শিরোনাম
মুলতান, ১০ অক্টোবর, ২০২৪ (বাসস) : প্রথম ইনিংসে পাকিস্তানের ৫৫৬ রানের জবাবে হ্যারি ব্রুকের ট্রিপল ও জো রুটের ডাবল সেঞ্চুরিতে মুলতান টেস্টে ৭ উইকেটে ৮২৩ রানের পাহাড় গড়েছে সফরকারী ইংল্যান্ড। টেস্ট ইতিহাসে পাকিস্তানের বিপক্ষে এটিই সর্বোচ্চ দলীয় রান ইংলিশদের। ব্রুক ৩১৭ ও রুট ২৬২ রানে আউট হন। টেস্টে চতুর্থ উইকেট জুটিতে ৪৫৪ রানের বিশ^রেকর্ড গড়েন রুট ও ব্রুক। চতুর্থ দিন শেষে পাকিস্তান ৬ উইকেটে ১৫২ রান সংগ্রহ করেছে। সফরকারীদের থেকে এখনো ১১৫ রানে পিছিয়ে রয়েছে পাকিস্তান।
আজ ব্যক্তিগত ১৮৬ রানে পাকিস্তানের পেসার নাসিম শাহর বলে বাবর আজমের হাতে ক্যাচ দিয়ে জীবন পেয়ে ১৪৭তম টেস্টে ষষ্ঠ ডাবল-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন রুট। ইংল্যান্ডের হয়ে টেস্টে সবচেয়ে বেশি ডাবল-সেঞ্চুরির তালিকায় দ্বিতীয়স্থানে উঠলেন তিনি। ইংল্যান্ডের হয়ে সর্বোচ্চ ডাবল-সেঞ্চুরি ওয়ালি হ্যামন্ডের। ৮৫ টেস্টে ৭টি ডাবল সেঞ্চুরি আছে তার।
১৯৬২ সালের পর ইংল্যান্ডের কোন ব্যাটার হিসেবে পাকিস্তানের মাটিতে ডাবল-সেঞ্চুরি করলেন রুট। এছাড়া ইংল্যান্ডের প্রথম ব্যাটার হিসেবে টেস্টে পাকিস্তানের বিপক্ষে দ্বিতীয় দ্বিশতকের মালিক হলেন তিনি। এতে সফরকারী দলের প্রথম ব্যাটার হিসেবে ভারত ও শ্রীলংকার পর পাকিস্তানের মাটিতে ডাবল-সেঞ্চুরি করলেন রুট।
রুটকে অনুসরণ করে টেস্টে ক্যারিয়ারের ১৯তম ম্যাচে এসে প্রথম ডাবল-সেঞ্চুরির দেখা পান ব্রুক। এই নিয়ে দ্বিতীয়বারের মত ইংল্যান্ডের হয়ে টেস্টের একই ইনিংসে ডাবল-সেঞ্চুরির নজির ঘটলো।
ব্রুকের দ্বিশতকের পর ক্যারিয়ারে দ্বিতীয়বারের মত আড়াইশ রানে পা রাখেন রুট। শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানের স্পিনার আঘা সালমানের বলে আউট হন রুট। ১৭টি চারে ৩৭৫ বলে ২৬২ রান করেন তিনি। এটিই তার টেস্ট ক্যারিয়ারের সেরা ইনিংস।
চতুর্থ উইকেটে ব্রুকের সাথে ৫২২ বলে ৪৫৪ রানের জুটি গড়েন রুট। টেস্ট ইতিহাসে চতুর্থ উইকেটে ও ইংল্যান্ডের পক্ষে যেকোন উইকেটে এটিই সর্বোচ্চ রানের জুটি। ইংলিশদের পক্ষে আগেরটি ছিলো ৪৪৯ রানের। ১৯৫৭ সালে বার্মিংহামে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে চতুর্থ উইকেটে ৪১১ রান করেছিলেন কলিন কাউড্রি ও পিটার মে।
