনাল্টিতে পরাজিত হয় ফরাসিরা।
এই গ্রুপের পরবর্তী শক্তিশালী দল নেদারল্যান্ডস। বাছাইপর্বে তারা হোম ও এ্যাওয়ে ম্যাচে ফ্রান্সের কাছে পরাজিত হয়েছিল। যে কারনে দুই দলের মধ্যে পার্থক্য সুস্পষ্ট। বিশ^কাপের কোয়ার্টার ফাইনালিস্ট ডাচরা লুইস ফন গালের স্থলাভিষিক্ত রোনাল্ড কোম্যানের অধীনে ঘুড়ে দাঁড়িয়েছে। দ্বিতীয় মেয়াদে কোম্যান নেদারল্যান্ডসের দায়িত্ব নিয়েছেন। ১৯৮৮ সালের ইউরো জয়ী রুড গুলিত, মার্কো ফন বাস্তেন, ফ্রাঙ্ক রাইকার্ডদের নিয়ে সাজানো ডাচ দলটিকে এখনো সবাই মনে রেখেছে। কিন্তু ২০০৪ সালের পর থেকে এখন পর্যন্ত নক আউট পর্বে কোন ম্যাচ তারা জিততে পারেনি।
কোম্যানের হাতে হয়তো বেশ কয়েকজন শীর্ষ সারির খেলোয়াড় রয়েছে যার মধ্যে অন্যতম ভার্জিল ফন ডাইক, জেরেমি ফ্রিমপং ও ২১ বছর বয়সী মিডফিল্ডার জাভি সাইমন্স। তবে বার্সেলোনা মিডফিল্ডার ফ্রেংকি ডি জংয়ের গোঁড়ালির ইনজুরির কারনে ছিটকে পড়া নেদারল্যান্ডসের জন্য বড় শঙ্কা হিসেবে দেখা দিয়েছে।
প্লে-অফে পেনাল্টিতে ওয়েলসকে হারিয়ে পোল্যান্ড মূল পর্বের টিকেট পেয়েছে। বাছাইপর্বে আলবেনিয়া ও মলডোভার কাছে হেরে তারা হতাশ করেছিল। অনুর্ধ্ব-২১ দলের কোচ থেকে জাতীয় দলের কোচ হিসেবে সাবেক বস ফার্নান্দো সান্তোসের ছাঁটাইয়ের সুবাদে দায়িত্ব পাওয়া মিশেল প্রোবিয়েরাজের অধীনে বাছাইপর্ব উতরে যায় পোল্যান্ড। আবারো দলের মূল ভরসা ৩৫ বছর বয়সী তারকা ফরোয়ার্ড রবার্ট লিওয়ানদোস্কি। পোল্যান্ডের জার্সি গায়ে সম্ভবত এটাই তার শেষ বড় কোন টুর্ণামেন্ট।
তবে দলের অন্যান্য তারকা গোলরক্ষক ওজিচে সিজিসনি, মিডফিল্ডার পিওটর জিয়েলিনিস্কর উপরও কোচ নির্ভর করছেন।
তবে অস্ট্রিয়াও এই গ্রুপে বিস্ময় ঘটাতে পুরোপুরি প্রস্তুত। যদিও তারকা খেলোয়াড় ডেভিড আলাবা হাঁটুর লিগামেন্টের গুরুতর ইনজুরি থেকে সময়মত সুস্থ হয়ে উঠতে পারেননি। রাল্ফ রাংনিকের অধীনে পুনরুজ্জীবিত অস্ট্রিয়া বাছাইপর্বে বেলজিয়ামের পরে দ্বিতীয় স্থান লাভ করেছিল। সম্প্রতি প্রীতি ম্যাচে জার্মানীকে ২-০ ও তুরষ্ককে ৬-১ গোলে বিধ্বস্ত করেছে অস্ট্রিয়া।
দলের বেশীরভাগ খেলোয়াড়ের বুন্দেসলিগা খেলার অভিজ্ঞতা জার্মানীর মাটিতে অনুষ্ঠিত ইউরোতে কাজে লাগাতে চান অস্ট্রিয়ান কোচ রাংনিক।