বাসস
  ০৬ জানুয়ারি ২০২৫, ১৬:১০
আপডেট : ০৭ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮:১৫

হেলসের দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতে টানা চতুর্থ জয় রংপুরের

ঢাকা, ৬ জানুয়ারি ২০২৫ (বাসস) : ইংল্যান্ডের ওপেনার অ্যালেক্স হেলসের দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের ১১তম আসরে টানা চতুর্থ জয়ের স্বাদ পেয়েছে রংপুর রাইডার্স। আজ টুর্নামেন্টের নবম ও নিজেদের চতুর্থ ম্যাচে ২০৬ রানের টার্গেট তাড়া করে সিলেট স্ট্রাইকার্সকে ৮ উইকেটে হারিয়েছে রংপুর।

এনিয়ে চার ম্যাচের সবগুলোতেই জিতলো রংপুর। এদিকে দুই ম্যাচের দু’টিতেই হারলো সিলেট। ৫৬ বলে ১১৩ রানের অনবদ্য ইনিংসে ম্যাচ সেরা হয়েছেন হেলস। দ্বিতীয় উইকেটে ১০১ বলে ১৮৬ রানের জুটিতে রংপুরের জয়ে বড় অবদান রাখেন হেলস ও সাইফ হাাসন। ৪৯ বলে ৮০ রান করেন সাইফ।  

সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দিনের প্রথম ম্যাচে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে দারুন শুরু করেন সিলেট স্ট্রাইকার্সের দুই ওপেনার রনি তালুকদার ও জর্জ মুনসি। ৩০ বলে ৪৭ রান যোগ করেন তারা।

পঞ্চম ওভারের শেষ বলে মুনসিকে থামিয়ে রংপুরকে প্রথম ব্রেক-থ্রু এনে দেন পেসার আকিফ জাভেদ। ১টি চার ও ২টি ছক্কায় ১২ বলে ১৮ রান করেন মুনসি।

তিন নম্বরে নামা জাকির হাসানকে নিয়ে সিলেটের রানের চাকা সচল রাখেন রনি। ৩০ বলে টি-টোয়েন্টিতে ১২তম হাফ-সেঞ্চুরি তুলে সাজঘরে ফিরেন রনি। রংপুরের স্পিনার মাহেদি হাসানের বলে এলবিডব্লিউ হন ৭টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৩২ বলে ৫৪ রান করা রনি। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে জাকিরের সাথে ২৩ বলে ৪১ রান যোগ করেন রনি।

তৃতীয় উইকেটে আয়ারল্যান্ডের পল স্টার্লিংকে নিয়ে ৩১ বলে ৩৬ রানের জুটিতে সিলেটের রান ১শ পার করেন জাকির। ২টি চারে ১৬ বলে ১৬ রান করে মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনের শিকার হন স্টার্লিং।

১৪তম ওভারে দলীয় ১২৪ স্টার্লিং ফেরার পর ক্রিজে জাকিরের সঙ্গী হন অ্যারন জোন্স। দলের বড় সংগ্রহের পথ তৈরি করতে রংপুরের বোলারদের উপর চড়াও হন জাকির ও জোন্স। ২৯ বলে ৪৭ রানের জুটিতে দলের রান ১৭১ রানে নেন তারা। ৩৬ বলে টি-টোয়েন্টিতে সপ্তম অর্ধশতক করে সাইফুদ্দিনের দ্বিতীয় শিকার হন জাকির। ৪টি ওভার বাউন্ডারিতে ৩৮ বলে ৫০ রান করেন জাকির।

আকিফের করা ইনিংসের শেষ ওভার থেকে ৪টি ছক্কায় ২৭ রান তুলেন জোন্স ও জাকের আলি। এরমধ্যে জাকের ৩টি ও জোন্স ১টি ছক্কা মারেন। এতে ২০ ওভারে ৪ উইকেটে ২০৫ রানের বড় সংগ্রহ পায় সিলেট।

৪টি চার ও ১টি ছক্কায় জোন্স ১৯ বলে ৩৮ এবং ৩টি ওভার বাউন্ডারিতে ৫ বলে ২০ রানে অপরাজিত থাকেন জাকের।

সাইফুদ্দিন ৩১ রানে ২ উইকেট নেন।

২০৬ রানের বড় টার্গেটে খেলতে নেমে প্রথম ওভারেই ধাক্কা খায় রংপুর। অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ জয়ী দলের অধিনায়ক আজিজুল হাকিমকে খালি হাতে বিদায় দেন সিলেটের পেসার তানজিম হাসান সাকিব।

হাকিম ফেরার পর সিলেটের বোলারদের উপর দাপট দেখিয়েছেন রংপুরের ওপেনার হেলস ও সাইফ। পাওয়ার প্লেতে ৫৪, ১১তম ওভারে ১শ ও ১৬তম ওভারে দেড়শ রান তুলে রংপুরকে জয়ের পথে রাখেন হেলস-সাইফ।

৩১ বল করে খেলে সাইফ নবম এবং হেলস ৮৩তম হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ নেন।

শেষ ৫ ওভারে ৫৯ রান দরকার ছিলো রংপুরের। সিলেটের অধিনায়ক মিডিয়াম পেসার আরিফুল হকের করা ১৬তম ওভার থেকে ৩টি ছক্কা ও ১টি চারে ২৩ রান তুলে রংপুরের জয়ের পথ সহজ করেন হেলস।

১৮তম ওভারে সাইফকে শিকার করে জুটি ভাঙেন তানজিম। ৩টি চার ও ৭টি ছক্কায় ৪৯ বলে ৮০ রান করেন সাইফ। দ্বিতীয় উইকেটে হেলসের সাথে ১০১ বলে ১৮৬ রান যোগ করেন সাইফ। বিপিএলের ইতিহাসে যেকোন উইকেট জুটিতে এটি চতুর্থ সর্বোচ্চ রান।

সাইফ  যখন ফিরেন তখন ৯৯ রানে দাঁড়িয়ে ছিলেন হেলস। পেসার আল-আমিনের করা ১৯তম ওভারের চতুর্থ বলে ২ রান নিয়ে টি-টোয়েন্টিতে সপ্তম সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন হেলস। বিপিএলের মঞ্চে দ্বিতীয় সেঞ্চুরির দেখা পেলেন হেলস। ২০১৯ সালে চট্টগ্রামের মাটিতে চিটাগাং ভাইকিংসের বিপক্ষে রংপুর রাইডার্সের হয়ে ৪৮ বলে ১০০ রানের ইনিংস খেলেছিলেন তিনি।

চলতি বিপিএলে তৃতীয় সেঞ্চুরিয়ান হলেন হেলস। ঢাকা পর্বে প্রথম দু’টি সেঞ্চুরি করেছিলেন চট্টগ্রাম কিংসের পাকিস্তানী ব্যাটার উসমান খান এবং ঢাকা ক্যাপিটালসের শ্রীলংকান খেলোয়াড় থিসারা পেরেরা।

১৯তম ওভারের শেষ দুই বলে দুই ছক্কায় রংপুরের জয় নিশ্চিত করেন হেলস। বিপিএলের ইতিহাসে রান তাড়া করে দ্বিতীয় সেরা জয় এটি।

১০টি চার ও ৭টি ছক্কায় ৫৬ বলে অপরাজিত ১১৩ রান করেন হেলস। ৮ রানে অপরাজিত থাকেন ইফতেখার আহমেদ। তানজিম ২৩ রানে ২ উইকেট নেন।