শিরোনাম
মাদ্রিদ, ৯ জানুয়ারি ২০২৩ (বাসস/এএফপি) : ওসমানে ডেম্বেলের একমাত্র গোলে এ্যাথলেটিকো মাদ্রিদকে ১-০ ব্যবধানে পরাজিত করে লা লিগা টেবিলে তিন পয়েন্টের ব্যবধান বাড়িয়েছে তালিকার শীর্ষে থাকা বার্সেলোনা।
এর আগে দিনের অপর ম্যাচগুলোতে ডেভিড সিলভার দারুন পারফরমেন্সে তৃতীয় স্থানে থাকা রিয়াল সোসিয়েদাদ ২-০ গোলে আলমেইরাকে এবং রায়ো ভায়োকানোকে ২-১ গোলে পরাজিত করে চতুর্থ স্থানে উঠে এসেছে রিয়াল বেটিস। ধুকতে থাকা সেভিয়া কোনমতে গেতাফেকে ২-১ গোলে পরাজিত করে গোল ব্যবধানে রেলিগেশন জোন থেকে উপরে উঠেছে।
বর্তমান চ্যাম্পিয়ন রিয়াল মাদ্রিদ আগের দিন ভিয়ারিয়ালের কাছে পরাজিত হওয়ায় বার্সেলোনার সামনে সুযোগ ছিল কাল এগিয়ে যাবার। মেট্রোপলিটানোতে সেই সুযোগ পুরোপুরি কাজে লাগিয়েছে কাতালান জায়ান্টরা। সর্বোচ্চ গোলদাতা রবার্ট লিওয়ানদোস্কি নিষেধাজ্ঞার কারনে খেলতে পারেননি। তার পরিবর্তে আনসু ফাতিকে আক্রমনভাগের দায়িত্ব দেন কোচ জাভি। কিন্তু কাল ম্যাচের পার্থক্য গড়ে দিয়েছেন ডেম্বেলে। ২২ মিনিটে দারুন ফিনিশিংয়ে তিনি বার্সাকে এগিয়ে দেন। এক গোলে পিছিয়ে থেকে এ্যাথলেটিকো চাপ সৃষ্টি করে। দুর্দান্ত ফর্মে থাকা রোনাল্ড আরাউজো ম্যাচের একেবারে শেষ মুহূর্তে আঁতোয়ান গ্রীজম্যানের একটি শট লাইনের উপর থেকে ক্লিয়ার করেন। দিয়েগো সিমিওনের দর শেষ পর্যন্ত আর সমতায় ফিরতে পারেনি।
দুই দলই ১০ জন নিয়ে ম্যাচ শেষ করেছে। ইনজুরি টাইমে ফেরান তোরেস ও স্টিফান সাভিচ একে অপরের সাথে বিতন্ডায় জড়িয়ে লাল কার্ড দেখেন।
ম্যাচ শেষে বার্সা কোচ জাভি বলেছেন, ‘আমরা জয়ী হলেও এখানে শুধুমাত্র তিন পয়েন্ট মূল ব্যপার নয়। এটা আমাদের জন্য আত্মবিশ^াস বাড়ানোর একটি ম্যাচ ছিল। লিগের এই মুহূর্তে এসে এই ধরনের জয় খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এখানে একটি বিষয় স্পষ্ট, লিগ জয়ে আমরা অন্যতম দাবীদার। ’
লা লিগার শেষ ১৬ ম্যাচে বার্সেলোনা মাত্র ৬ গোল হজম করেছে। কাল গ্রীজম্যান দুইবার সমতা ফেরানোর সুযোগ হাতছাড়া করেন। কাতালানরা মাত্র দুটি শট টার্গেটে করতে পেরেছে। এ্যাথলেটিকো গোলরক্ষক ইয়ান ওবলাক বলেন, ‘এটা একটি ভাল ম্যাচ ছিল, শুধুমাত্র প্রথম ২৫ মিনিট ছাড়া। আমরা ভালই চাপ সৃষ্টি করেছিলাম, সুযোগও এসেছিল। কিন্তু গোল করতে না পারাটা আমাদের ব্যর্থতা। আমাদের শুরুটাও ভাল হয়নি। প্রথম ২৫ মিনিট আত্মবিশ^াসের অভাব ছিল। এরপর আমরা জেগে উঠি। কিন্তু ততক্ষনে ১-০ গোলে পিছিয়ে পড়েছি।’
