বাসস
  ০৩ জানুয়ারি ২০২৩, ১৫:১১

৮৪ বছর পর ব্রেন্টফোর্ডের কাছে হারলো লিভারপুল

লন্ডন, ৩ জানুয়ারি, ২০২৩ (বাসস) : প্রিমিয়ার লিগে সোমবার ব্রেন্টফোর্ডের কাছে ৩-১ গোলর হতাশাজনক পরাজয় বরণ করেছে লিভারপুল। ১৯৩৮ সালের পর এই প্রথমবারের মত ব্রেন্টফোর্ডের কাছে হারের তিক্ত স্বাদ পেল রেডরা। এই পরাজয়ে একইসাথে প্রিমিয়ার লিগ টেবিলের শীর্ষ চারে টিকে থাকার লড়াই আরো একবার বাঁধাগ্রস্থ হলো জার্গেন ক্লপের দলের। 
২০২৩ সালের শুরুটা মোটেই ভাল হলোনা  জায়ান্ট লিভারপুলের। ওয়েস্ট লন্ডনে এই পরাজয় মৌসুম শেষে দলের জন্য দূর্ভাগ্য বয়ে আনার শঙ্কা তৈরী করেছে। ইব্রাহিমা কোনাটের প্রথমার্ধের আত্মঘাতি গোলে পিছিয়ে পড়ে সফরকারী লিভারপুল। রক্ষনভাগের এই ভুল শেষ পর্যন্ত আর কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়নি। ইয়োনে উইসা প্রথমার্ধের শেষ মুহূর্তে ব্যবধান দ্বিগুন করেন। এ্যালেক্স ওক্সালেড-চেম্বারলেইন এক গোল পরিশোধ করলেও ব্রায়ান এমবুয়েমোর গোলে ব্রেন্টফোর্ডের ঐতিহাসিক জয় নিশ্চিত হয়। 
আর্জেন্টিনার বিরুদ্ধে কাতার বিশ^কাপের ফাইনালে খেলার পর প্রথম ম্যাচে খেলতে নেমে ফরাসি ডিফেন্ডার কোনাটে লিভারপুলের পরাজয়ের দায়ভার নিজের কাঁধে নিয়ে মাঠ ছেড়েছেন। এই পরাজয়ে লিভারপুল লিগ টেবিলের ষষ্ঠ স্থানেই থাকলো। চতুর্থ স্থানে থাকা ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের থেকে তারা চার পয়েন্ট পিছিয়ে রয়েছে। 
গত পাঁচ ম্যাচে এটি লিভারপুলের প্রথম পরাজয়। রেডস বস ক্লপ স্বীকার করেছেন ব্রেন্টফোর্ডের চতুর সেট-পিস কৌশল সামলাতে ব্যর্থ হয়েছে তার রক্ষনভাগ। ক্লপ বলেন, ‘ব্রেন্টফোর্ড সেট-পিস থেকে দারুন খেলেছে। যা সামলানো কঠিন হয়ে পড়েছিল।’
এ নিয়ে সাত নম্বর স্থানে থাকা ব্রেন্টফোর্ড ছয় ম্যাচ অপরাজিত রয়েছে। এর মধ্যে বিশ^কাপের ঠিক আগে ম্যানচেস্টার সিটির বিরুদ্ধে জয়টি রয়েছে। ক্লপ বলেন, এই ম্যাচের আগেই আমরা জানতাম তারা বেশ আত্মবিশ^াস নিয়েই মাঠে নামবে। দ্বিতীয় গোলেই ম্যাচেই ভাগ্য অনেকটা নির্ধারিত হয়ে গিয়েছিল। তারপরও আমরা প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারিনি। তৃতীয় গোলটি হজম করা মোটেই উচিৎ হয়নি।
বেনফিকা থেকে ৬৭ মিলিয়ন পাউন্ডের বিনিময়ে গত বছর লিভারপুলে আসা ডারউইন নুনেজও দলের ব্যর্থতার জন্য দায়ী।  ২৩ বছর বয়সী এই স্ট্রাইকার আগের দুই লিগ ম্যাচে ১৩টি শট নিয়ে একটি গোলও করতে পারেননি। মোহাম্মদ সালাহ দারুন একটি পাস থেকে নুনেজ কাল শুরুতেই গোলের সুযোগ নষ্ট করেন। গোলরক্ষক ডেভিড রায়াকে পরাস্ত করে শট নিলেও লাইনের উপর থেকে তা ক্লিয়ার করেন ডিফেন্ডার বেন মি। ১৯ মিনিটে কর্ণার থেকে থমাস ফ্রাঙ্কের দল এগিয়ে যায়। মি’র ফ্লিক থেকে কোনাটে শেষ মুহূর্তে বল ধরতে ব্যর্থ হন। তার হাঁটুতে বল লেগে বলের গতি পরিবর্তিত হলে এ্যালিসনের পক্ষে রক্ষা করা সম্ভব হয়নি। পোস্টের খুব কাছে থেকে উইসার নেওয়া  একটি শট কোনমতে রুখে দেন এ্যালিসন। আরো একটি বিপদজনক কর্ণার থেকে মি গোলের সুযোগ পেলেও অফসাইডের কারনে তা সফল হয়নি। লিভারপুল ক্ষনভাগের আগোছালো পারফরমেন্সে ব্রেন্টফোর্ড একের পর এক আক্রনমন চালাতে থাকে। ২৪ মিনিটে স্কোরশিটে নাম লেখান উইসা। মাথিয়াস জেনসেনের ক্রস থেকে উইসার হেড ধরতে পারেননি এ্যালিসন। 
বিরতির পর ম্যাচে ফিরে আসার লক্ষ্যে ক্লপ একে একে মাঠে নামান জোয়েল মাটিপ, এ্যান্ড্রু রবার্টসন ও নেবি কেইটাকে। পায়ের ইনজুরির কারনে মাঠ ছাড়তে বাধ্য হন ভার্জিল ফন ডাইক। এই পরিবর্তনে লিভারপুল জ¦লে ওঠে। ৫০ মিনিটে আলেক্সান্দার আর্নল্ডের নিখুঁত একটি পাসে ওক্সালেড-চেম্বারলেইন এক গোল শোধ করেন। কিন্তু ৮৪ মিনিটে এমবুয়েমোর গোলে ব্রেন্টফোর্ড ৩-১ গোলের লিড নিলে লিভারপুলের কার্যত আর কিছুই করার ছিলনা।