শিরোনাম
লন্ডন, ১৫ জানুয়ারি ২০২৩ (বাসস/এএফপি) : পিছিয়ে পড়েও নাটকীয় ম্যাচে কাল প্রিমিয়ার লিগে ম্যানচেস্টার ডার্বিতে সিটিকে ২-১ গোলে পরাজিত করেছে ইউনাইটেড। যদিও ব্রুনো ফার্নান্দেসের সমতাসূচক গোলটি নিয়ে ভিএআর প্রযুক্তির বিতর্কিত সিদ্ধান্তে শেষ পর্যন্ত ইউনাইটেডের জয় নিয়ে প্রশ্ন থেকেই গেছে। দিনের আরেক ম্যাচে ব্রাইটনের কাছে ৩-০ গোলে বিধ্বস্ত হয়েছে লিভারপুল।
কাল প্রিমিয়ার লিগের পুরোটা দিনই ছিল নাটকীয়তায় ভরা। এভারটন বস ফ্রাংক ল্যাম্পার্ড আরো একবার চাকরি হারানোর শঙ্কায় পড়েছেন। তার দল রেলিগেশন প্রতিদ্বন্দ্বি সাউদাম্পটনের কাছে ২-১ গোলে পরাজয় বরণ করতে বাধ্য হয়েছে।
ওল্ড ট্রাফোর্ডে মৌসুমের দ্বিতীয় ম্যানচেস্টার ডার্বিতে ১২ মিনিট বাকি থাকতে ইউনাইটেডে জ্যাক গ্রিলিশের ৬০ মিনিটের হেডের গোলে পিছিয়ে ছিল। কিন্তু পর্তুগীজ মিডফিল্ডার ফার্নান্দেসের সমতাসূচক গোলের পর মার্কো রাশফোর্ডের ৮২ মিনিটের গোলে শেষ পর্যন্ত ইউনাইটেডের জয় নিশ্চিত হয়। ফার্নান্দেসের গোলটি ছিল ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট। কাসেমিরোর পাস থেকে ফার্নান্দেসের কাছে বল যাবার আগে রাশফোর্ড নিশ্চিত অফসাইড পজিশনে ছিলেন। সিটেজনরা সহকারী রেফারির পতাকা উঠানো দেখে গোল থামানোর কোন চেষ্টাই করেনি। রাশফোর্ড বলটি স্পর্শ করেননি এবং ভিএআর জানিয়েছে তার জন্য ম্যাচে কোন প্রভাব পড়েনি। কিন্তু সিটি জোড়ালো দাবী জানিয়েছে রাশফোর্ডের কারনে গোলরক্ষক এডারসনসহ ডিফেন্ডাররা বাঁধাগ্রস্থ হয়েছে।
সিটি ডিফেন্ডার ম্যানুয়েল আকাঞ্জি বিবিসি স্পোর্টকে বলেছেন, ‘প্রথম গোলটি সম্পূর্ণ হাস্যকর ছিল, কেন যে এটাকে বাতিল করা হলো না তা কারোরই বোধগম্য নয়। রাশফোর্ড অফসাইড পজিশনে ছিল। সে বল স্পর্শ করেনি ঠিকই কিন্তু তার কারনে আমরা বাঁধাগ্রস্থ হয়েছি।’
সিটি বস পেপ গার্দিওলা বলেছেন রাশফোর্ডের অফসাইড নিয়ে কোন সন্তেহ নেই। এ সম্পর্কে তিনি বলেন, সিদ্ধান্ত রেফারির ও ভিএআর’র। কিন্তু আমার ডিফেন্ডাররা রাশফোর্ডের জন্য লাইন তৈরী করেছিল। তারা যদি জানতো এখানে ফার্নান্দেস আছে তাহলে ঐ লাইন তৈরী করতো না। আমরা যথাযথভাবেই অফসাইডের লাইন তৈরী করেছিলাম।’
