শিরোনাম
ঢাকা, ৩ মার্চ, ২০২৩ (বাসস): ‘বুকে হাত রেখে, বিজয়ের বেশে, ছুঁয়ে দেব আসমান’ স্লোগান নিয়ে বাংলাদেশ অলিম্পিক এসোসিয়েশনের (বিওএ) আয়োজনে ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সার্বিক সহযোগিতায় দেশব্যাপী ‘শেখ কামাল ২য় বাংলাদেশ যুব গেমস ২০২৩’র চূড়ান্ত পর্বের পর্দা নামবে আগামীকাল (শনিবার, ৪ মার্চ)। বিকাল ৪টায় বাংলাদেশ আর্মি স্টেডিয়ামে সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিওএ সভাপতি ও সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ, এসবিপি (বার),ওএসপি, এনডিইউ, পিএসসি, পিএইচডি।
আন্ত:উপজেলা ও আন্ত:জেলা পর্ব পেরিয়ে ঢাকায় চূড়ান্ত পর্বে ২৪টি ডিসিপ্লিনের ১৯৩ টি ইভেন্টে ১৯৩টি স্বর্ণ, ১৯৩টি রৌপ্য ও ২৮৭টি তাম্র পদকের জন্য প্রায় চার হাজার ক্রীড়াবিদ অংশগ্রহণ করেন।
গত ২৬ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ আর্মি স্টেডিয়ামে গেমসের চূড়ান্ত পর্বের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সপ্তাহব্যপী চুড়ান্ত পর্বে উদীয়মান খেলোয়াড়দের পদচারণায় মুখরিত ছিল রাজধানী ঢাকার ক্রীড়াঙ্গন। বেশীর ভাগ ইভেন্ট শেষ হওয়ায় ইতোমধ্যে খেলোয়াড়রা ফিরেছেন ঘরে। শেষ দিনে বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে থাকছে এ্যাথলেটিকসের ১০০ মিটার স্প্রিন্ট। যেখানে নির্ধারিত হবে দ্রুততম তরুণ ও তরুণী। সমাপনী দিনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের শুরুতে আয়োজিত হবে এ ইভেন্ট।
করোনা পরবর্তী সময়ে বিশ্ব জুড়ে চলছে অর্থনৈতিক মন্দা। বাংলাদেশের অবস্থা তুলনামূলক ভালো থাকলেও পরিস্থিতি বিবেচনায় গেমস আয়োজনে সবকিছুতেই কৃচ্ছতা সাধনে মনযোগী বিওএ। যে কারণে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের ন্যায় সমাপনী অনুষ্ঠানও সীমিত পরিসরে আয়োজন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বিকেল ৫টা ৩০ মিনিটে প্রধান অতিথি বিওএ সভাপতি ও সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ অনুষ্ঠান স্থলে আসবেন। এর ১৫ মিনিট আগেই দর্শকদের জন্য গেট বন্ধ করা হবে। এ্যাথলেটিকসের তরুণ ও তরুণী বিভাগের ১০০ মিটার স্প্রিন্ট ইভেন্টের পর মাগরিবের নামাজের জন্য বিরতি। গেমসের এবারের আসরের চুড়ান্ত পর্বের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে থাকছে ৩০ মিনিটের অডিও ভিজ্যুয়াল প্রদর্শনী। গেমস আয়োজনে যেসব প্রতিষ্ঠান সহায়তা করেছে তাদের ক্রেস্ট প্রদান করা হবে। প্রধান অতিথির বক্তব্যের পরই গেমসের আনুষ্ঠানিক সমাপণী ঘোষণা। এরপর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শেষে গেমসের পর্দা নামবে।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জেষ্ঠ্য পুত্র শেখ কামালের নামে যুব গেমসের দ্বিতীয় আসরের নামকরণ করা হয়েছে ‘শেখ কামাল ২য় বাংলাদেশযুব গেমস ২০২৩’।
