শিরোনাম
মিউনিখ, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ (বাসস/এএফপি) : হ্যারি কেনের চার গোলে ডিনামো জাগ্রেবকে ৯-২ গোলে বিধ্বস্ত করে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শুরু করেছে বায়ার্ন মিউনিখ। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ইতিহাসে প্রথম দল হিসেবে এক ম্যাচে ৯ গোল করার রেকর্ডও গড়েছে জার্মান জায়ান্টরা।
১৯ মিনিটে পেনাল্টি থেকে বায়ার্নকে এগিয়ে দেন কেন। দ্বিতীয়ার্ধে ইংলিশ অধিনায়ক স্পট কিক থেকে আরো দুই গোল করে হ্যাটট্রিক পূরণ করেন। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে এর মাধ্যমে কেন গোলসংখ্যা বাড়িয়ে নিলেন ৩৩’এ। কোন ইংলিশম্যান হিসেবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে এটাই সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড। ৩০ গোল করে এতদিন পর্যন্ত এই রেকর্ড ধরে রেখেছিলেন ওয়েইন রুনি।
বিরতির পর ইনজুরির কারনে গোলরক্ষক ম্যানুয়েল নয়্যারকে হারায় বায়ার্ন। এই সুযোগে জাগ্রেব পরপর দুই গোল করে ব্যবধান ৩-২’এ নামিয়ে আনে। ক্রিস্টাল প্যালেসের সাবেক ফরোয়ার্ড মাইকেল ওলিস চ্যাম্পিয়ন্স লিগের অভিষেক ম্যাচেই জোড়া গোল করেছেন। এছাড়া বায়ার্নের বড় জয়ে আরো অবদান রেখেছেন রাফায়েল গুয়েরেইরো, লেরয় সানে ও লিও গোরেতজা।
ম্যাচ শেষে কেন বলেছেন, ‘এটা একটি দুর্দান্ত ম্যাচ ছিল, একটু বেশী পাগলামি হয়ে গেছে। এই প্রথম পেনাল্টি থেকে এক ম্যাচে আমি তিন গোল করেছি। এই ধরনের ঘটনা সচরাচর ঘটেনা। পেনাল্টির অনুশীলনে আমি বেশ ব্যস্ত সময় কাটিয়েছি। কিন্তু সত্যি বলতে কি তৃতীয় শটটি কিভাবে নিব সে ব্যপারে একেবারেই প্রস্তুত ছিলাম না। সৌভাগ্যবশত: সবকিছু ঠিক মতই হয়েছে।’
কেন বলেছেন দ্বিতীয়ার্ধে কিছু সময় বায়ার্ন ছন্দ হারিয়ে ফেলেছিল। কিন্তু শীর্ষ সারির প্রতিপক্ষের বিপক্ষে এই ধরনের ম্যাচে শাস্তি পেতে হবে বলে কেন সতর্ক করেছেন।
বায়ার্ন বস ভিনসেন্ট কোম্পানি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে কোচ হিসেবে অভিষিক্ত হয়েই এত বড় জয়ে রেকর্ড গড়েছেন। উচ্ছসিত কোম্পানি বলেন, ‘আমি দারুন খুশী। খেলোয়াড়রা সবাই দারুন খেলেছে, গোল করেছে।’
দলের মানসিকতার প্রশংসা করে ম্যানচেস্টার সিটির সাবেক অধিনায়ক বলেছেন, ‘আমরা দুই গোল হজম করেছি। কিন্তু তারপরও শান্ত ছিলাম। আমি জানি এসব বিষয় নিয়ে কিভাবে কাজ করতে হয়। আমাদের আরো বেশী নিয়ন্ত্রিত হওয়া উচিৎ ছিল। আশা করছি পরের ম্যাচে এসব সমস্যা কাটিয়ে উঠতে পারবো।’
ছয়বারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ বিজয়ী বায়ার্ন ২০০২-০৩ মৌসুম থেকে এ পর্যন্ত চ্যাম্পিয়ন্স লিগের প্রথম ২০টি ম্যাচেই জয়ী হয়েছে। ২০২০ সালে কোয়ার্টার ফাইনালে বার্সেলোনার বিরুদ্ধে ৮-২ গোলের রেকর্ড জয়কেও কালকের ম্যাচের ফলাফল ছাড়িয়ে গেছে। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের নতুন সিঙ্গেল ফর্মেটে গোল ব্যবধানও একসময় গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
ম্যাচের শুরুতে আধিপত্য দেখিয়েছে বায়ার্ন। স্ট্রাইকার জামাল মুসিয়ালা ও সার্জি গ্যানাব্রি অল্পের জন্য অফসাইড পজিশনের কারনে গোল পাননি। ভিএআর শেষ পর্যন্ত আলেক্সান্দার পাভলোভিচের বিরুদ্ধে বায়ার্নকে পেনাল্টি উপহার দেয়। ১৯ মিনিটে ইভান নেভিস্টিককে উল্টো দিকে পাঠিয়ে বায়ার্নকে স্পট কিক থেকে এগিয়ে দেন কেন। এরপর পাঁচ মিনিটের ব্যবধানে আরো দুই গোল করে ৩-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় বায়ার্ন। ৩৩ মিনিটে মুসিয়ালার এ্যাসিস্টে গুয়েরেইরো দারুন এক গোলে ব্যবধান দ্বিগুন করেন। পাঁচ মিনিট পর জসুয়া কিমিচের সহায়াতায় ওলিসের গোলে আরো এগিয়ে যায় স্বাগতিকরা।
রোনায়েল পিয়েরে-গ্যাব্রিয়েলের পাসে ৪৮ মিনিটে অধিনায়ক ব্রুনো পেটকোভিচ জাগ্রেবের হয়ে এক গোল পরিশোধ করেন। দুই মিনিটের মধ্যে কাউন্টার এ্যাটাক থেকে টাকুয়া ওগিওয়ারা জাগ্রেবের হয়ে আরো এক গোল করেন। ৫৭ মিনিটে কেনের গোলে স্বস্তি ফিরে বায়ার্ন শিবিরে। এরপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। কেনের হ্যাটট্রিকসহ চার গোলের সাথে ওলিসে, গোরেতজা, সানের গোলে বড় জয় পায় বায়ার্ন।
দুইবারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ বিজয়ী অভিজ্ঞ থমাস মুলার দ্বিতীয়ার্ধে বদলী বেঞ্চ থেকে ১৫২তম ম্যাচ খেলতে মাঠে নামেন। যেকোন খেলোয়াড়ের জন্য একটি একক ক্লাবের হয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে এটাই সর্বোচ্চ ম্যাচ। এর মাধ্যমে তিনি বার্সেলোনা জাভিকে টপকে গেছেন।