বাসস
  ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৯:৫৫
আপডেট : ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২০:০২

কখনও একুশে পদক পাওয়ার আশা করেননি সানজিদা

সানজিদা আক্তার - ছবি : ‍উইকিপিডিয়া

ঢাকা, ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ (বাসস) : বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দলের অর্জনের খাতায় আরও একটি মাইলফলক যুক্ত হলো। বিভিন্ন ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের জন্য ১৪ জন স্বনামধন্য ব্যক্তির সাথে দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার একুশে পদক ২০২৫ পাচ্ছে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল। 

দেশের ক্রীড়াঙ্গনে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ নারী ফুটবল দলকে মর্যাদাপূর্ণ এ পুরস্কারের জন্য নির্বাচিত করেছে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়।

১৯৭৬ সালে শুরুর পর দেশের ক্রীড়াঙ্গনের ইতিহাসে এই প্রথমবার একটি ক্রীড়া দল একুশে পদক পাচ্ছে।  যদিও প্রখ্যাত ক্রীড়া সাংবাদিক এবং ক্রীড়া ধারাভাষ্যকার প্রয়াত আবদুল হামিদ ক্রীড়াঙ্গনের প্রথম এবং একমাত্র ব্যক্তি, যিনি এর আগে ব্যক্তিগভাবে  পুরস্কারটি পেয়েছিলেন।

রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পেয়ে সাফ জয়ী বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের নির্ভরযোগ্য মিডফিল্ডার সানজিদা আক্তার অত্যন্ত রোমাঞ্চিত, আনন্দিত।

বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলকে একুশে পদক-২০২৫ অর্জনকারী হিসেবে নির্বাচিত করার পর বাসসের সাথে এক একান্ত সাক্ষাৎকারে নিজের অনুভূতি জানান সানজিদা আক্তার।

প্রশ্ন : প্রথমত, আমি আপনাকে এবং আপনার দলকে এমন কৃতিত্বের জন্য অভিনন্দন জানাতে চাই।

উত্তর : অনেক ধন্যবাদ।

প্রশ্ন : একুশে পদক-২০২৫-এর জন্য সরকার আপনার দলকে নির্বাচন করেছে, আপনার অনুভূতি কী?

উত্তর : সত্যি কথা বলতে, একুশে পদক সম্পর্কে আমার ধারণা কম ছিল বলে প্রথমে বুঝতে পারিনি। কিন্তু স্বাধীনতা পুরস্কারের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কারের স্বীকৃতির কথা জানতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত, গর্বিত।

প্রশ্ন : এ পুরস্কার পাবেন-কখনও এমনটা আশা করেছেন?

উত্তর : আমি গত ১২ বছর ধরে জাতীয় দলে খেলছি এবং দেশের প্রতিনিধিত্ব করছি। এত অল্প বয়সে এই সম্মান অকল্পনীয়। আমরা কখনই ভাবিনি যে, আমরা এত তাড়াতাড়ি এই পুরস্কার পাব। অনেকে অনেক কিছু করেও কিন্তু এই পুরস্কার পায় না।

প্রশ্ন : এমন অর্জনের কৃতিত্ব কাকে দিতে চান?

উত্তর : এই অসাধারণ কৃতিত্বের জন্য আমি অবশ্যই বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনকে (বিএফএফ) কৃতিত্ব দিতে পারি। কারণ বাফুফে আমাদের জন্য সারা বছর ক্যাম্পের ব্যবস্থা করে। বাফুফে আমাদের জন্য দীর্ঘমেয়াদী ক্যাম্পের ব্যবস্থা না করলে আমরা সবাই এই অবস্থায় আসতে পারবো না। তাই এই অসাধারণ অর্জনের কৃতিত্ব অবশ্যই বাফুফেকে দিতে হবে এবং অবশ্যই আমি আমার পরিবারকেও কৃতিত্ব দেবো।

প্রশ্ন : এই সম্মান দলকে ভবিষ্যতে আরও ভালো পারফর্ম করতে অনুপ্রাণিত করবে কিনা?

উত্তর : দেখুন, এই পুরস্কারটি শুধু আমাকে বা আমার দলকে অনুপ্রাণিত করে না। আমাদের জুনিয়র এবং অন্যান্য ক্রীড়াবিদদেরও অনুপ্রাণিত করে। কারণ তারা অনুধাবন  করতে সক্ষম হবে যে, নারী ফুটবল দল মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার পাওয়ার পর থেকে তাদেরও ভালো পারফর্ম করতে হবে।

প্রশ্ন : এই সম্মান পাওয়ার পর আপনি কি বাফুফে নারী উইং চেয়ারপারসনের সাথে কথা বলেছেন?

উত্তর : না, দলের এমন অর্জনের পর আমাদের চেয়ারপারসনের সাথে আমার কথা হয়নি, কিন্তু আমি মিডিয়ায় দেখেছি যে, তিনি আমাদের দলকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।

প্রশ্ন : বর্তমান সরকার নারী ফুটবল দলকে এই পুরস্কারে ভূষিত করেছে। এই সরকার যথেষ্ট ক্রীড়াবান্ধব বলে কী মনে করেন?

উত্তর : অবশ্যই, বর্তমান সরকার ক্রীড়াবান্ধব এবং খেলাধুলার উন্নয়নে যথেষ্ট পদক্ষেপ নিয়েছে, এই সম্মানের জন্য সরকারকে অবশ্যই ধন্যবাদ জানাই।

প্রশ্ন : সারাদেশ জুড়ে যুব উৎসবের বিষয়ে কিছু বলবেন?

উত্তর : এটি অন্তর্বর্তী সরকারের একটি বড় উদ্যোগ। কারণ আমাদের তরুণ প্রজন্ম আজকাল পথ হারাচ্ছে এবং তারা অনেক অসামাজিক কার্যকলাপে জড়িয়ে  যাচ্ছে। তাই তাদের ভুল পথ থেকে ফিরিয়ে আনতে হবে। আমি মনে করি, যুব উৎসব এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে, কারণ এই উৎসবের মাধ্যমে তরুণ প্রজন্ম খেলাধুলায় সম্পৃত্ত হবে, যা তাদের জন্য যেমন ভালো, তেমনি দেশের জন্যও।

প্রশ্ন : বর্তমান সরকার প্রথমবারের মতো উৎসব চালু করার পদক্ষেপকে কিভাবে দেখছেন?

উত্তর : সারাদেশে তৃণমূল পর্যায়ে শুরু হয়েছে তারুণ্যের উৎসব। যেহেতু এটি তৃণমূল থেকে শুরু হয়েছে আমি মনে করি, এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যোগ্য খেলোয়াড় বেড়িয়ে আসবে এবং এভাবে দেশের ক্রীড়া ব্যাপকভাবে উপকৃত হবে।