শিরোনাম
বার্মিংহাম, ২৫ জুলাই ২০২৪ (বাসস) : চতুর্থবারের মত ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হোয়াইটওয়াশের লক্ষ্য নিয়ে আগামীকাল তিন ম্যাচ সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টেস্ট খেলতে নামছে স্বাগতিক ইংল্যান্ড। প্রথম দুই টেস্ট জিতে ইতোমধ্যে সিরিজ জয় নিশ্চিত করেছে ইংলিশরা। জয়ের ধারা অব্যাহত রেখে ক্যারিবীয়দের হোয়াইটওয়াশ লক্ষ্য বেন স্টোকস-জো রুটদের। অন্যদিকে, প্রথম দুই ম্যাচে হারের হতাশা কাটিয়ে জয় দিয়ে সিরিজ শেষ করতে মরিয়া ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বার্মিংহামে বাংলাদেশ সময় বিকেল ৪টায় শুরু হবে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টেস্ট।
লর্ডসে সিরিজের প্রথম টেস্টে ইংল্যান্ড ইনিংস ও ১১৪ রানের বড় ব্যবধানে হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। ঐ টেস্ট দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে বিদায় নেন অভিজ্ঞ পেসার জেমস এন্ডারসন। অবসর নিলেও, এন্ডারসনকে ছাড়েনি ইংল্যান্ড। সিরিজের শেষ দুই ম্যাচে ইংল্যান্ডের বোলিং মেন্টর হিসেবে নিয়োগ পান এন্ডারসন।
প্রথম টেস্টে ব্যাট হাতে পুরোপুরি ব্যর্থ ছিলো ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটাররা। দুই ইনিংসে যথাক্রমে ১২১ ও ১৩৬ রান করে ক্যারিবীয়রা। তবে নটিংহামে দ্বিতীয় টেস্টে প্রথম ইনিংসে ব্যাট হাতে দারুন লড়াই করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। প্রথম ইনিংসে ইংল্যান্ডের ৪১৬ রানের জবাবে ৪৫৭ রান করে ক্যারিবীয়রা। কাভেম হজ ১২০ রানের লড়াকু ইনিংস খেলেন। এছাড়াও অ্যালিক আথানাজে ও উইকেটরক্ষক জশুয়া ডা সিলভা ৮২ রান করে করেন।
কিন্তু দ্বিতীয় ইনিংসে আবারও ব্যর্থ হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটাররা। দ্বিতীয় ইনিংসে জো রুট ও হ্যারি ব্রুকের জোড়া সেঞ্চুরিতে ৪২৫ রান তুলে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৩৮৫ রানের টার্গেট ছুঁড়ে দেয় ইংল্যান্ড। রুট ১২২ ও ব্রুক ১০৯ রান করেন। জবাবে ইংল্যান্ডের স্পিনার শোয়েব বশিরের ঘূর্ণিতে ১৪৩ রানে গুটিয়ে যায় ক্যারিবীয়রা। ২৪১ রানে টেস্ট জিতে সিরিজ নিজেদের করে নেয় ইংল্যান্ড।
সিরিজ হারের হতাশা ভুলে, শেষ টেস্টে জয় পেতে মরিয়া ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দলের উইকেটরক্ষক ডা সিলভা বলেন, ‘সত্যি বলতে, প্রথম দুই টেস্টে আমরা সেরা ক্রিকেট খেলিনি। দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসে ব্যাটিং ভালো হলেও, দ্বিতীয় ইনিংসে ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারিনি। ব্যাটারদের আরও বেশি দায়িত্বশীল হতে হবে। আশা করছি, শেষ টেস্টে ইংল্যান্ডের বোলারদের সামনে ব্যাটাররা প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারবে এবং বড় ইনিংস খেলতে সক্ষম হবে।’
টেস্ট ইতিহাসে এখন পর্যন্ত তিনবার ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হোয়াইটওয়াশ করে ইংল্যান্ড। ১৯২৮ সালে প্রথমবারের মত টেস্ট সিরিজে মুখোমুখি হয় ইংল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ঘরের মাঠে প্রথম সাক্ষাৎতেই ওয়েস্ট ইন্ডিজকে তিন ম্যাচের সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করে ইংলিশরা।
এরপর ২০০৪ সালে আবারও ঘরের মাঠে চার ম্যাচের সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হোয়াইটওয়াশের লজ্জা দেয় ইংল্যান্ড।
পাঁচ বছর পর অর্থাৎ ২০০৯ সালে তৃতীয়বারের মত ঘরের মাঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হোয়াইটওয়াশ করে ইংল্যান্ড। দুই ম্যাচের সিরিজ ২-০ ব্যবধানে জিতে নেয় ইংলিশরা। এখন চতুর্থবারের মত ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হোয়াইটওয়াশের সুযোগ ইংল্যান্ডের সামনে। এই সুযোগ কাজে লাগাতে মরিয়া ইংলিশ ব্যাটার ওলি পোপ।
দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসে ১২১ ও দ্বিতীয় ইনিংসে ৫১ রান করা পোপ বলেন, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হোয়াইটওয়াশের ভালো সুযোগ আমাদের সামনে। পারফরমেন্সের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে পারলে, তৃতীয় টেস্টেও জয় সম্ভব। শেষ টেস্ট জিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হোয়াইটওয়াশ করাই আমাদের এখন প্রধান লক্ষ্য। শেষ টেস্ট নিয়ে আমাদের কিছু পরিকল্পনা আছে। আক্রমনাত্মক ক্রিকেট খেলতে চাই আমরা; প্রথম দুই টেস্টে যা সহজে করতে পারিনি। আশা করছি, শেষ টেস্টে আরও ভালো কিছু হবে।’
ইংল্যান্ড-ওয়েস্ট ইন্ডিজের টেস্ট সিরিজটি বিশ^ টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অর্ন্তভুক্ত। এখন পর্যন্ত টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে ১২ ম্যাচ খেলে ৫ জয়, ৬ হার ও ১ ড্রতে ৩১ দশমিক ২৫ শতাংশ পয়েন্ট নিয়ে নয় দলের টেবিলে ষষ্ঠস্থানে আছে ইংল্যান্ড। অপরদিকে, দ্বিতীয় টেস্ট হেরে পয়েন্ট টেবিলে বাংলাদেশের নীচে নেমে গেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ৬ ম্যাচ খেলে ১ জয়, ৪ হার ও ১ ড্রতে ২২ দশমিক ২২ শতাংশ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের তলানিতে আছে ক্যারিবীয়রা। ৪ ম্যাচে ১ জয় ও ৩ হারে ২৫ শতাংশ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের অষ্টমস্থানে আছে বাংলাদেশ।
ইংল্যান্ড দল : বেন স্টোকস (অধিনায়ক), গাস অ্যাটকিনসন, শোয়েব বশির, হ্যারি ব্রুক, জ্যাক ক্রলি, বেন ডাকেট, ড্যান লরেন্স, ডিলন পেনিংটন, ওলি পোপ, ম্যাথু পটস, জো রুট, জেমি স্মিথ, ক্রিস ওকস, মার্ক উড।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল : ক্রেইগ ব্রার্থওয়েট (অধিনায়ক), জশুয়া ডি সিলভা, টেভিন ইমলাচ, মিকাইল লুইস, জাচারি ম্যাককাস্কি, কির্ক ম্যাকেঞ্জি, আলিক আথানাজে, কাভেম হজ, জেসন হোল্ডার, আলজারি জোসেফ, শামার জোসেফ, জার্মেই লুইস, গুদাকেশ মোতি, জেইডেন সিলেস ও কেভিন সিনক্লেয়ার।