এই পরাজয়ে বার্সেলোনা থেকে ১৪ পয়েন্টের ব্যবধানে পিছিয়ে এ্যাথলেটিকো টেবিলের পঞ্চম স্থানে নেমে গেছে। সিমিওনে বলেছেন, ‘ পরিস্থিতি খুব একটা চিন্ত্যনীয় নয়, কিন্তু এই ধরনের ম্যাচের সাথে আমাদের মানিয়ে নেয়া শিখতে হবে। বাস্তবতা হচ্ছে আমরা হেরে গেছি। এটা সত্যি যে আমাদের দলের ফিরে আসার সক্ষমতা আছে। কিন্তু আজ সেটা হয়নি।’
ম্যাচের শুরুতে ফাতির একটি প্রচেষ্টা দুর্দান্তভাবে রুখে দেন হোসে জিমিনেজ। শুরু থেকে বার্সেলোনারই আধিপত্য ছিল। ২২ মিনিটে মিডফিল্ডার পেড্রি গাভির দিকে বল বাড়িয়ে দেন। বক্সের ভিতর গাভি প্রথম সুযোগেই তা বাড়িয়ে দেন ডেম্বেলের দিকে। সহজ এই পাসে বার্সাকে এগিয়ে দিতে ভুল করেননি ডেম্বেলে।
মার্কোস লোরেন্ডে এ্যাথলেটিকোর প্রথম সুযোগটি হাতছাড়া করেন। ৩০ মিনিটে বার্সার রক্ষনভাগের উপর দিয়ে গ্রীজম্যানের বাড়ানো বলটি কাজে লাগাতে পারেননি। আরাউজোর শট ডিফ্লেকটেড হয়ে বাইরে চলে যায়। স্বাগতিকরা হঠাৎ করেই ম্যাচের নিয়ন্ত্রন নিজেদের করে নেয়। গ্রীজম্যানের একটি শট অসাধারণ মার্ক আন্দ্রে-টার স্টেগান রুখে দেন।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুটাও দারুনভাবে করেছিল এ্যাথলেটিকো। ৫৮ মিনিটে ফ্রেংকি ডি জংয়ের স্থানে জাভি ফ্রাংক কেসিকে মাঠে নামিয়েছিলেন জাভি। শেষ পর্যন্ত দুই খেলোয়াড়কে দুই দল হারিয়ে ম্যাচ শেষ করায় তাতে কার্যত ক্ষতি হয়েছে এ্যাথলেটিকোরই।
এ দিকে ৩৭ বছর বয়সী অভিজ্ঞ প্লেমেকার সিলবা আলমেইরার বক্সে রক্ষনভাগের ভুলে সুযোগে ৪৭ মিনিটে রিয়াল সোসিয়েদাদকে এগিয়ে দেন। পাঁচ মিনিট পর সোসিয়েদাদের ব্যবধান দ্বিগুন করেন আলেক্সান্দার সোরলোথ। লিগে এটি তার ষষ্ঠ গোল। নিষেধাজ্ঞায় থাকা ব্রেইস মেনডেজ ও ইমানোল আলগুয়াসিলের অনুপস্থিতিতে সোসিয়েদাদ তাদের সেরাটা দিতে পারেনি। সেপ্টেম্বরের পর এটাই আলমেইরার প্রথম পরাজয়। এই পরাজয়ে আলমেইরা টেবিলের ১৪তম স্থানে নেমে গেছে।