তৃতীয় স্থানের দল ইউনাইটেড এই জয়ে দ্বিতীয় স্থানে থাকা সিটির তুলনায় মাত্র এক পয়েন্ট পিছিয়ে রয়েছে। সব ধরনের প্রতিযোগিতা মিলিয়ে এটা ইউনাইটেডের টানা নবম জয়। ইউনাইটেড বস এরিক টেন হাগ বলেছেন, ‘সমর্থকরা হয়তোবা শিরোপার স্বপ্ন দেখছে। কিন্তু আমরা না। আমরা উন্নতি করছি এটা নিশ্চিত। কিন্তু এখনো অনেকটা পথ বাকি।’
এবারের মৌসুমের শুরুটা মোটেই ভাল হয়নি লিভারপুলের, যার ধারাবাহিকতা এখনো বজায় রয়েছে। বিশেষ করে শীর্ষ চারে থেকে মৌসুম শেষ করাই এখন রেডদের সামনে কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রথমার্ধে আধিপত্য দেখানো ব্রাইটন যোগ্য দল হিসেবেই ৪৭ মিনিটে এগিয়ে যায়। কাওরু মিটোমার নিখুঁত ক্রস থেকে ফাকায় দাঁড়ানো সোলি মার্চ ব্রাইটনকে এগিয়ে দেয়। ৬ মিনিট পরে দারুন এক ফিনিশিংয়ে মার্চ আবারো গোল করে ব্যবধান দ্বিগুন করেন। ৮১ মিনিটে বদলী খেলোয়াড় ড্যানি ওয়েলবেক মার্চের পাস থেকে দুর্দান্ত ভলিতে ব্যবধান বাড়ান। লিগের আগের ম্যাচে ব্রেন্টফোর্ডের মাঠেও পরাজিত হয়েছিল লিভারপুল। এই মুহূর্তে শীর্ষ চারের থেকে সাত পয়েন্ট পিছিয়ে নবম স্থানে রয়েছে অল রেডরা। ম্যাচ শেষে লিভারপুল বস জার্গেন ক্লপ বলেন, ‘সত্যিই দু:খজনক। এই ধরনের বাজে ম্যাচ আমরা কখনো খেলেছি কিনা আমি মনে করতে পারছিনা। একটি আগাছালো দলের বিরুদ্ধে আজ এটি গোছালো দল খেলতে নেমেছিল।’
লিভারপুলের মার্সিসাইড প্রতিদ্বন্দ্বী এভাটরন গুডিসন পার্কে সাউদাম্পটনের কাছে ২-১ গোলে পরাজয় বরণ করেছে। নিরাপত্তা ঝুঁকিতে এভারটনের বোর্ড পরিচালকরা এই ম্যাচ দেখতে স্টেডিয়ামে উপস্থিত হতে পারেননি। সব ধরনের প্রতিযোগিতায় শেষ ১৩টি ম্যাচে এভারটন মাত্র একটি ম্যাচে জয়ী হয়েছে। আমাডু ওনানার গোলে ল্যাম্পার্ডের দল ৩৯ মিনিটে এগিয়ে যায়। কিন্তু জেমস ওয়ার্ড-প্রাউস দ্বিতীয়ার্ধে পরপর দুই গোল করে সাউদাম্পটনের জয় নিশ্চিত করেন। ম্যাচের শেষ বাঁশি বাজার সাথে সাথে এভারটনের হাজারো ক্ষুব্ধ সমর্থক ক্লাবের ধারাবাহিক ব্যর্থতায় প্রতিবাদে মুখর হয়ে ওঠে। জয় সত্বেও সাউদাম্পটন টেবিলের তলানিতেই রয়েছে। কিন্তু তারা বর্তমানে তলানির দ্বিতীয় দল এভাটরনের সাথে সমান পয়েন্ট নিয়ে শুধুমাত্র গোল ব্যবধানে পিছিয়ে রয়েছে।
উল্ফসের কাছে ১-০ গোলে পরাজিত হয়ে তলানির তৃতীয় স্থানটি পূরণ করেছে ওয়েস্ট হ্যাম। দিনের অপর ম্যাচগুলোতে নটিংহ্যাম ফরেস্ট ২-০ গোলে লিস্টার সিটিকে এবং ব্রেন্টফোর্ড একই ব্যবধানে বোর্নমাউথকে পরাজিত করেছে।