এবারের গেমসও আন্ত:উপজেলা, জেলা ও বিভাগ বা জাতীয়-তিনস্তরে আয়োজন করা হয়েছে। প্রথম স্তরে ৬৪টি জেলার সকল উপজেলা থেকে অনুর্ধ্ব ১৭ বয়সী ক্রীড়াবিদরা অংশ নেয়। গত ২-১০ জানুয়ারি প্রথমপর্বে আন্ত:উপজেলা অনুষ্ঠিত হয়। ১৬-২২ জানুয়ারি দ্বিতীয়পর্বে আন্ত:জেলা প্রতিযোগিতায় জেলার ক্রীড়াবিদরা অংশ নেয়। এরপর চূড়ান্তপর্বে আটটি বিভাগীয় দল ঢাকায় জাতীয় পর্যায়ে অংশ নেয়।
শেখ কামাল ২য় বাংলাদেশ যুব গেমস সুষ্ঠ ও সফলভাবে আয়োজনের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রধান পৃষ্ঠপোষক করে একটি শক্তিশালী সাংগঠনিক কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির চেয়ারম্যান অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, এফসিএ। কো-চেয়ারম্যান হিসেবে আছেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল,এমপি এবং বিওএ সভাপতি ও সেনাবাহনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ, এসবিপি (বার),ওএসপি, এনডিইউ, পিএসসি, পিএইচডি। এছাড়াও গেমস আয়োজনে রয়েছে স্টিয়ারিং কমিটি এবং ১৩টি উপ-কমিটি। গেমস উপলক্ষ্যে একটি বর্ণাঢ্য মশাল র্যালি গত ২৩ ফেব্রুয়ারি গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলা মাঠ থেকে শুরু হয়। মশাল প্রজ্জলন করেন বিওএ সভাপতি ও সেনাবাহনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ। টুঙ্গিপাড়া থেকে বিভিন্ন জেলা প্রদক্ষিণ করে মশাল বিওএ ভবনে আসে। বিওএ ভবনে আনুষ্ঠানিকভাবে মশাল গ্রহন করেন মহাসচিব সৈয়দ শাহেদ রেজা। এরপর মশালটি ঢাকা আবাহনী লিমিটেড ক্লাব প্রাঙ্গনে নেয়া হয়। এরপর মশালটি সেনাবাহিনীর স্টোর রুমে রাখা হয়। সেখান থেকে মশলটি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানস্থল আর্মি স্টেডিয়মে নেয়া হয়। ২৬ ফেব্রুয়ারি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মশাল প্রজ্জ্বলন করেন এশিয়ান ইনডোর এ্যাথলেটিকস চ্যাম্পিয়নশিপে সোনা জয়ী স্প্রিন্টার ইমরানুর রহমান ও গত এসএ গেমসের সোনা জয়ী কারাতেকা মারজান আক্তার প্রিয়া। আগামীকাল অনুষ্ঠানে গেমসের সমাপনী ঘোষণার মধ্যে দিয়ে মশাল নেভানো হবে।
বাংলাদেশ অলিম্পিক এসোসিয়েশনের ব্যবস্থাপনায় ২০১৮ সালে প্রথমবারের মত যুব গেমসের আয়োজন করা হয়েছিল। বিভিন্ন ডিসিপ্লিনে জাতীয় দলের জন্য ভবিষ্যত খেলোয়াড় বাছাই এবং তরুণ ক্রীড়াবিদদের প্রতিভা বিকাশের সুযোগ করে দেয়াই ছিল গেমসের মূল লক্ষ্য। একই সঙ্গে তরুণ ক্রীড়াবিদদের দেশের ক্রীড়াঙ্গনে নিয়মিত উপস্থিতি নিশ্চিত করতেই বিওএ এ উদ্যোগ নেয়। প্রতি চার বছরে একটি বাংলাদেশ গেমস ও একটি যুব গেমস ২০১৮ সাল থেকে নিয়মিত আয়োজিত হয়ে আসছে। প্রথম আসরে ২১ টি ডিসিপ্লিনে ৫০ হাজার ক্রীড়াবিদ, কোচ, টেকনিক্যাল অফিসিয়াল ও ক্রীড়া সংগঠক অংশ নিয়েছিল। এবার ২য় আসরে একক ও দলীয়সহ ডিসিপ্লিনের সংখ্যা তিনটি বাড়িয়ে ২৪টি করা হয়। যেখানে প্রায় ৬০ হাজার ক্রীড়াবিদ, কোচ, টেকনিক্যাল অফিসিয়াল ও ক্রীড়া সংগঠক অংশ নিয়েছেন।