বাসস
  ২৬ এপ্রিল ২০২৫, ২০:১৮

আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ বিষয়ে বিসিবির ব্যাখ্যা

ঢাকা, ২৬ এপ্রিল, ২০২৫ (বাসস) : আর্থিক লেনদেন নিয়ে ওঠা অভিযোগের ভিত্তিতে স্পষ্ট ব্যাখ্যা দিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। তারা জানিয়েছে, একটি কুচক্রী মহলের হাত থেকে বোর্ডের তহবিল  নিরাপদ রাখতে এক ব্যাংক থেকে অন্য ব্যাংকে লেনদেন করা হয়েছে।

এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিসিবি বলেছে, ‘কতিপয় গণমাধ্যমে প্রচারিত বোর্ডের আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত কিছু প্রতিবেদন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) নজরে এসেছে। বিসিবির মতে এসব প্রতিবেদন ভুল তথ্যভিত্তিক এবং বোর্ড সভাপতি ফারুক আহমেদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার উদ্দেশ্যে পরিকল্পিতভাবে করা হয়েছে।’

বিসিবি আরও বলেছে, ‘গত ২০২৪ সালের আগস্টে বিসিবির সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণের পর ফারুক আহমেদ বিগত বছরগুলোর আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ এবং ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসের গণ-আন্দোলনের পর দেশের অর্থনৈতিক সংকট  বিবেচনায় রেখে  বোর্ডের আর্থিক স্বার্থ সংরক্ষণকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার প্রদান করেন।’

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ব্যাংকে করা এফডিআর স্টেটমেন্ট সংযুক্ত করে বিসিবি বলেছে, ‘এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে বিসিবি তার ব্যাংকিং সম্পর্কগুলোর পুনর্মূল্যায়ন করে এবং কৌশলগতভাবে সিদ্ধান্ত নেয় যে শুধুমাত্র বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্ধারিত 'গ্রীন' ও 'ইয়েলো' জোনভুক্ত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সাথেই বোর্ড আর্থিক লেনদেনে জড়িত থাকবে। নিরাপত্তা নিশ্চিতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে বিসিবি ঝুঁকিপূর্ণ ব্যাংকগুলো থেকে ২৫০ কোটি টাকা উত্তোলন করে এবং এর মধ্যে ২৩৮ কোটি টাকা গ্রীন ও ইয়েলো জোনভুক্ত ব্যাংকগুলোতে পুনঃবিনিয়োগ করে। অবশিষ্ট ১২ কোটি টাকা বিসিবির বিবিধ পরিচালনা ব্যয় নির্বাহের জন্য নির্ধারিত একাউন্টে স্থানান্তর করা হয়।’ 

বিসিবি আরও জানিয়েছে, বোর্ড সভাপতি কোন একক সিদ্ধান্তবলে বোর্ড এর পরিচালনা পর্ষদের অজ্ঞাতে ব্যাংক পরিবর্তন বা লেনদেন সংক্রান্ত নির্দেশ প্রদান করেন না। পার্টনার ব্যাংকগুলোর সাথে বিসিবির আর্থিক বিষয়ক লেনদেনে স্বাক্ষর প্রদানকারী হিসাবে আছেন দু’জন বোর্ড পরিচালক-ফিনান্স কমিটি চেয়ারম্যান ফাহিম সিনহা ও টেন্ডার ও ক্রয় কমিটি চেয়ারম্যান মাহবুবুল আনাম । বিসিবি সভাপতি এ সংক্রান্ত বিষয়ে স্বাক্ষরদাতা নয়।’

বিসিবি আরও জানায়, ‘বিসিবি অবগত আছে যে, কিছু সুবিধাভোগী মহল এবং ষড়যন্ত্রকারী গোষ্ঠী, যারা ক্রিকেট প্রশাসনের ভিতরেও সক্রিয়, বোর্ডের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার উদ্দেশ্যে কাজ করে যাচ্ছে। বিসিবির আর্থিক নিরাপত্তা আরও জোরদার করার এটিও অন্যতম কারণ। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর থেকে এখন পর্যন্ত বিসিবি তার অর্থ ও স্থায়ী আমানত সংরক্ষণের দায়িত্ব ১৩টি নির্ভরযোগ্য ব্যাংকের হাতে দিয়েছে। এই সিদ্ধান্ত বিসিবির আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করাসহ প্রতিযোগিতামূলক মুনাফা প্রাপ্তির মাধ্যমে আয় বৃদ্ধির সুযোগ তৈরি করেছে। এর ফলে পূর্ববর্তী সময়ের তুলনায় বিসিবির স্থায়ী আমানত থেকে ২-৫ শতাংশ পর্যন্ত অতিরিক্ত মুনাফা হয়েছে।’

‘গত ছয় মাসে বিসিবি তার বর্তমান তিনটি ব্যাংকিং অংশীদারের কাছ থেকে আনুমানিক ১২ কোটি টাকার স্পনসরশিপ পেয়েছে। এছাড়াও, অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য বিসিবির অংশীদার ব্যাংকগুলোর পক্ষ থেকে প্রায় ২০ কোটি টাকা বিনিয়োগের আশ্বাস পাওয়া গেছে, যা এই আর্থিক সম্পর্কগুলোর দৃঢ়তা ও গভীরতা নির্দেশ করে।’

‘বিসিবি সর্বোচ্চ আর্থিক ব্যবস্থা বজায় রাখতে বদ্ধপরিকর এবং প্রকৃত ও তথ্যভিত্তিক উৎস থেকে তদন্ত ও পর্যালোচনাকে স্বাগত জানায়। পাশাপাশি, বোর্ড গণমাধ্যমকে ভিত্তিহীন বা বাংলাদেশ ক্রিকেট ও এর সেবায় নিয়োজিত ব্যক্তিদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে পারে, এমন কোন ভুল তথ্যসম্বলিত প্রতিবেদন প্রকাশ থেকে বিরত থাকার জন্য বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছে।’