শিরোনাম
সিলেট, ২৭ জানুয়ারি, ২০২৩ (বাসস) : ব্যাটারদের ব্যর্থতায় বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের নবম আসরে ঘরের মাঠে নিজেদের প্রথম ম্যাচে হেরে গেল মাশরাফি বিন মর্তুজার সিলেট স্ট্রাইকার্স।
আজ সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বিপিএলে সিলেট পর্বের প্রথম ম্যাচে রংপুর রাইডার্সের কাছে ৬ উইকেটের ব্যবধানে হেরেছে সিলেট। তারপরও ৮ ম্যাচে ৬ জয় ও ২ হারে ১২ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে সিলেট। ৭ ম্যাচে ৪ জয় ও ৩ হারে ৮ পয়েন্ট নিয়ে চতুর্থস্থানে থাকলো রংপুর।
টুর্নামেন্টের ২৫তম ম্যাচে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করে ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ৯২ রান করে সিলেট। জবাবে ২৬ বল বাকী রেখে জয় পায় রংপুর।
এ ম্যাচে টস জিতে প্রথমে বোলিংয়ের সিদ্বান্ত নেন রংপুরের অধিনায়ক নুরুল হাসান। ব্যাট হাতে নেমে রংপুর বোলারদের তোপের মুখে পড়ে খেই হারিয়ে ফেলে সিলেটের ব্যাটাররা। নবম ওভারের মধ্যে ১৮ রানে সপ্তম উইকেট হারায় সিলেট।
ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে ইংল্যান্ডের টম মুরসকে ২ রানে ফেরান রংপুরের আফগানিস্তানের পেসার আজমতুল্লাহ ওমরজাই। পরের ওভারের চতুর্থ বলে স্পিনার মাহেদি হাসানকে ছক্কা মারেন ইনফর্ম ওপেনার নাজমুল হোসেন শান্ত। কিন্তু পঞ্চম বলেই ফিরে যান ৯ রান করা শান্ত।
চতুর্থ ওভারে সিলেটের মিডল-অর্ডারে জোড়া আঘাত হানেন ওমরজাই। তৌহিদ হৃদয় ও মুশফিকুর রহিম রানের খাতা খোলার আগেই শিকার হন ওমরজাইয়ের।
পরের ওভারে সিলেটের আরেক মিডল-অর্ডার ব্যাটার জাকির হাসানকে খালি হাতে প্যাভিলিয়নে ফেরত পাঠান মাহেদি। এতে ১২ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে মহাবিপদে পড়ে সিলেট।
এরপর লোয়ার-অর্ডারে সিলেটের দুই বিদেশী খেলোয়াড় শ্রীলংকার থিসারা পেরেরা ও পাকিস্তানের ইমাদ ওয়াসিমের বিদায়ে খাদের কিনারায় চলে যায় সিলেট। পেরেরাকে ব্যক্তিগত ৩ রানে পাকিস্তানের পেসার হারিস রউফ ও ওয়াসিমকে ১ রানে থামান হাসান।
১৮ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে বিপিএলের ইতিহাসে সর্বনি¤œ রানে গুটিয়ে যাবার শংকায় পড়ে সিলেট। কিন্তু অষ্টম উইকেটে দারুন এক জুটি গড়ে সিলেটকে লজ্জার হাত থেকে রক্ষা করেন সাকিব ও অধিনায়ক মাশরাফি।
মারমুখী ছিলেন সাকিব। ১৪তম ওভার পর্যন্ত মাশরাফি কোন চার-ছয় মারতে না পারলেও সাকিবের ব্যাট থেকে ৩টি চার ও ১টি ছয় আসে। পাকিস্তানের স্পিনার মোহাম্মদ নাওয়াজের করা ১৫তম ওভারে দু’টি ছক্কা মারেন মাশরাফি।
১৬তম ওভারে দলীয় ৬৬ রানে সাকিব-মাশরাফির জুটি ভাঙ্গেন হাসান। ২১ বলে ২১ রান করা মাশরাফি শিকার হন হাসানের। তবে তার আগে সাকিবকে নিয়ে অস্টম উইকেট জুটিতে ৪২ বলে ৪৮ রার করেন মাশরাফি।
অধিনায়ক ফেরার পর আরও ২টি চার ও ১টি ছক্কা মারেন সাকিব। ১৯তম ওভারে হাসানের তৃতীয় শিকার হওয়ার আগে ৩৬ বলে ৫টি চার ও ২টি ছক্কায় চাপের মুখে ৪১ রানের দারুন এক ইনিংস খেলেন আট নম্বরে নামা সাকিব।
দলীয় ৮৫ রানে সাকিব ফেরার পর সিলেটের দলীয় রান ১শ হবার আশা শেষ হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ৯২ রান করে সিলেট। রংপুরের হাসান ১২ ও ওমরজাই ১৭ রানে ৩টি করে উইকেট নেন। মাহেদি ২টি ও রউফ ১টি উইকেট শিকার করেন।
৯৩ রানের সহজ লক্ষ্যে শুরুটা ভালোই করেন রংপুরের দুই ওপেনার মোহাম্মদ নাইম ও রনি তালুকদার। ৩৩ বলে ২৭ রান যোগ করেন তারা। নাইমকে ১৮ রানে ফিরিয়ে সিলেটকে প্রথম সাফল্য এনে দেন পেসার রাজা।
দ্বিতীয় উইকেটে রানের চাকা সচল রাখেন রনি ও মাহেদি। তবে নবম ওভারে রংপুরের ব্যাটিং লাইন-আপে জোড়া আঘাত হানেন মাশরাফি। মাহেদি ৮ ও পাকিস্তানের শোয়েব মালিক শূন্য রানে মাশরাফির শিকার হলে ৪৪ রানে ৩ উইকেট হারায় রংপুর। এরপর ৪ রান করা ওমারজাই আমিরের শিকার হলে দলীয় ৬৬ রানে চতুর্থ উইকেট হারায় রংপুর।
তবে পঞ্চম উইকেটে নাওয়াজকে নিয়ে ১৯ বলে অবিচ্ছিন্ন ২৭ রান যোগ করে রংপুরের জয় নিশ্চিত করেন রনি। ২টি করে চার-ছক্কায় ৩৮ বলে অপরাজিত ৪১ রান করেন রনি। ১৩ বলে ১৮ রান তুলে অপরাজিত থাকেন নাওয়াজ। তার ইনিংসে ১টি চার ও ২টি ছয় ছিলো। সিলেটের মাশরাফি ১৮ রানে ২ উইকেট নেন।