শিরোনাম
সিলেট, ২৮ জানুয়ারি ২০২৩ (বাসস) : এক ম্যাচ পরই বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ(বিপিএল) টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট টুর্নামেন্টে জয়ের ধারায় ফিরলো মাশরাফি বিন মর্তুজার সিলেট স্ট্রাইকার্স। নাজমুল হোসেন শান্তর হাফ-সেঞ্চুরির পর মুশফিকুর রহিম-জিম্বাবুয়ের রায়ান বার্লের ঝড়ো ইনিংসের সুবাদে টুর্নামেন্টে সপ্তম জয় পেয়ে আবারও টেবিলের শীর্ষে উঠলো মাশরাফির সিলেট স্ট্রাইকার্স।
আজ টুর্নামেন্টের ২৮তম ম্যাচে সিলেট ৭ উইকেটে হারিয়েছে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকে। শান্ত ৪৪ বলে ৬০, মুশফিকুর রহিম ২৬ বলে অপরাজিত ৪১ ও বার্ল ১৬ বলে ৪১ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলেন। দলের জয়ের রঙিন হলো বিপিএলে মাশরাফি বিন মর্তুজার শততম ম্যাচ।
এই জয়ে ৯ ম্যাচে ৭ জয় ও ২ হারে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে উঠলো সিলেট। এতে প্লে-অফের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে সিলেট। অন্য দিকে ৯ ম্যাচে ২ জয় ও ৭ হারে ৪ পয়েন্ট নিয়ে ষষ্ঠ স্থানে চট্টগ্রাম।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ের সিদ্বান্ত নেন চট্টগ্রামের অধিনায়ক শুভাগত হোম।
বল হাতে ম্যাচের প্রথম ডেলিভারিতেই উইকেট সাফল্য পান সিলেটের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। চট্টগ্রামের পাকিস্তানী ওপেনার উসমান খানকে খালি হাতে বিদায় করেন শততম ম্যাচ খেলতে নামা মাশরাফি।
শুরুতেই ধাক্কা খেলেও চট্টগ্রামকে হতাশ করেননি আরেক ওপেনার মেহেদি মারুফ ও তিন নম্বরে নামা আফিফ হোসেন। তাদের মারমুখী ব্যাটিংয়ে পাওয়ার প্লেতে ৪৩ ও ১০ ওভারে ৮৫ রান পায় চট্টগ্রাম।
১১তম ওভারের দ্বিতীয় বলে এবারের বিপিএলে নিজের প্রথম হাফ-সেঞ্চুরির দেখা পান মারুফ। এজন্য ৩৬ বল খেলেন তিনি। একই ওভারে ৩৪ রান করা থামিয়ে দেন পাকিস্তানের পেসার মোহাম্মদ আমির। ২৭ বল খেলে ৫টি চার মারেন আফিফ। দ্বিতীয় উইকেটে মারুফ-আিফফ ৬৫ বলে ৮৮ রান যোগ করেন।
দলীয় ৮৮ রানে আফিফের বিদায়ের পর চট্টগ্রামের ইনিংসে মিনি ধস নামে। ৯৭ রানে পৌঁছাতেই পঞ্চম উইকেট হারায় তারা। মারুফকে ৫২ ও নেদারল্যান্ডসের ম্যাক্স ও’দাউদকে ১ রানে শিকার করেন সিলেটের পাকিস্তানী স্পিনার ইমাদ ওয়াসিম। ৪০ বল খেলে ৭টি চার ও ২টি ছয় মারেন মারুফ। ৪ রান করে রান আউট হন আগের দিন ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে ব্যাট হাতে ঝড় তোলার আয়ারল্যান্ডের কার্টিস ক্যাম্পার।
