বাসস
  ১১ অক্টোবর ২০২২, ১০:০৫

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ : ইতিহাসের হাতছানি বর্তমান চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়ার

সিডনি, ১১ অক্টোবর ২০২২ (বাসস/এএফপি): টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ক্রিকেটে নতুন এক ইতিহাস গড়ার দাঁড়প্রান্তে দাাঁড়িয়ে আছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া। আর সেটি হচ্ছে প্রথমবারের মতো পরপর বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হবার হাতছানি। যদিও নিজেদের দেশে অনুষ্ঠিতব্য এবারের আসরে ইংল্যান্ড ও ভারতের তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার মোকাবেলা করতে হবে অসিদের।
২০০৭ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ চালু হবার পর এই প্রথম নিজেদের মাটিতে শিরোপা অক্ষুন্ন রাখার মিশনে খেলতে যাচ্ছে অ্যারন ফিঞ্চের দল। তারকা সমৃদ্ধ এই দলের লাইনআপে আছেন ডেভিড ওয়ার্নার, প্যাট কামিন্স ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েল।  যারা সংযুক্ত আরব আমিরাতে গত আসরের শিরোপা জিতেছিল।  
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপকে সামনে রেখে সম্প্রতি ওয়ানডে দলের নেতৃত্ব থেকে সরে দাঁড়ানো ফিঞ্চ মনে করেন শিরোপা ধরে রাখার জন্য তারা তাদের সবগুলো অস্ত্রই তাতিয়ে রেখেছেন। তিনি বলেন,‘ কোন রকম সন্দেহবোধ করলে আমরা আরো বেশী আগ্রাসী হব। আমরা এভাবেই খেলতে চাই। কোন কোন সময় বেশী ঝুঁকি নিতে পারলে এর পুরস্কারও বেশী পাওয়া যায়। আবার কোন সময় কোন পুরস্কার পাওয়া যায়না। এটিই টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের একটি অংশ।’
আগামী রোববার গিলংয়ে শ্রীলংকা বনাম নামিবিয়ার মধ্যে কোয়ালিফাইং রাউন্ডের ম্যাচ দিয়ে শুরু হতে যাচ্ছে টি-২০ বিশ্বকাপের অস্টম আসর। একইদিন হল্যান্ডের মোকাবেলা করবে সংযুক্ত আরব আমিরাত। ৪৫ ম্যাচের এই টুর্নামেন্টের খেলাগুলো অনুষ্ঠিত হবে অস্ট্রেলিয়ার সাত  ভেন্যু এডিলেড, ব্রিসবেন, হোবার্ট, পার্থ ও সিডনিতে।
আগামী ১৩ নভেম্বর ফ্লাইট লাইটের আলোতে মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে অনুষ্ঠিত হবে ফাইনাল ম্যাচ। শীর্ষ দলগুলো অর্থাৎ সুপার টুয়েলভ শুরু হবে ২২ অক্টোবর। এদিন সিডনিতে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া প্রতিদ্বন্দ্বিতা  করবে কেন উইলিয়ামসের নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। ২০২১ সালের দুবাইয়ে বিশ্বকাপ ফাইনালে এই দল দুটি মুখোমুখি হয়েছিল। ম্যাচে মিচেল মার্শের অপরাজিত ৭৭ রানে ভর করে কিউইদের ৮ উইকেটে হারিয়ে প্রথমবারের মতো শিরোপা জয় করেছিল অস্ট্রেলিয়া।
-ব্লকবাস্টার ম্যাচ-
কয়েকজন শীর্ষ তারকার অনুপস্থিতি সত্বেও এবারের আসরে অস্ট্রেলিয়ার পাশাপাশি শিরোপা জয়ে ফেভারিটের তালিকায় আছে ভারত ও ইংল্যান্ড। আগামী ২২ অক্টোবর পার্থে ইংল্যান্ড তাদের প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি হবে আফগানিস্তানের। কিন্তু পায়ের গুরুতর ইনজুরিতে পড়ায় ওই ম্যাচে খেলতে পারছেন না তারকা ব্যাটসম্যান জনি বেয়ারস্টো।