রুট না পারলেও ট্রিপল সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন ৩১০ বল খেলা ব্রুক। ইংল্যান্ডের ষষ্ঠ ও পাকিস্তানের বিপক্ষে বিশে^র পঞ্চম ব্যাটার হিসেবে টেস্টে ৩শ রান করলেন তিনি।
টেস্টে দ্রুততম ট্রিপল সেঞ্চুরিতে দ্বিতীয়স্থানে জায়গা করে নিয়েছেন ব্রুক। ২৭৮ বলে ট্রিপল সেঞ্চুরি করে বিশ^ রেকর্ডের মালিক ভারতের সাবেক ওপেনার বিরেন্দার শেবাগ।
টেস্ট ক্যারিয়ারের সেরা ইনিংস খেলে ৩১৭ রানে থামেন ডান-হাতি ব্যাটার ব্রুক। দলীয় ৭৯৯ রানে পাকিস্তানের স্পিনার সাইম আইয়ুবের বলে আউট হবার আগে ৩২২ বল খেলে ২৯টি চার ও ৩টি ছক্কা মারেন ব্রুক।
ব্রুক ফেরার পর প্রথম ইনিংসে পাকিস্তানের ৫৫৬ রানের জবাবে ৭ উইকেটে ৮২৩ রানে ইনিংস ঘোষনা করে ইংল্যান্ড। টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে এটি চতুর্থ সর্বোচ্চ দলীয় রান। এই নিয়ে তৃতীয়বার ৮শ বা তার বেশি রান করলো ইংলিশলা। পাকিস্তানের বিপক্ষে কোন দলের এটি সবচেয়ে বেশি রান। ১৯৯৭ সালে ভারতের বিপক্ষে কলম্বোতে শ্রীলংকার ৬ উইকেটে ৯৫২ রান টেস্ট ইতিহাসের সর্বোচ্চ সংগ্রহ।
পাকিস্তানের বোলারদের মধ্যে ২টি করে উইকেট নেন নাসিম শাহ ও সাইম আইয়ুব। এই ইনিংসে পাকিস্তানের ছয় বোলার ১’শর বেশি রান দিয়েছেন। টেস্ট ইতিহাসে এই নিয়ে দ্বিতীয়বার এমন ঘটনা ঘটলো। ২০০৪ সালে বুলাওয়েতে শ্রীলংকার বিপক্ষে টেস্টের এক ইনিংসে ১’শর বেশি রান দিয়েছিলো জিম্বাবুয়ের বোলাররা।
প্রথম ইনিংস ২৬৭ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে ইংল্যান্ডের পেসারদের তোপের মুখে পড়ে পাকিস্তান। ইনিংসের প্রথম বলেই পাকিস্তানের ওপেনার আব্দুল্লাহ শফিককে বোল্ড করেন পেসার ক্রিস ওকস। প্রথম ইনিংসে ১০২ রান করেছিলেন শফিক।
এরপর উইকেট শিকারে মাতেন অন্য দুই পেসার গাস অ্যাটকিনসন ও ব্রাইডন কার্স। দু’জনে মিলে চার উইকেট শিকার করলে ৫৯ রানে পাকিস্তানের পঞ্চম ব্যাটার সাজঘরে ফিরেন। প্রথম ইনিংসে ১৫১ রান করা মাসুদকে এবার ১১ রানে থামান অ্যাটকিনসন। দলের সেরা ব্যাটার বাবরকে ৫ রানের বেশি করতে দেননি অ্যাটকিনসন।
আরেক ওপেনার সাইম আইয়ুব ২৫ ও মোহাম্মদ রিজওয়ানকে ১০ রানে আউট করেন কার্স। উইকেট শিকারের তালিকায় নাম তুলেছেন স্পিনার জ্যাক লিচও। সৌদ শাকিলকে ২৯ রানে থামান তিনি।
সপ্তম উইকেটে ৭৬ বলে ৭০ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে দিনের খেলা শেষ করেন সালমান ও আমের জামাল। সালমান ৪১ ও জামাল ২৭ রানে অপরাজিত আছেন।