শিরোনাম
ঢাকা, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪ (বাসস) : মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও পাকিস্তানের ফাহিম আশরাফের বিস্ফোরক জুুটিতে আজ থেকে শুরু হওয়া বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের ১১তম আসরে শুভ সূচনা করেছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ফরচুন বরিশাল। টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী ম্যাচে বরিশাল ৪ উইকেটে হারিয়েছে দুর্বার রাজশাহীকে।
টস হেরে প্রথমে ব্যাট করে ২০ ওভারে ৩ উইকেটে ১৯৬ রান করে রাজশাহী। জবাবে ১১২ রানে ৬ উইকেট পতনে হারের মুখে পড়ে বরিশাল। কিন্তু সপ্তম উইকেটে ৩৫ বলে ৮৮ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে বরিশালকে দুর্দান্ত জয়ের স্বাদ দেন মাহমুদুল্লাহ ও ফাহিম। ২৬ বলে অপরাজিত ৫৬ রানে ম্যাচ সেরা হন মাহমুদুল্লাহ। ২১ বলে ৫৪ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলেন ফাহিম।
মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে দুর্বার রাজশাহীকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানায় ফরচুন বরিশাল। ব্যাট হাতে নেমে দ্বিতীয় ওভারেই হোঁচট খায় রাজশাহী। রানের খাতা খোলার আগেই বরিশালের ওয়েস্ট ইন্ডিজের মিডিয়াম পেসার কাইল মায়ার্সের বলে বোল্ড হন রাজশাহীর ওপেনার জিশান আলম।
চতুর্থ ওভারে রাজশাহীর শিবিরে দ্বিতীয় আঘাত হানেন মায়ার্স। পাকিস্তানের মোহাম্মদ হারিসকে ১৩ রানে শিকার করেন মায়ার্স।
২৫ রানে ২ উইকেট হারিয়ে শুরুতেই চাপে পড়ে রাজশাহী। এরপর শক্ত হাতে দলের হাল ধরেন এনামুল ও ইয়াসির। বরিশালের বোলারদের সামনে প্রতিরোধ গড়ে তুলে ১০ ওভারে দলে রান ৭৫’এ নিয়ে যান এনামুল ও ইয়াসির। ১৪তম ওভারে ১’শতে পৌঁছায় রাজশাহীর রান।
১৫তম ওভারের শুরুতে টি-টোয়েন্টিতে ১৬তম হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ৪২ বল খেলা এনামুল। পরের ওভারে ছক্কা মেরে ৩৪ বলে টি-টোয়েন্টিতে ১১তম অর্ধশতক পান ইয়াসির। ঐ ওভারেই জুটিতে ১’শ পূর্ণ করেন এনামুল ও ইয়াসির।
১৮তম ওভারে বরিশালের পাকিস্তানী পেসার ফাহিম আশরাফের বলে আউট হন এনামুল। ৫১ বলে ৪টি চার ও ৫টি ছক্কায় ৬৫ রান করেন এনামুল। ইয়াসিরের সাথে তৃতীয় উইকেটে ৮৭ বলে ১৪০ রানের জুটি গড়েন এনামুল।
এনামুল ফিরলেও ইনিংসের শেষ পর্যন্ত খেলে সেঞ্চুরির সম্ভাবনা জাগিয়েছিলেন ইয়াসির। কিন্তু সেঞ্চুরি থেকে ৬ রান দূরে থাকে শেষ হয় রাজশাহীর ইনিংস। ৭টি চার ও ৮টি ছক্কায় ৪৭ বলে অপরাজিত ৯৪ রান করেন ইয়াসির। টি-টোয়েন্টিতে ইয়াসিরের সর্বোচ্চ রানের ইনিংসের উপর ভর করে ২০ ওভারে ৩ উইকেটে ১৯৭ রানের সংগ্রহ পায় রাজশাহী। শেষ ৭ ওভারে ৯২ রান তুলে রাজশাহী।
মায়ার্স ১৩ রানে নিয়েছেন ২ উইকেট।
১৯৮ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে প্রথম বলেই উইকেট হারায় বরিশাল। রাজশাহীর স্পিনার জিশান আলমেরর বলে লেগ বিফোর হন নাজমুল হোসেন শান্ত। পরের ওভারে অধিনায়ক তামিম ইকবালকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন রাজশাহীর পেসার তাসকিন আহমেদ।
১২ রানে দুই ওপেনারের বিদায়ের পর ঘুড়ে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে বরিশাল। কিন্তু ভালো শুরু করেও বড় ইনিংস খেলতে পারেনি বরিশালের মিডল অর্ডারের তিন ব্যাটার। তাওহিদ হৃদয় ৩২, মায়ার্স ৬ ও মুশফিকুর রহিম ১৩ রানে আউট হন। এতে ৬১ রানে ৫ উইকেট হারায় বরিশাল।
এ অবস্থায় রাজশাহীর বোলারদের উপর পাল্টা আক্রমন করেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও পাকিস্তানের শাহিন শাহ আফ্রিদি। ষষ্ঠ উইকেটে ২৫ বলে ৫১ রান যোগ করেন তারা। মাহমুদুল্লাহ ৮ বলে ২৩ ও সাত নম্বরে নামা আফ্রিদি ১টি চার ও ৩টি ছক্কায় ১৭ বলে ২৭ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন।
১৩তম ওভারে আফ্রিদিকে বিদায় দিয়ে রাজশাহীকে ব্রেক-থ্রু এনে দেন তাসকিন। ১১২ রানে ষষ্ঠ ব্যাটার হিসেবে আফ্রিদির বিদায়ে ক্রিজে আসেন আরেক পাকিস্তানী ফাহিম আশরাফ। এসময় জয়ের জন্য ৪৬ বলে ৮৬ রান দরকার ছিলো বরিশালের। ১৫তম ওভার থেকে ব্যাট হাতে তান্ডব শুরু করেন মাহমুদুল্লাহ ও ফাহিম। ১৫তম ওভারে ২০, ১৬তম ওভারে ১৯, ১৭তম ওভারে ২৫ ও ১৮তম ওভারে ১০ রান তুলে ম্যাচ হাতে মুঠোয় নিয়ে নেন মাহমুদুল্লাহ ও ফাহিম জুটি।
১৯তম ওভারের প্রথম বলে ছক্কা মেরে বরিশালকে জয়ের বন্দরে নেন ফাহিম। এই ছক্কায় ২১ বলে টি-টোয়েন্টিতে ষষ্ঠ হাফ-সেঞ্চুরি করেন ফাহিম। ১টি চার ও ৭টি ছক্কায় ২১ বলে ৫৪ রানে অপরাজিত থাকেন ফাহিম।
২৩ বলে টি-টোয়েন্টিতে ২৪তম হাফ-সেঞ্চুরি পাওয়া মাহমুুদুল্লাহর ব্যাট থেকে আসে অনবদ্য ৫৬ রান। তার ২৬ বলের ইনিংসে ৫টি চার ও ৪টি ছক্কার মার ছিলো। ফাহিম আড়াইশর বেশি এবং মাহমুদুল্লাহ ২শর বেশি স্ট্রাইক রেটে নিজেদের ঝড়ো ইনিংস সাজিয়েছেন।
তাসকিন ৩১ রানে ৩টি ও হাসান মুরাদ নিয়েছেন ২টি উইকেট।