২৪ ঘন্টা পর মেলবোর্নে আরেক ব্লকবাস্টার ম্যাচে ভারত মুখোমুখি হবে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বি পাকিস্তানের। ২০০৯ সালে শিরোপা জয় করেছিল পাকিস্তান। আসন্ন  ম্যাচে ৯০ হাজারেরও বেশী দর্শরে উপস্থিতি ঘটবে  বলে ধারনা করা হচ্ছে।
গত সপ্তাহে সবচেয়ে খারাপ দু;সংবাদটি পেয়েছে ভারত। তাদের পেসার জাসপ্রিত বুমরাহ পিঠের ইনজুরিতে পড়ে ছিটকে গেছেন বিশ্বকাপ থেকে। হাঁটুর ইনজুরিতে পড়ে অলরাউন্ডার রবীন্দ্র জাদেজাও ছিটকে গেছেন দল থেকে।
টি-টোয়েন্টি র‌্যাংকিংয়ে এই মুহুর্তে রোহিত শর্মার দলটি এক নম্বরে থাকলেও ২০০৭ সালের পর সংক্ষিপ্ত ভার্সনের এই টুর্নামেন্টের শিরোপা ঘরে তুলতে পারেনি ভারত। গত বছর অনুষ্ঠিত টুর্নামেন্টের সেমি-ফাইনালেও উঠতে পারেনি দেশটি।
-ইংলিশ হুমকি-
২০১০ সালের পর প্রথমবারেরর মতো শিরোপা জয়ের জন্য যে কোন দলের জন্য বড় হুমকি হিসেবে মানা হচ্ছে র‌্যাংকিংয়ের দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা ইংল্যান্ডকে। গত রোববার তারা পরাজিত করেছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়াকে।
সম্প্রতি পাকিস্তান সফরে স্বাগতিকদের  বিপক্ষে ৪-৩ ব্যবধানে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয় করে অস্ট্রেলিয়া সফরে এসেছে ইংল্যান্ড। পাকিস্তানে ওই সিরিজে অধিনায়ক জস বাটলার দলের সঙ্গে থাকলেও কাফ ইনজুরির জন্য দলের হয়ে কোন ভুমিকাই রাখতে পারেননি। এখন অবশ্য বিশ্বকাপের জন্য পুরোপুরি ফিট তিনি। পাকিস্তানে  খেলতে না পারার ঝাল তুলতে পারেন বাটলার।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে শুধুমাত্র দুইবার শিরোপা জয় করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ২০১২ ও ২০১৬ সালে শিরোপা জয় করা দলটি এবারের আসরে সুপার ১২ পর্বে অবশ্য সরাসরি খেলার সুযোগ লাভে ব্যর্থ হয়েছে।  কারণ তারা আইসিসি’র তৎকালীণ র‌্যাংকিংয়ে শীর্ষ আটের বাইরে ছিল।
বর্তমানে র‌্যাংকিংয়ের ৭ম অবস্থানে থাকলেও ক্যারিবীয় দলটিকে খেলে আসতে হবে প্রথম  পর্ব। সম্প্রতি এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন শিরোপা জয় করা শ্রীলংকারও একই অবস্থা। বর্তমানে আইসিসি র‌্যাংকিংয়ের অস্টম স্থানে থাকা সত্বেও তাদেরকে খেলে আসতে হচ্ছে প্রথামিক পর্ব। এই পর্বে তাদের গ্রুপ প্রতিপক্ষ হিসেবে রয়েছে নামিবিয়া, হল্যান্ড ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। দুই গ্রুপের শীর্ষ দুটি করে দল সুপার ১২ পর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জন করবে। যেখানে গ্রুপ ১ এ রয়েছে ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া ও আফগানিস্তান। আর গ্রুপ ২ এ রয়েছে ভারত, পাকিস্তান, দক্ষিন আফ্রিকা ও বাংলাদেশ।