মিডল-অর্ডারে ঝড়ো ব্যাটিংয়ে চট্টগ্রামকে বড় সংগ্রহ এনে দেন অধিনায়ক শুভাগত হোম। শ্রীলংকার থিসারা পেরেরার করা ১৪তম ওভারে ২টি ছক্কা ও ১টি চারে ১৮ রান নেন শুভাগত। ১৮তম ওভারে মাশরাফিকে ৩টি চার মারেন তিনি।
শেষ ওভারের তৃতীয় বলে ছক্কা মেরে ২৬ বলে এবারের আসরে দ্বিতীয় হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন শুভাগত। তার ২৯ বলে অপরাজিত ৫৪ রানের সুবাদে ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৭৪ রানের পুঁিজ পায় চট্টগ্রাম। ৩টি করে চার-ছয় মারেন শুভাগত। এছাড়া ১২ বলে অপরাজিত ১৫ রান করেন মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরি। সিলেটের ওয়াসিম ২৩ রানে ২ উইকেট নেন। মাশরাফি-আমির ১টি করে শিকার করেন।
১৭৫ রানের টার্গেটে ওপেনার নাজমুল হোসেন শান্তর ঝড়ো ব্যাটিংয়ে পাওয়ার-প্লেতে ৫৫ রান পায় সিলেট। এ সময় ২৫ বলে ৪৩ রান করেন শান্ত। অন্যপ্রান্তে ওপেনার হিসেবে নামা তৌহিদ হৃদয় ১১ বলে ১১ রান তুলতে পারেন।
নবম ওভারে ব্যক্তিগত ১৫ রানে তৌহিদ হৃদয় শ্রীলংকান বিজয়কান্ত বিয়াস্কান্তর আউট হলে দলীয় ৬৩ রানে প্রথম উইকেট হারায় সিলেট।
তবে তিন নম্বরে নামা মুশফিকুর রহিমকে নিয়েও রানের চাকা সচল রাখেন শান্ত। ১১তম ওভারে ৩৬ বল মোকাবেলায় এবারের আসরে তৃতীয় হাফ-সেঞ্চুরি তুলে নেন তিনি।
শান্তর সাথে তাল মিলিয়ে দ্রুত রান তুলেছেন মুশফিকও। এতে ১৩তম ওভারেই শতরানে পৌছায় সিলেটের রান। তবে একই ওভারে স্পিনার নিহাদুজ্জামানের বলে স্টাম্প আউট হন ৪৪ বল খেলে ৬টি চার ও ২টি ছক্কায় ৬০ রান করা শান্ত। এই ইনিংস খেলার পথে ফরচুন বরিশালের অধিনায়ক সাকিব আল হাসানকে টপকে চলতি আসরে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হন শান্ত। আজ পর্যন্ত শান্তর রান এখন ৩৫০,সাকিবের ৩০৬।
শান্ত যখন ফিরেন তখন সিলেটের প্রয়োজন ছিলো ৪৩ বলে ৬৫ রান। এ অবস্থায় ক্রিজে মুশফিকের সঙ্গী হন জিম্বাবুয়ের রায়ান বার্ল। নিহাদুজ্জামানের করা ১৫তম ওভারে ৩টি ছয় ও ২টি চার মারেন বার্ল। ওভারে ২৯ রান পায় সিলেট।
১৭তম ওভারের দ্বিতীয় বলে বিজয়কান্তর দ্বিতীয় শিকার হন বার্ল। তবে আউট হওয়ার আগে ১৬ বল খেলে ৪১ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলেন বার্ল। ৪টি চার ও ৩টি ছয় মারেন তিনি।
বার্ল ফেরার পর সিলেটের প্রয়োজন ১৭ রান তুলে জয় নিশ্চিত করেন মুশফিক ও জাকির হাসান। ৫টি চার ও ১টি ছয়ে ২৬ বলে অপরাজিত ৪১ রান করেন মুশফিক। ৫ বলে ১টি করে চার-ছয়ে অপরাজিত ১২ রান করেন জাকির। চট্টগ্রামের বিজয়কান্ত ২৭ রানে ২ উইকেট নেন।