বাসস
  ২৪ জুন ২০২৪, ১৩:১০

ওয়েস্ট ইন্ডিজকে বিদায় করে সেমিফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকা

অ্যান্টিগা, ২৪ জুন ২০২৪ (বাসস) : স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজকে বিদায় করে সুপার এইটে গ্রুপ-২ থেকে দ্বিতীয় ও শেষ দল হিসেবে সেমিফাইনালে উঠেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। আজ সকালে অলিখিত কোয়ার্টার ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকা বৃষ্টি আইনে ৩ উইকেটে হারিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। এই জয়ে এই গ্রুপে ৩ ম্যাচে ৩ জয়ে পূর্ণ ৬ পয়েন্ট নিয়ে সেমিতে উঠে প্রোটিয়ারা। ৩ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় দল হিসেবে গতরাতেই সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছিলো ইংল্যান্ড। ৩ ম্যাচে ২ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের তৃতীয় স্থানে থাকায় সুপার এইট থেকে বিশ^কাপ শেষ করলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ২০১৬ সালের পর কোন আসরেই সেমিফাইনালে খেলতে পারেনি ক্যারিবীয়রা।
অ্যান্টিগায় টস হেরে প্রথমে ব্যাট করে নেমে ৫ রানে ২ উইকেট হারিয়ে শুরুতেই চাপে পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শাই হোপ শূণ্য ও নিকোলাস পুরান ১ রানে আউট হন। তৃতীয় উইকেটে ৬৫ বলে ৮১ রানের জুটিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে লড়াইয়ে ফেরান এবারের আসরে প্রথম খেলতে নামা কাইল মায়ার্স ও রোস্টন চেজ। এই জুটি গড়ার পথে তিনটি ক্যাচ ফেলেন দক্ষিণ আফ্রিকান ফিল্ডাররা। ১২তম ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকার স্পিনার তাবরাইজ শামসির বলে আউট হন ৩টি চার ও ২টি ছক্কায় ৩৫ রান করা মায়ার্স।
১২তম ওভারে দলীয় ৮৬ রানে মায়ার্স ফেরার পর বিপদ বাড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারালে বড় সংগ্রহ পায়নি ক্যারিবীয়রা। ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৩৫ রান পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ৪২ বল খেলে ৩টি চার ও ২টি ছক্কায় দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫২ রান করেন চেজ। শেষদিকে আন্দ্রে রাসেল ২টি ছক্কায় ৯ বলে ১৫ ও আলজারি জোসেফ ৭ বলে ১টি ছক্কায় অপরাজিত ১১ রান করেন। দক্ষিণ আফ্রিকার শামসি ২৭ রানে ৩ উইকেট নেন। এবারের বিশ^কাপে ৬২টি ছক্কা মেরেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের খেলোয়াড়রা। বিশ^কাপের এক আসরে কোন দলের সবচেয়ে বেশি ছক্কা মারার রেকর্ড এটি।
১৩৬ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে দ্বিতীয় ওভারে জোড়া উইকেট হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা। রেজা হেনড্রিক্সকে শূণ্য ও কুইন্টন ডি কককে ১২ রানে শিকার করেন পেসার আন্দ্রে রাসেল। ২ ওভারে ২ উইকেটে ১৫ রান পায় দক্ষিণ আফ্রিকা। এরপর বৃষ্টিতে প্রায় সোয়া এক ঘন্টা বন্ধ হয় খেলা। এতে ১৭ ওভারে ১২৩ রানের নতুন টার্গেট পায় দক্ষিণ আফ্রিকা।
খেলার শুরুর পর ষষ্ঠ ও অষ্টম ওভারে ২ উইকেট শিকার করে দক্ষিণ আফ্রিকাকে চাপে ফেলে দেন আলজারি জোসেফ। দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক আইডেন মার্করাম ১৮ ও হেনরিচ ক্লাসেন ২২ রানে আউট হন।
৭৭ রানে ৪ উইকেট পতনের পর ক্রিজে টিকে থাকতে সাবধানী হয়ে পড়েন ডেভিড মিলার। ১৪ বল খেলে মাত্র ৪ রান করে চেজের বলে বোল্ড হন মিলার।
মিলার যখন আউট হন তখন ৫ উইকেট হাতে নিয়ে ৩২ বলে ৩০ রান প্রয়োজন পড়ে দক্ষিণ আফ্রিকার। এরপর ট্রিস্টান স্টাবস ২৭ বলে ২৯ রান করে চেজের দ্বিতীয় শিকার হলে সাময়িক  ম্যাচে ফিরে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শেষ ২ ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকার ১৩ রানের প্রয়োজনে, ১৬তম ওভারের দ্বিতীয় বলে কেশব মহারাজকে শিকার করেন চেজ। ঐ অবস্থায় ম্যাচে টান-টান উত্তেজনা।
১৬তম ওভার থেকে ৮ রান এলে , শেষ ওভারে ৫ রান দরকার পড়ে দক্ষিণ আফ্রিকার। কিন্তু পেসার ওবেড ম্যাককয়ের করা ১৭তম ওভারের প্রথম বলে ছক্কা মেরে ২০১৪ সালের পর দক্ষিণ আফ্রিকাকে প্রথমবার সেমিফাইনালে তুলেন মার্কো জানসেন। ৭ উইকেটে ১২৪ রান করে প্রোটিয়ারা।
১টি করে চার-ছক্কায় ১৪ বলে অপরাজিত ২১ রান করেন জানসেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের চেজ ১২ রানে৩টি, রাসেল-জোসেফ ২টি করে উইকেট নেন। ম্যাচ সেরা হন শামসি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
ওয়েস্ট ইন্ডিজ : ১৩৫/৮, ২০ ওভার (চেজ ৫২, মায়ার্স ৩৫, শামসি ৩/২৭)।
দক্ষিণ আফ্রিকা (বৃষ্টি আইনে টার্গেট-১২৩) : ১২৪/৭, ১৬.১ ওভার (স্টাবস ২৯, ক্লাসেন ২২, চেজ ৩/১২)।
ফল : দক্ষিণ আফ্রিকা বৃষ্টি আইনে ৩ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচ সেরা : তাবরাইজ শামসি (দক্ষিণ আফ্রিকা)।